الحمد لله نحمده ونستعينه ونستغفره ونؤمن به ونتوكل عليه ونعوذ بالله من شرور أنفسنا ومن سيئات أعمالنا من يهد الله فلا مضل له ومن يضلل فلا هادي له وأشهد أن لا اله الا الله وأشهد أن محمدا عبده ورسوله صلى الله تعالى عليه وعلى اله واصحابه و بارك وسلم تسليما كثيرا كثيرا أما بعد
فاعوذ بالله من الشيطان الرجیم بسم الله الرحمن الرحيم – قل ان کنتم تحبون الله فاتبعوني يحببكم الله ويغفر لكم ذنوبكم والله غفور الرحيم – وقال رسول الله صلى الله عليه وسلم من احب سنتی فقد احبني ومن احبني كان معي في الجنة او كما قال النبي صلى الله عليه وسلم.
আযীয তােলাবা! বারী তাআলা বলেন, `হে নবী, আপনি বিশ্ববাসীকে বলে দিন, যদি তােমরা আল্লাহকে ভালবাসো তাহলে আমার অনুসরণ কর। তাহলে বারী তাআলাও তােমাদেরকে ভালবাসবেন। তােমাদের পাপসমূহ মার্জনা করে দিবেন। আর আল্লাহ তাআলা ক্ষমাকারী দয়ালু। (সূরা আলেইমরান, আয়াত নং ৩১)
রসূলে পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, `যে ব্যক্তি আমার সুন্নাতকে মুহাব্বত করল সে আমাকে মুহাব্বত করল। আর যে ব্যক্তি আমাকে মুহাব্বত করল সে জান্নাতে আমার সঙ্গী হবে।’
মুহাব্বত কী জিনিস!
মুহাব্বত এমন একটি জিনিস যা প্রতিটি কাজের মাঝে বিদ্যমান, সকল কাজ মুহাব্বতের মাধ্যমেই অর্জিত হয়ে যায়। হযরত থানভী রহ. বলতেন মুহাব্বত হচ্ছে প্রতিটি কাজের ইঞ্জিন। ইঞ্জিন যেমন বাহনকে টেনে নিয়ে যায়, তেমনিভাবে মুহাব্বতও মানুষকে তার কাজের দিকে টেনে নিয়ে যায়। এই মুহাব্বত তােমাকে উদ্বুদ্ধ করবে ঐ কাজ করার জন্য যাকে তুমি মুহাব্বত করো । যেমন মাদ্রাসার কাজ করা। ইলমের মুহাব্বতে কিতাব অধ্যায়ন করার আগ্রহ সৃষ্টি হওয়া। সময়ে অসময়ে ব্যাকুল হয়ে কিতাব অধ্যায়ন করা । সব সময় কিতাব নিয়েই তার সময় অতিবাহিত হবে।
উস্তাদের মুহাব্বত থাকলে উস্তাদের খেদমত করার আগ্রহ জন্মাবে, মুহাব্বত থাকলেই উস্তাদের সাথে মুনাসাবাত, সম্পর্ক সৃষ্টি হয়। আর উস্তাদের সাথে সম্পর্ক ছাড়া ইলম অর্জিত হয় না। উস্তাদের সাথে মুহাব্বত থাকলে দরসে অনুপস্থিত থাকতে মন চায় না।
নিয়মিত দরসে হাজির থাকার অনেক ফযীলত আছে। উস্তাদের মন খুশি হয়। উস্তাদের সাথে মুহাব্বত গভীর হয়। উস্তাদের নেক নজর নিপতিত হয়, আর উস্তাদের নেক নজরের মাধ্যমেই ইলম অর্জিত হয়। টাকা, পয়সা, কিতাব অধ্যায়ন এবং ওয়াজ নসিহত শােনা বা শ্রবণ করার মাধ্যমে ইলম অর্জিত হয় না। ইলম তাে অর্জিত হয় আল্লাহওয়ালাদের নেক নজরের বরকতে। আর নিয়মিত দরসে উপস্থিত থাকার দ্বারাও উস্তাদের নেক নজর পড়ে। সুতরাং নিয়মিত দরসে হাজির থাকা আবশ্যক। সবকে অনুপস্থিত থাকার অর্থ।
ছুটিবিহীন সবকে হাজীর না থাকলে উস্তাদের মনে আঘাত লাগে। উস্তাদ মনে অনেক কষ্ট অনুভব করেন। কারণ উস্তাদ ভাবেন ছেলেপেলেরা আমার পড়ানাে হয়ত বুঝে না। বা আমার পড়ানাে তাদের কাছে পছন্দ হয় না। আর দরসে হাজীর না থাকা এবং দরসে বসে অমনােযােগী হওয়া অথবা এদিক সেদিক দেখা, অন্য কাজে ব্যস্ত থাকার অর্থ হচ্ছে আমি আপনার থেকে বেশি বুঝি। আপনার পড়ানাে আমার কাছে ভাল লাগে না। এইসব তাকরীর/ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ আমি পারি, তাই আমি উপস্থিত থাকি না। মনােযােগ দিয়ে শ্রবণ করি না। তাহলে এই ছেলেটা কিভাবে ইলম অর্জন করবে?
লায়লী মজনুর মুহাব্বত
মুহবত এমন এক জিনিস যা মানুষকে ব্যকুল করে তােলে। মুহাব্বত ছাড়া কোন কাজই সুন্দর এবং পূর্ণাঙ্গ হয় না। লায়লী মজনুকে অনেক মুহাব্বত করত। একদিন মজনু লায়লীর মুহাব্বতে পাগলপারা হয়ে কোন এক জঙ্গলে দিশেহারা হয়ে ঘুরছে। হঠাৎ মজনু একজন নামাজী ব্যক্তির সামনে দিয়ে অতিবাহিত হলাে। নামাজী তাকে বলল, হে বেটা, তুমি আমার নামাযের সামনে দিয়ে গমন করলে কেন ? মজনু বলে, তুমি কী নামাজ পড়লে। তােমার সামনে দিয়ে আমি গমন করলাম, সেটা কিভাবে বুঝলে, অথচ আমি অনুধাবন করতে পারলাম না। আর তুমি অনুধাবন করলে। আসলে আল্লাহর সাথে তােমার মুহাব্বত নেই। দেখ আমি লাইলাকে মুহাব্বত করি। তাই লাইলাকে ছাড়া আর কিছু দেখি না। তুমি আল্লাহর নামাজের মাঝে আমাকে কিভাবে দেখলা? বুঝা গেল তুমি আল্লাহকে মুহাব্বত করে আল্লাহর নামাজ আদায় করছে না।
মজনু পিতার একমাত্র সন্তান, তার পিতার ধন সম্পদের কোন অভাব ছিল না। কিন্তু ছেলেটা যে লায়লীর মুহাব্বতে পাগল হয়ে গেল, এইজন্য মজনুর পিতার অনেক চিন্তা। তাই তিনি তার ছেলেকে হজে নিয়ে যান, তারপর তাকে বলল, তুমি কাবা শরীফের গিলাফ ধরে দুআ করাে, হে আল্লাহ আমার অন্তর থেকে লায়লার মুহাব্বত দূর করে দিন।
মজনুর পিতা তাকে হজে নিয়ে গিয়ে কাবার গিলাফ ধরে দুআ করতে বলল, সে তার উল্টা দুআ করল এবং সে কাবার গিলাফ ধরে বলল, ‘হে আল্লাহ আমার অন্তর থেকে যেন লায়লীর মুহাব্বত কখনই দুরীভূত না হয়। আর আমার দুআয় যে ব্যক্তি আমীন বলবে তার উপর আপনি রহম করুন।
দেখ মজনুর পিতা কি বলল আর মজনু কি করল। এটাই হচ্ছে মুহাব্বত। যদি এমন মুহাব্বত সৃষ্টি হয় তাহলেই রাসূলে পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সুন্নাতের উপর আমল করা সম্ভব। রসূলে পাকের সুন্নাতকে এর চেয়ে বেশি মুহাব্বত করতে হবে । সুন্নাত মুতাবিক আমল করতে হবে। তবেই নিজের জীবন ধন্য হবে।
আমার ছাত্র যামানার একটি ঘটনা
আমার ছাত্র যামানার কাফিয়ার বছর একজন উস্তাদ অসুস্থ হয়ে পড়েন। আমি যখন হুযুরকে দেখতে যেতাম তখন কিতাব নিয়ে কাঁদতে কাঁদতে যেতাম এবং কাঁদতে কাঁদতে ফিরতাম। কারণ হুযুরের সাথে আমার মুহাব্বত ছিল। হুযুরের অসুস্থ হওয়াটা আমার বরদাশ করতে কষ্টকর বিষয় মনে হচ্ছিল। দ্বিতীয় হুযুর অসুস্থ হওয়ার দরুণ ঐ কিতাব পড়া বন্ধ হয়ে রইল। তাই মনে কষ্ট লাগছিল।
এই হচ্ছে উস্তাদের মুহাব্বত। যার মাঝে উস্তাদের সাথে এমন মুহাব্বত থাকবে একদিন না একদিন সে অবশ্যই দ্বীনের খাদেম হবে, ইনশাআল্লাহ। যার নিকট একটি অক্ষরও শিখলে তুমি তার দাস। খলীফাতুল মুসলিমীন হযরত আলী কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহু বলেন, ‘যে ব্যক্তি আমাকে একটি অক্ষর শিক্ষা দিল আমি তার দাস। তিনি ইচ্ছা করলে আমাকে বিক্রি করে দিতে পারেন অথবা ইচ্ছা করলে আমাকে চিরজীবন দাস হিসাবে রাখতে পারেন অথবা মুক্ত করে দিতে পারেন।’
উস্তাদকে মনে করতে হবে তিনি তােমার মনিব, তিনিই তােমার অভিভাবক। তিনি তােমাকে যখন যে নির্দেশ দিবেন তুমি তা সস্তুষ্টচিত্তে বরণ করে নিবে। এখন তােমরা উস্তাদের কাছে একটি অক্ষর শিখছাে, না হাজার হাজার? তাহলে তােমরাই চিন্তা কর উস্তাদের সামনে কিরূপ থাকা চাই।
কিতাব পড়তে কেন মন চায় না
আজ ছেলেরা অভিযােগ করে যে কিতাব পড়তে ভাল লাগে না। কিতাব অধ্যয়ন করতে মন চায় না। কিতাব নিয়ে বসলে অসহ্য অস্থির লাগে। তার কারণ হচ্ছে উস্তাদের সাথে তার মুনাসাবাত নাই। ছাত্র উস্তাদকে মুহাব্বত করে না, উস্তাদের নেক নজরও তার প্রতি নিপতিত হচ্ছে না, তাই তার কিতাব অধ্যায়নে ভাল লাগে না, মনে তৃপ্তি পাওয়া যায় না। সুতরাং যদি কিতাব অধ্যায়নে স্বাদ পেতে চাও তাহলে উস্তাদের সাথে মুনাসাবাত তৈরি কর। উসতাদের সাথে মুহাব্বত এর সম্পর্ক তৈরি কর। তাহলে ইনশাআল্লাহ কিতাব মুতাআলাতে স্বাদ পাবে।
কী যেন হারালাম?
আমি সাহারানপুরে যেই শায়খের কাছে আবু দাউদ শরীফ পড়তাম, তিনি বছরে দু’তিন বার হাজিরা নিতেন। আমি নিয়মিত দরসে উপস্থিত থাকতাম; কোন সময় অনুপস্থিত থাকতাম না। ঘটনাচক্রে একদিন পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্য আমি আবু দাউদ শরীফ নিয়ে বাগানে গিয়ে মুতালাআ করতে লাগলাম। আর ঐ দিন হুযুর হাজিরা নিলেন। পরে যখন আবার হাজিরা ডাকলেন তখন আমার দিকে একটু চোখ তুলে তাকালেন। কিছুই বললেন না। তারপর থেকে আমি যে কত তওবা ইস্তেগফার করলাম, কিন্তু তারপরও অন্তরের মাঝে প্রশান্তি পাইনি। মনে হলে মনটা ছটফট করে আর মনের মাঝে এমন লাগে, কী যেন হারালাম! কী যেন হারালাম!!
রাসূল সা.-এর প্রতি সাহাবাদের মুহাব্বত
সকল সাহাবায়ে কেরাম নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে জীবনের চেয়ে বেশি মুহাব্বত করতেন, নিজেদের গায়ে এক বিন্দু রক্ত থাকা পর্যন্ত তারা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর ইজ্জতে আঘাত আসতে দেননি। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর জন্য জান উৎসর্গ করে দিয়েছেন। নিজের বুককে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর ঢাল হিসাবে দাঁড় করিয়ে দিয়েছেন। দেখ সাহাবারা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে কী পরিমাণ মুহাব্বত করেছেন! এই জন্যই তাে তারা আমাদের জন্য সত্যের মাকাঠি। তাদের থেকে শিখতে হবে, যেন আমাদের জীবনে সীমালঙ্ঘন না হয়।
হযরত জুবায়ের রাদি.-এর ইশক
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর যুগেও সিঙ্গা লাগানাের প্রচলন ছিল। বিভিন্ন ব্যথার কারণে মানুষ সিঙ্গা লাগাত। একবার নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সিঙ্গা লাগালেন। শরীর থেকে নির্গত রক্তগুলাে জমা করে জুবায়েরকে রাদি. ডেকে বললেন, এগুলাে ফেলে দাও। তিনি একটু আড়ালে গিয়ে সব খেয়ে ফেললেন। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জিজ্ঞেস করলেন, কী করলে? তিনি বললেন খেয়ে ফেলেছি। হুযুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, যেই পেটে আমার রক্ত প্রবেশ করেছে ঐ পেট আগুনে জ্বলবে না। এই ছিল সাহাবাদের মুহাব্বতের নমুনা।
হযরত মালেক রাদি.-এর ইশক
উহুদ যুদ্ধে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর মাথা মুবারকে লােহার একটি কড়া বিদ্ধ হবার পর যখন তা বের করা হলাে, তখন অনেক রক্তক্ষরণ হলাে। সাহাবী হযরত মালেক রাদি. হুযুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে অনেক ভালবাসতেন। ভালবাসা ও মুহাব্বতের বশবর্তী হয়ে তিনি সবটুকু রক্ত খেয়ে ফেললেন।
সিদ্দীকে আকবর রাদি.-এর ইশক
মদীনা হিজরতের সফরে যখন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সফল সফরসঙ্গী উম্মতের শ্রেষ্ঠ ব্যক্তি হযরত আবু বকর সিদ্দিক রাদি. গারে ছওরে আত্মগােপন করেছিলেন, তখন তিনি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর হেফাজতের জন্য ঐ গর্তের সকল ছিদ্রসমূহকে কাপড় ছিড়ে বন্ধ করে দিয়েছিলেন। কিন্তু তারপরও একটি ছিদ্র রয়ে গেল। তখন তিনি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর মুহাব্বতে নিজের পায়ের আঙ্গুল দ্বারা ঐ ছিদ্রের মুখ বন্ধ করে রাখলেন। সাপ তাকে দংশন করল। তার শরীর বিষে বিবর্ণ হয়ে গেল। নবীর মুহাব্বতে তিনি চুপ রইলেন। এটাকেই বলে মুহাব্বত । এটাকেই বলে ইশক।
তবুকের যুদ্ধের সময় সাহাবাগণের অবস্থা তেমন ভাল ছিল না। তারপরও ইসলামের জন্য আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের ডাকে সাড়া দিয়ে সবাই যুদ্ধের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে। রাসূলে পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যুদ্ধের জন্য সবার কাছে চাঁদা চাইলেন। সবাই নিজ নিজ সাধ্য অনুযায়ী বায়তুল মালে অর্থ জমা দিল। হযরত আবু বকর সিদ্দিক রাদি.ও মাল নিয়ে আসলেন। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জিজ্ঞেস করলেন। আপনি কী এনেছেন? তিনি বললেন আমি ঘরের সব নিয়ে এসেছি। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জিজ্ঞেস করলেন, ঘরওয়ালাদের জন্য কী রেখে এসেছেন? তিনি বললেন আল্লাহ ও তার রাসূলকে রেখে এসেছি। এ কথাটাকেই কোন এক আল্লাহ ওয়ালা এইভাবে ব্যক্ত করেছেন,
بلبلوں کیلئے باغ هے پروانه كيلئے چراغ بس
صدیق اکبر کیلئے الله اور رسول بس
বুলবুল পাখিদের জন্য ফুলবাগান যথেষ্ট। তারা শুধু ফুল নিয়ে মত্ত থাকে। ফুল না পেলে তাদের মনে প্রশান্তি আসেনা। আর কীটপতঙ্গের জন্য বাতি। বাতির সাথে অর্থাৎ আগুনের সাথে তাদের এত ভালবাসা ও মুহাব্বত যে তারা আগুনের উপর জীবন বিলিন করে দেয়। আর হযরত আবু বকর সিদ্দিক রাদি.-এর জন্য ঠিক তেমনিভাবে একমাত্র আল্লাহ ও তাঁর রসূলই যথেষ্ট।
হযরত উম্মে হানী রাদি.-এর ইশক
রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে মুহাব্বত করা ঈমানের অঙ্গ। সাহাবাগণ যেমন রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে মুহাব্বত করতেন তেমনি সাহাবিয়্যাহগণও রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে মুহাব্বত করতেন। হযরত উম্মে হানি রাদি. হুযুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর খাদেমা ছিলেন। অনেক সময় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রাতে একটি পাত্রে প্রস্রাব করতেন সকালে তা ফেলে দেওয়া হতাে। একদিন হযরত উম্মে হানি তা ফেলে না দিয়ে খেয়ে ফেললেন। হুযুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জানতে পেরে বললেন, উম্মে হানি, তােমার পেটে কোনদিন আর অসুখ হবে না।
দেখ তারা রসূলকে কত মুহাব্বত করেছেন। তাদের থেকে আমরা মুহাব্বত শিখব। তারা আমাদের জন্য শরীয়তের মাপকাঠি।
দাড়ি নবীজির সুন্নাত
যদি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সাথে মুহাব্বত সৃষ্টি হয়, তাহলেই নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর ইত্তেবা বা অনুসরণ সম্ভব। তার অনুসরণ করার দুটি পন্থা আছে, উভয় পন্থার সমষ্টির নাম-ই অনুসরণ। শুধু একটির মাধ্যমে অনুসারী বলা যায় না। (১) বাহ্যিক অর্থাৎ-সুরত (দেখার দিক দিয়ে এক হওয়া) (২) অভ্যন্তরীন অর্থাৎ সিরাত (চরিত্র ও আখলাকের দিক দিয়ে সাদৃশ্য হওয়া)।
রসূলের সুরত এর অনুসরণ এর মাঝে আহাম ও গুরুত্বপূর্ণ অনুসরণ প্রকাশ পায় দাড়ির মাধ্যমে। কিন্তু আজ দুঃখের বিষয় মুসলমান দাড়ি রাখে না। এর চেয়েও জঘন্য ও খারাপ, নিকৃষ্ট কথা হচ্ছে মাদ্রাসা পড়ুয়া ছাত্ররাও দাড়িতে হাত লাগায়। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, ‘যেই ব্যক্তি আমার সুন্নাতকে উপেক্ষা করে সে আমার উম্মত নয়।’ (আলহাদীস) এই কথার অর্থ কী ? নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর রীতিনীতি, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর চালচলন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সুরত ও সীরত, সবই সুন্নাতের অন্তর্ভূক্ত। এখন যারা এই সুন্নাতের খেলাফ চলবে, তারা কিভাবে হুযুরের উম্মত হওয়ার দাবী করতে পারে?
সুন্নাতের উপর চলার লাভ
সুন্নাতের মাধ্যমে জীবন অতিবাহিত করতে পারলে, জীবনের প্রতিটি ধাপে ধাপে সুন্নাতকে অন্বেষণ করে সুন্নাত মুতাবিক জীবন পরিচালিত করতে পারলে কী লাভ হবে? নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর চুড়ান্ত পর্যায়ের লাভ বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, ‘সে আমার সাথে জান্নাতে থাকবে।’ আর রসূলে পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাথে জান্নাতী হওয়ার মতাে সৌভাগ্য অর্জন করতে আমরা সবাই রাজি আছি তাে? আল্লাহ তাআলা আমাদের সকলকে রাসূলের সাথে জান্নাতের বসবাসী হওয়ার তৌফিক দান করুক। আমীন ছুম্মা আমীন।
اواخر دعوانا ان الحمد لله رب العلمين.