মুসলিম চিন্তাবিদদের বয়ানে ইসলামী নারীবাদ

রাকিবুল হাসান নাঈম:

৯ অক্টোবর, ২০০৮। মালয়েশিয়ার মুসলিম নারীবাদী সংগঠন সিস্টার্স ইন ইসলামের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা, আমেরিকান বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আমিনা ওয়াদুদ মধ্য ব্রিটেনের অক্সফোর্ডে নারী-পুরুষের একটি জামাতে ইমামতি করেন। বিষয়টি বিশ্বের বিভিন্ন দেশের আলেম ও ফকিহদের ভাবিয়ে তুলে। তারা এর প্রতিবাদ জানান। জবাবে আমিনা ওয়াদুদ বলেন, ‘ইমামতি কেবল পুরুষেরই অধিকার নয়, বরং নারীদেরও অধিকার।’ তার এই বক্তব্যটির ইসলামি ফিকহি তুরাসের সঙ্গে সম্পর্ক না থাকলেও আধুনিক নারীবাদী বক্তব্যের সঙ্গে বেশ সাজুয্যপূর্ণ। নারীবাদীদের বক্তব্য অনুযায়ী তিনি পুরুষতান্ত্রিক সমাজের ওপর ভিত্তি করে যে নির্মিত যে নিয়ম, তিনি তার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন।

এটাকে বলা হয় পশ্চিমা নারীবাদের ইসলামীকরণ। তবে মুসলিম নারীরা তা স্বীকার করতে চান না। লেবাননী গবেষক ও লেখিকা দিলাল বাজরি বলেন—‘ইসলামী নারীবাদ পশ্চিমা নারীবাদের সমস্ত চিন্তাকে উত্তরাধিকার সূত্রে গ্রহণ ও নিজের ভেতর ধারণ করলেও তারা সেটা অস্বীকার করে বলে, এটা ইসলাম।’ ‘ইসলামী নারীবাদ’ পরিভাষাটির প্রথম ব্যবহার দেখা যায় ১৯৯২ সালে তেহরান থেকে প্রকাশিত নারী বিষয়ক ম্যাগাজিন ‘জানান’ -এ দুজন ইরানি লেখিকা জিবা মীর হুসাইনি ও আফসানা নজমাবাদীর লেখায়। এরপর ১৯৯৬ সালে সৌদি লেখিকা মী ইমানির বই ‘ইসলাম ও নারীবাদ’ প্রকাশিত হয়, যেখানে এই পরিভাষাটি ব্যবহার হয়।

পশ্চিমা চিন্তায় নারী

১৮৩৭ খ্রি. ফরাসি দার্শনিক ও ইউটোপীয় সমাজবাদী চার্লস ফুরিয়ে প্রথম ‘নারীবাদ’ শব্দটির আনুষ্ঠানিক ব্যবহার করেছিলেন বলে ধারণা করা হয়। নারীবাদ(feminism) এবং নারীবাদী (feminist) শব্দদুটি ফ্রান্স ও নেদারল্যান্ডসে প্রথম প্রকাশিত হয় ১৮৭২ সালে। যুক্তরাজ্যে ১৮৯০ সালে, এবং যুক্তরাষ্ট্রে ১৯১০ সালে। অক্সফোর্ড ইংরেজি অভিধান অনুযায়ী নারীবাদী শব্দের উৎপত্তিকাল ১৮৫২ এবং নারীবাদ শব্দের ক্ষেত্রে তা ১৮৯৫। কেমব্রিজ ডিকশনারী বলেছে, নারীবাদী দর্শন এমন একটি দর্শন যা একজন নারী ছাড়া একজন পুরুষের সাথে মানুষের অভিজ্ঞতার সম্পর্ককে প্রত্যাখ্যান করে। এটি এমন এক দর্শন, যা বুদ্ধিবৃত্তিক ও সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে পুরুষের আধিপত্য থেকে মুক্ত হতে চায়।

আমরা গ্রীক সাহিত্যসহ পুরুষ র্দাশনিকদের চিন্তায় নারী সত্ত্বাকে ভাবতে থাকে বিকৃত সত্ত্বা হিসেবে পাই। উদাহরণস্বরূপ গ্রীক সাহিত্যিক হেজডস মনে করেন, নারীর পৃথিবীতে আগমনের আগে পৃথিবীতে কোন অশান্তি ছিল না। প্যানডোরা নামক নারী পৃথিবীতে দু:খ, দূর্দশা ও অশান্তি নিয়ে আসে। ইলিয়ড এবং ওডিসি মহাকাব্যের লেখক অন্ধ মহাকবি হোমার নারীকে প্রাকৃতিক ভাবে অসহায় ও দূর্বল ভেবেছেন। নারী প্রশ্নে বিকৃত চিন্তার ক্ষেত্রে প্লেটো, এরিস্টটল, রুশো কিন্তু পিছিয়ে ছিলেন না। প্লেটো তার বিখ্যাত “The Republic” গ্রন্থে নারীর জন্মকে অত্যন্ত নেতিবাচকভাবে তুলে ধরেন। তার মতে, যারা পাপ করবে তারা পরজন্মে নারী হিসেবে জন্ম নেয় অর্থাৎ পাপী ও খারাপ লোকের আত্না থেকে নারীর জন্ম। অবশ্য প্লেটোর দ্বিতীয় গ্রন্থ “The Laws” এ নারী প্রশ্নে ইতিবাচক মনোভাব পরিলক্ষিত হয়।

অন্যদিকে, জীব বিজ্ঞান ও রাষ্ট্রবিজ্ঞানের জনক এরিস্টটল নারী প্রশ্নে ভয়ানক ধারনার প্রকাশ করেন। তার মতে, নারী হলো “Defective male” । মানুষ একটি লক্ষ্যে পৌছানোর জন্য জন্ম গ্রহন করে কিন্তু পুরুষ সৃষ্টিতে কোন উপাদানের ঘাটতি হলে তখনই “Defective male” বা অর্পূনাঙ্গ পুরুষ হিসেবে নারীর জন্ম হয়। তার মতে, প্রজননের ক্ষেত্রে পুরুষ “প্রাণ” এবং নারী হলো বস্তুু। শিশুর শরীরের আকৃতি গঠনে সকল ভূমিকা পুরুষের কারণ, পুরুষ তাপ উৎপাদন করতে পারে। তিনি আরো বলেন, নারীর গুন হলো নীরবতা ও ধৈর্য্য। তৎকালীন গ্রীক সমাজে একটি কথা প্রচলিত ছিল, যে নারী কম দেখে, কম বুঝে, কম জানে এবং ঘরের বাইরে কম বের হয় তারাই হলো উত্তম নারী। হাজার হাজার বছর ধরে প্রচলিত এই আদর্শ নারীর ধারণা কিন্তু একবিংশ শতাব্দীর পৃথিবীতে বিদ্যমান। নারী প্রশ্নে ফরাসি বিপ্লবের শ্লোগান ”সাম্য, মৈত্রী ও স্বাধীনতা” স্রষ্টা, সামাজিক চুক্তি মতবাদের প্রবক্তা রুশো যে ধারনা ব্যক্ত করেন তা সত্যিই হতাশাব্যঞ্চক। রুশো নমনীয়তা, কোমলতা, সৌন্দর্য ও সংযমী হওয়াকে নারীর গুন বলেছেন। তিনি বলেন, পুরুষ যুক্তি শিখবে নারী নয়; কেননা যুক্তিবাদী পুরুষের জন্য আবেগময় নারী অধিক মাত্রায় গ্রহণযোগ্য। তিনি নারী ও পুরুষের জন্য ভিন্ন শিক্ষা ব্যবস্থার কথা বলেন।

আধুনিক দার্শনিক দেকার্ত মানুষের দেহ ও মনের দ্বৈতবাদী ব্যাখ্যা দিয়েছেন। তাঁর মতে, মানুষ হচ্ছে দেহ ও মনের সম্মিলিত সংগঠন। দেহ হচ্ছে মনহীন বস্তু আর মন হচ্ছে বস্তুহীন সত্তা। দেহ আর মন প্রকৃতিগতভাবে পরস্পরবিরোধী। মন হচ্ছে সচেতন সত্তা আর দেহ হচ্ছে অসচেতন সত্তা। মানুষ দ্বৈতসত্তার অধিকারী হলেও ‘সচেতনতা’ মানুষকে প্রকৃতি থেকে স্বতন্ত্র করেছে, উচ্চতর স্থানে আসীন করেছে। আধুনিক দার্শনিকদের এই দ্বৈতবাদী ব্যাখ্যা সামাজিক পর্যায়ে বৈষম্যকে (যেমন নারী-পুরুষ বৈষম্য, মানব প্রকৃতি বৈয়ম্য, মালিক-উৎপাদনকারীর বৈষম্য) উৎসাহিত করেছে।

নারীবাদী আন্দোলনের সূচনা

নিউটন বলেছেন, সমস্ত কর্মের বিপরীত প্রতিক্রিয়া রয়েছে যা তাদের তীব্রতার সমানুপাতিক। নারীবাদী ফরাসি লেখিকা, বুদ্ধিজীবী, অস্তিত্ববাদী দার্শনিক, রাজনৈতিক-কর্মী সিমোন দ্য বোভোয়ার এই তত্ত্বটিকে প্রমাণ করেছেন তার সবচেয়ে সাড়া জাগানো নারীবাদী গ্রন্থ ‘দি সেকেন্ড সেক্স’ বইয়ে । এই বইটির মাধ্যমে সিমোন গোটা পৃথিবীতে নারীবাদী তত্ত্বের এক নতুন প্রতিবাদী জোয়ার তৈরি করতে সমর্থ হন। তিনি বলেন, নারীদের অবশ্যই পৌরাণিক কাহিনী, কুসংস্কার এবং পবিত্র বিশ্বাসগুলি পরিত্যাগ করতে হবে যা শ্বেতাঙ্গ পুরুষকে নারীদের নিপীড়ন ও নিয়ন্ত্রণ করতে সক্ষম করে। নারীকে যদি প্রকৃত নারী হয়ে থাকতে হয়, তাহলে তাকে নারীত্ব ত্যাগ করতে হবে। কারণ নারীত্বের ধারণাই মহিলাদের জন্য সবচেয়ে বড় দুর্বলতা। পাশাপাশি তাকে বিয়ে ও মাতৃত্বও পরিত্যাগ করতে হবে।

এখান থেকেই সবকিছু পরিবর্তন হয়। নারীবাদী আন্দোলন শুরু হয়। একতরফা সংগ্রামে পুরুষের বিরুদ্ধে দুটি দাবি তোলা হয়। এক. লিবারেল: এতে কর্মসংস্থান, সুযোগ এবং ব্যক্তির অধিকারে সমতার প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দেয়। দুই. রেডিক্যাল: এতে বলা হয়, সামাজিক কাঠামো, যেমন বিজ্ঞান, ভাষা এবং ইতিহাস, এগুলি পুরুষ-পক্ষপাতমূলক কাঠামো, এবং এই কাঠামোগুলি অবশ্যই নারীর মতামত অনুসারে পুনর্বিবেচনা করা উচিত।

আত্মকেন্দ্রিকতা এবং লিঙ্গ দ্বন্দ্ব

তবে আবদুল ওহহাব মাসিরি ‘নারীবাদ’ শব্দটিকে নারীবাদের অভিব্যক্তি হিসাবে গ্রহণ করতে নারাজ। তিনি বিশ্বাস করেন, এই শব্দটি নারীর স্বাধীনতাকে প্রকৃত অর্থে প্রকাশ করে না। বরং পুরুষদের সাথে বিরোধের অবস্থা এবং পশ্চিমের ধারণানুযায়ী নিজেদেরকে পণ্য হিসাবে প্রকাশ করে। এতে মহিলা এমন এক অবস্থায় আবির্ভূত হয়, যে নিজেকে ছাড়া আর কিছুই বুঝে না। পুরুষকে শত্রু ভাবে।

ইসলামী সংস্কৃতি বিষয়ক গবেষক এবং প্রভাষক মালাক আল-জুহানি দুটি মৌলিক প্রশ্ন তুলেছেন। এক. আধুনিক নারীবাদী প্রশ্ন যা পুরুষতান্ত্রিক জগতে নারীর প্রতি নিকৃষ্ট দৃষ্টিভঙ্গি প্রমাণ করার জন্য চালু করা হয়েছিল। দুই. লিঙ্গ সম্পর্কে উত্তর-আধুনিক প্রশ্ন, যেটিকে মাসিরি পুরুষের সাথে নারীর দ্বন্দ্বের একটি অনিবার্য ফলাফল হিসাবে উল্লেখ করেছেন।

জেন্ডার বিশেষ অভিধান অনুসারে একবচন, যা একটি ল্যাটিন শব্দ। এর অর্থ জাতি বা মূল। তারপর জেন্ডার ফরাসি ভাষায় রূপান্তরিত হয়ে এর অর্থ হয় লিঙ্গ। জিনস হলো জেন্ডারের আরবি অনুবাদ। শব্দটি মনোবিজ্ঞানী রবার্ট স্টলার দ্বারা প্রবর্তিত। তার মতে, সামাজিক-সাংস্কৃতিক কাঠামোর কারণে লিঙ্গ বৈষম্য ঘটে। বায়োলজিক্যাল কারণে নয়। নারী-পুরুষ পার্থক্যটি সমাজের তৈরী। সিমোন দ্য বোভোয়ার বলেন, একজন নারী নারী হয়ে জন্মায় না, বরং সমাজ তাকে নারী বানায়।

ইসলামী নারীবাদ এবং জেন্ডার পাঠ

মরক্কোর গবেষক ইকরাম আদনানি বিশ্বাস করেন যে, আধুনিক বিপ্লব মানবাধিকারের নীতির সাথে সামঞ্জস্য রেখে একটি নারীবাদী মতবাদের ভিত্তি সূচনা করেছে। জর্ডানের চিন্তাবিদ ফাহমি জাদান তার সমালোচনামূলক-বিশ্লেষণমূলক গবেষণায় প্রাচ্যের মুসলিম বিশ্বে নারীবাদী উত্তরণের চিত্রের বিবরণ দিয়েছেন। তিনি বিরোধিতা করেছেন সে সমস্ত নারীবাদীদের, যারা ইসলামি পরিবেশ ও বক্তব্য ছেড়ে পশ্চিমা পরিবেশ ও বক্তব্য গ্রহণ করেছে।

মুসলিম নারীবাদীদেরকে ফাহমি জাদান দুটি ভাগে ভাগ করেছেন। এক. যাদের মধ্যে সংস্কারবাদী প্রবণতা আছে। তারা ইসলামিক পোশাকে নারীবাদকে সাজানোর প্রচেষ্টা চালায়। দুই. যাদের মধ্যে প্রত্যাখানবাদী প্রবণতা আছে। চরম উদ্বেগের বিষয় হলো, তারা ইসলামের বিধানকে প্রত্যাখ্যান করে। কুরআনিক টেক্সট, হাদিস কিছুই মানে না, বরং এগুলো ভুল সাব্যস্ত করতে চায়। প্রত্যাখ্যানবাদী নারীবাদীরা পশ্চিমের অ-ইসলামিক স্থানগুলিতে স্বাধীনতার প্রলোভনের সহজ শিকারে পরিণত হয়। তাদের সকলেই শৈশব থেকেই মনস্তাত্ত্বিক জটিলতা দ্বারা নিয়ন্ত্রিত।

জর্ডানের চিন্তাবিদ তার বইয়ে ইসলামী বিশ্বের বিভিন্ন দেশের প্রত্যাখ্যানবাদী নারীবাদের চারটি উদাহরণ দিয়েছেন। এক. সুইডিশ বাঙালি তসলিমা নাসরিন। দুই, ডাচ সোমালি আয়ান হিরসি। তিন. কানাডায় উগান্ডার অভিবাসী ইরশাদ মানজি। চার. সবশেষে জার্মান-তুর্কি নাজলা কিলিক। তার বইতে তিনি তাদের সবচেয়ে বিশিষ্ট ধারণা সহ তাদের সংক্ষিপ্ত জীবনী উল্লেখ করেছেন। উদাহরণস্বরূপ, তসলিমা নাসরিন বিশ্বাস করেন, মুসলিম বিশ্বের ধর্ম এবং রাষ্ট্র একজন মহিলাকে তার স্বামীর যৌনদাসীতে পরিণত করেছে। আয়ান হিরসি ইসলামিক ব্যাখ্যা ও বিশ্লেষণের বিরুদ্ধে বিপ্লবের আহ্বান জানিয়েছেন, সালমান রুশদির মতো কুরআনকে একটি ঐতিহাসিক টেক্সট বলে বিবেচনা করেছেন। ইরশাদ মানজি বিশ্বাস করতেন, ইসলামিক ব্যাখ্যা একটি উপজাতীয় চিন্তাধারা দ্বারা সেট করা হয়েছিল এবং তাকে অবশ্যই পরিবর্তন করতে হবে। পাশাপাশি নাজলা কিলিক পর্দার বিরোধিতা করেছিলেন। বলেছিলেন, ধর্মই নারীকে বাধা দেয়। ইউরোপীয় আইন নয়।

উপসংহার

ডঃ হেবা রউফ ইজ্জাত লিঙ্গ এবং সমতা বিষয়ক কুরআনের একটি মননশীল পাঠ উপস্থাপন করেছেন। তিনি বলেছেন, ইসলাম নিপীড়নকারী পুরুষতন্ত্র ও পিতৃতন্ত্রের বিরুদ্ধে। ফলেই ইসলাম পুরুষের উত্তরাধিকারে পুরুষ ও নারীকে অন্তর্ভুক্ত করে। কারণ কোরানের ভাষায় চিন্তা করার যোগ্য জিনিসগুলির মধ্যে একটি হল মানুষ। এখানে কোনো বিরোধ নেই। নারী এবং পুরুষ যেই হোক, বলা হয়, সে একজন মানুষ।

লিঙ্গের মধ্যে সমতা কিছু বিষয়ে নিরঙ্কুশ এবং অন্যান্য বিষয়ে আপেক্ষিক। যেমন শারীরীক কাঠামো এবং শক্তিতে পার্থক্য আছে। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রে পার্থক্য নেই। যেমন ইমাম ইবনে হাজম আল-আন্দালুসী বলেন, মানবজাতির প্রতি নবীর মিশন ছিল উভয় লিঙ্গের জন্য একটি অভিন্ন মিশন। নারী-পুরুষের প্রতি আল্লাহ ও রাসূলের বক্তব্য ছিল এক। বিশেষ ক্ষেত্র ছাড়া কোথাও পুরুষকে নারী থেকে আলাদা করা হয়নি।

সুরা নিসার ৩৪নং আয়াত, যেখানে আল্লাহ বলেছেন—‘পুরুষরা নারীদের তত্ত্বাবধায়ক, এ কারণে যে, আল্লাহ তাদের একের ওপর অন্যকে শ্রেষ্ঠত্ব দিয়েছেন’। এখানে অভিভাকত্বকে ‘কাওয়ামাহ’ শব্দ দ্বারা বিধৃত করা হয়েছে। সাধারণ কাওয়ামাহ একজ মুমিনের গুণ, চাই সে পুরুষ হোক কিংবা নারী। এর অর্থ হলো, সবকাজ শরিয়তের নিয়মমাফিক করা, ন্যায় ও ইনসাফ করা। এসব ক্ষেত্রে নারী-পুরুষ সমান। উল্লিখিত আয়াতে কাওয়ামাহর অর্থ, নারীর উপর পুরুষকে কর্তৃত্ব নয়, বরং বিবাহের মাধ্যমে পুরুষের উপর যে পারিবারিক দায়িত্ব অর্পিত হয়েছে, তা যেন সে ন্যায় ও ইনসাফের সাথে পালন করে। তার দায়িত্ব দুটি। এক. পরিবারের বস্তুগত ও নৈতিক চাহিদাগুলি পূর্ণ করা। দুই. তাদেরকে পূর্ণ নিরাপত্তা দেয়া এবং ইনসাফের সঙ্গে তাদেরকে পরিচালিত করা।

 

আগের সংবাদবাংলা ইসলামি গান ও জাতীয় কবির অবদান
পরবর্তি সংবাদবরিশালে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত বেড়ে ১০