ফিলিস্তিনি ছাত্রদের টিউশন ফি মওকুফ করলো আজহার বিশ্ববিদ্যালয়

মিশরের আল-আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিলিস্তিনি শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা ও আবাসনের সব খরচ মওকুফ করার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। শনিবার (২ ডিসেম্বর) প্রকাশিত এক বিবৃতিতে আল-আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্র্যান্ড ইমাম ড. আহমদ আল-তাইয়িব এ ঘোষণা দিয়ে অবিলম্বে সব ফিলিস্তিনি শিক্ষার্থীকে পূর্ণ শিক্ষাবৃত্তি দেওয়ার আহ্বান জানান। খবর আল জাজিরা।

আল-আজহার কর্তৃপক্ষ এক বিবৃতিতে জানায়, আল-আজহারের গ্র্যান্ড ইমাম বিশ্ববিদ্যালয়ে সেখানে অধ্যয়নরত সব ফিলিস্তিনি শিক্ষার্থীকে মাসিক বৃত্তি দেওয়ারও নির্দেশ দিয়েছেন। এছাড়া ফিলিস্তিনি শিক্ষার্থীদের জন্য সব সময় আল-আজহারের সব কিছু উন্মুক্ত রয়েছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।

আল আজহারের বিবৃতিতে গাজায় চলমান নৃশংস আগ্রাসনের সময়ে সব ফিলিস্তিনি শিক্ষার্থীর প্রতি বিশেষ মনোযোগ দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে। সেই সঙ্গে ব্যক্তিগতভাবেও সবার খোঁজখবর রাখতে বলা হয়। তা ছাড়া পড়াশোনায় মনোযোগী হওয়ার মাধ্যমে পরবর্তী সময়ে মিশর ও ফিলিস্তিনে আল-আজহারের উত্তম প্রতিনিধি হয়ে উঠার জন্য ফিলিস্তিনি শিক্ষার্থীদের প্রতি আহ্বান জানান গ্র্যান্ড ইমাম ড. আহমদ আল-তাইয়িব।

এদিকে আমিরাতে জাতিসংঘের জলবায়ু সম্মেলন কপ২৮-এ ফেইথ প্যাভিলিয়ন উদ্বোধনকালেও আল-আজহারের গ্র্যান্ড ইমাম শায়খ ড. আহমদ আল-তাইয়িব নিরপরাধ ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে ইসরায়েলের নৃশংস গণহত্যা বন্ধের আহ্বান জানান। তিনি নিরপরাধ ফিলিস্তিনি নারী-পুরুষ, শিশু-কিশোরদের বিরুদ্ধে চলমান নির্বিচার হত্যাযজ্ঞ প্রতিরোধে সব ধর্মের প্রতিনিধিদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানান। গত রোববারের এ অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন পোপ ফ্রান্সিসও।

উল্লেখ্য, গত ৭ অক্টোবর থেকে গাজায় হামলা চালাতে শুরু করে ইসরায়েলি বাহিনী। ৫০ দিনের বেশি সময় ধরে লাগাতার হামলা চালানোর পর আন্তর্জাতিক চাপে চারদিনের মানবিক বিরতিতে সম্মত হয় তেল আবিব। পরে দুই দফা মেয়াদ বাড়িয়ে সেটিকে এক সপ্তাহে টেনে নেওয়া হয়। এরপর ফের হামলা চালাতে শুরু করে ইসরায়েলি বাহিনী। তাদের বিমান ও স্থল হামলায় এখন পর্যন্ত কমপক্ষে ১৫ হাজার ৮৯৯ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে, যাদের অর্ধেকের বেশি নারী ও শিশু। এ হামলায় আহত হয়েছে ৪২ হাজারের বেশি মানুষ। আর বাস্তুচ্যুত হয়েছে প্রায় ২০ লাখ মানুষ।

উল্লেখ্য, মিশরের আল-আজহার বিশ্ববিদ্যালয় পৃথিবীর তৃতীয় প্রাচীনতম বিশ্ববিদ্যালয়। ৯৭১ সালে তৎকালীন ফাতেমি খলিফা আল-মুইজ লি-দিনিল্লাহর নির্দেশে সেনাপতি জওহর সিকিল্লি ফাতেমির তত্ত্বাবধানে জামেউল আজহার প্রতিষ্ঠা লাভ করে। বর্তমানে এখানে ১২০টি দেশের ৫০ হাজার শিক্ষার্থীসহ প্রায় পাঁচ লাখ শিক্ষার্থী পড়াশোনা করছে। এর মধ্যে বিভিন্ন বিভাগে ফিলিস্তিনের ৪৪৪ জন শিক্ষার্থী রয়েছেন।

আগের সংবাদগাজার দক্ষিণাঞ্চলে ১০ ইসরায়েলি সেনাকে হত্যা করল হামাস
পরবর্তি সংবাদইসরাইলি সৈন্যদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ছে ডায়রিয়াসহ নানা রোগ