আব্দুল্লাহ আল মাহী:
বৈবাহিক সম্পর্ক; ভালোবাসা, একাকিত্ব ও টানাপোড়েন, এই তিন বিষয়ে, প্রবন্ধে মৌলিকভাবে আলাপের গতি জারি থাকলেও আংশিকভাবে প্রাসঙ্গিক-অপ্রাসঙ্গিকের সমন্বয়ে কিছুটা ভিন্ন কথাও এখানে এসে যাবে। এটাই আলাপের গতি।
পুরোটা জুড়েই কয়েকটা নোক্তায় আলাপ করব:
০১—বৈবাহিক সম্পর্ক; স্বামী-স্ত্রী উভয়ে জীবিত, তাদের পারষ্পরিক ভালোবাসা, একাকিত্ব ও টানাপোড়েন।
০২—বৈবাহিক সম্পর্ক; স্বামী-স্ত্রী’র যেকোন একজন মৃত বা বিচ্ছেদের কারণে একাকিত্বে ভোগে, তার ভালোবাসার চাহিদা এবং টানাপোড়েন।
০৩—অবিবাহিত নারী কিংবা পুরুষ; ভালোবাসা, একাকিত্ব ও টানাপোড়েন।
০৪—ট্রান্সজেনারেশন; ভালোবাসা, একাকিত্ব ও টানাপোড়েন।
বাংলাদেশের পরিমন্ডলে ষাটোর্ধ্ব জীবনে একজন মানুষ কয়েকরকমের সংঘাতে জড়িয়ে পড়ে। ফলে ক্ষেত্র বিশেষে নারী-পুরুষ উভয়েই কঠিন কিছু সমস্যার সম্মুখীন হয়ে থাকেন। যাদের সঙ্গী জীবিত তারা আরও ঘনিষ্ঠতা ও হৃদ্যতার তালাশ করে। পরষ্পরের মান, অভিমান ও শ্রদ্ধার জায়গা বৃদ্ধি পায়। তাদের মাঝে একটু আধটু ছেলেমানুষীও দেখা যায়। বাচ্চাদের মতো হয়ে যায় তারা। বাচ্চাদের পছন্দও করে খুব। সঙ্গ ও আড্ডা এ সময়ে তাদের প্রাণে গতি সঞ্চার করে।
ষাটোর্ধ্ব জীবনের সমস্যাবলী
০১. যৌন জীবনে ষাটোর্ধ্ব নারী-পুরুষ
এই বয়সে এসে অধিকাংশ নারী-পুরুষ তাদের জীবন সঙ্গীকে হারিয়ে বসে। ফলে তাদের বৈবাহিক জীবনের একটি মৌলিক চাহিদা যৌনজীবন; এক্ষেত্রে ব্যাঘাত ঘটে। এক মুরুব্বির কথা শুনলাম— বয়স পচাত্তর। তার স্ত্রী বছর তিনেক আগে মারা গেছে। বেচারার জৈবিক চাহিদা আছে এখনও। সে আরেকটি বিয়ে করতে চায়। কিন্তু ছেলেমেয়ে নাখোশ হবে, টাকা-পয়সা দিবে না আর। এই ভয়ে তিনি বিয়ে করেন না। না পেরে হস্তমৈথুন করেন। বিশেষ এক পরিস্থিতি সৃষ্টি হওয়ায় শরীয়ত হয়তো মুরুব্বিকে ছাড় দিবেন। কিন্তু আখলাকী সংকটে আমরা কতদূর পিছিয়ে পড়লাম!
সমাধান চেষ্টা
০১. একাধিক বিবাহ করা— এটা মেন্ডাটরি অপশন না। তবে সামাজিকতা রক্ষার তাগিদে প্রয়োজন সত্ত্বেও না করে থাকাটা অন্যায়ও বটে। একাধিক বিবাহের ওপর সামগ্রিক দৃষ্টি নিক্ষেপ করে লাভ-ক্ষতির সমন্বয় করলে বিবাহ করাটা উত্তম। তবে শুধু যৌনজীবনের দিকে তাকিয়েই বিবাহ করা মারাত্মক অন্যায়। ফলস্বরূপ শেষমেশ সহবাসের বিকল্প হিসেবে হস্তমৈথুনকে বেছে নিতে হচ্ছে যে!
০২. জৈবিক চাহিদা পূরণে অপরিহার্য বিষয় হিসেবে যৌন সম্পর্ককেই সামনে আনতে হবে, এই চিন্তা না করে আমরা এর স্থানে বিকল্প কিছুকে প্রতিস্থাপন করতে পারি। কারণ, যৌনতা একটি চাহিদা মাত্র। চাহিদার রূপান্তর ঘটানো সহজ। সুতরাং জৈবিক চাহিদার বিকল্প হিসেবে ইবাদাতমুখিতা, সামাজিকভাবে আরও সংশ্লিষ্টতা বৃদ্ধি করণ, মাঝেমধ্যে রোজার অভ্যাস; সোমবার, বৃহস্পতিবারের রোজা ইত্যাদি।
শেষ কথা হচ্ছে, তাদের যৌবন আছে ঠিক, কিন্তু কতটা? এই পরিমাণ যা দিয়ে সে অন্যের হক্ব আদায় করতে পারবে? ধারাবাহিকতায় সে সক্ষমতা রাখে কিনা, এসব প্রশ্নের অধীনে এনেই একজন পূর্ণ বয়ষ্ক ষাটোর্ধ্ব নারী-পুরুষের বিবাহের আলাপ উঠতে পারে। এই বয়সে নতুন করে বিবাহ ষাটোর্ধ্বদের শারিরীক সক্ষমতার ওপর নির্ভরশীল একটি প্রশ্ন। বিভিন্ন গবেষণা ও সার্ভেতে দেখা গেছে, তারা বলছেন, এই সময়টাতে তারা যৌন জীবনকে আরও বেশি উপভোগ করেন। কিন্তু উপভোগ আর সক্ষমতা ভিন্ন প্রসঙ্গ। কারণ, চিকিৎসা বিজ্ঞান বলছে, এই বয়সে যৌনজীবনে ঝুঁকির মাত্রা অনেক। তবে, ব্যতিক্রমী আলাপ ও উদাহরণ কখনোই আলোচনার বিষয়বস্তু নয়। বাংলাদেশের মানুষ সক্ষম কি না এটাই আলোচনার ধারা-উপধারা। শারিরীক সক্ষমতা প্রশ্নই ষাটোর্ধ্বদের বিবাহের মূলনীতি। আর সামাজিকতার খাতিরে বিবাহ ব্যথিত ভিন্ন কোন পদ্ধতি অবলম্বন করা জায়েজ কি-না, সে বিষয়ে বিজ্ঞ আলেমদের শরণাপন্ন হওয়া চাই।
২. অর্থনৈতিক জীবনে ষাটোর্ধ্ব নারী-পুরুষ
কারও কারও ক্ষেত্রে, সারাটা জীবন টাকাপয়সা নেড়েচেড়ে এই বয়সে এসে ছেলেমেয়ের ধন্না দিয়ে থাকতে হয়।
আর কেউ কেউ তো কিছুই পাচ্ছে না ছেলেমেয়েদের থেকে। নিজের ভিটেমাটিও নিজের থাকছে না তাদের। বাধ্য হয়ে গায়ে কিছু শক্তি থাকলে বেছে নিতে হচ্ছে কোন পেশা। নিম্নমধ্যবিত্ত থেকে মধ্যবিত্ত, এই দুই শ্রেণীর পুরুষেরা নামেমাত্র মূল্যে কঠিন পরিশ্রম করে যাচ্ছে। আর গরীবদের ভাগ্য তো কখনোই দরোজা মেলেনি। আখেরে আছে তার একটা ভাঙা সংসার আর একটা ভাড়া করা রিকশা।
আর নারীরা এই বৃদ্ধ বয়সে ছেলেমেয়েদের আনুকূল্য না পেলে, হয়তো বাধ্য হয়েই স্বামীর সাথে তাদেরও রোজগারি করতে হয়। কখনও কারও বাসায় বুয়ার কাজ করে। কখনও সেলাই করে। কখনও ভিক্ষা চেয়ে। নিম্নমধ্যবিত্ত আর মধ্যবিত্ত পরিবারের ষাটোর্ধ্ব বয়সী নারীদের শোচনীয় অবস্থাটাই ফুটে ওঠে বেশি। কারণ, তাদের হঠাৎ করেই মূদ্রার না দেখা অপর পিঠ দেখতে হয়।
সমাধান চেষ্টা
ব্যক্তিগত উদ্যোগ
১. বার্ধক্যের আগেই এই বয়সটার জন্য সঞ্চয় করে রাখা।
২. জীবিত থাকাকালীন সময়ে সমস্ত সম্পত্তির বন্টন না করা, স্বামী-স্ত্রী নিজেদের সংকট দূর করে ভালোমতো জীবনযাপনের জন্য অর্থ সংগ্রহে রাখা।
০৩. সন্তানদেরকে আখলাক শিক্ষা দেওয়া। মা-বাবা’র খেদমত কী, শৈশবেই এই শিক্ষা প্রদান করা।
সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় উদ্যোগ
১. ষাটোর্ধ্বদের জন্য কোন একটি সামাজিক সহায়তা মূলক প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করা৷ এদের কাজ হবে বহুমুখী। অর্থাৎ বৃদ্ধাশ্রমকে আরও উন্নত করতে হবে। যুক্ত করতে হবে হোম সার্ভিস। এতে করে বেকারত্ব ঘুচানো যাবে, নতুন পেশা যুক্ত হবে। মানবিকতার চর্চাও হবে। সদকা, ফেতরা, যাকাত এবং দান-অনুদান কীভাবে সুষ্ঠু ও শরয়ী বিধান অনুসারে তাদের মাঝে ব্যায় করা যায়, সে বিষয়ে দক্ষ ও প্রাজ্ঞ মুফতি সাহেব বা ফতওয়া বিভাগ থেকে জেনে নিয়ে কার্য পরিচালনা করা চাই। রাষ্ট্রের উদ্যোগ বা সহায়তা ব্যাতিত কোন কাজই বাধাবিঘ্ন ছাড়া নির্ঝঞ্ঝাট সমাধা করা সম্ভব হয় না। সেজন্য রাষ্ট্রযন্ত্রকে অবশ্যই সহযোগী হতে হবে। আর ইসলামী শরিয়তে রাষ্ট্রের জন্য এটা আবশ্যিক কর্তব্য।
৩. আধ্যাত্মিকভাবে চাহিদা পূরণ
ষাটোর্ধ জীবনে এসে একজন নারী বা একজন পুরুষের সবচেয়ে কষ্টের জায়গা হচ্ছে, তারা এক সময়ের সার্বক্ষণিক সঙ্গীদের হারাতে শুরু করে। স্যোলম্যাটদের একের পর এক মৃত্যু তাদের জীবনে একাকিত্বের ও নিরাশার প্রভাব সৃষ্টি করে। রুহের খোরাক হিসেবে যদি তখন আধ্যাত্মিকতা বা খোদার দরবার খুঁজে না পায় তাহলে সে এই বয়সের জীবনকে উপভোগের পরিবর্তে বসে বসে মৃত্যুর অপেক্ষা করছে যেন। পক্ষান্তরে আধ্যাত্মিকতা তাদের রুহে খোরাক হিসেবে জীবনে আশার আলো সঞ্চারিত করার ক্ষমতা রাখে। এক কথায়, ধর্মকর্ম ও সহজাত প্রকৃতির দাবি মোতাবেক এরকম ব্যথিত মূহুর্তে তাদেরকে স্বান্তনার আশ্রয় দেয়ার মতো কেউ থাকে না। তাই এমন একজনকে খুঁজে নিতে হয় যে তার দুঃখে প্রলেপ দিতে পারে। তিনিই হচ্ছেন রব্বুল আলামিন; আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআ’লা।
৪. মানসিক ও মনস্তাত্ত্বিক চাহিদা পূরণ
ষাটোর্ধ্ব বয়সের নারী-পুরুষের প্রতি আমাদের কর্তব্যও কী?
ছেলেমেয়েরা তাদের যত্নআত্তি করুক— এটাই তাদের শেষ বয়সের সবচেয়ে বড় চাওয়া। কিন্তু ‘শহুরে জীবনের যান্ত্রিক মানুষ’ আমরা এটা করছি না। ঢেউ লেগেছে পশ্চিমের। ধীরে ধীরে সামাজিক বন্ধনের ভাঙনে তার অনুপস্থিতির জায়গা দখল করে নিচ্ছে আরেক সংস্কৃতি। আমাদের জন্য আবশ্যক হচ্ছে, তাদের প্রতি দয়াদ্র হওয়া, তাদের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়া। তাদের জরুরত পূরণ করা। তাদের সাথে খোশগল্পে সময় কাটানো। আড্ডা, সহমর্মিতা ও চারপাশের ভালোবাসা তাদের একাকিত্ব দূর করণে খুব বড় ভূমিকা পালন করে থাকে।
৫. ছেলের বউ সমস্যা
ছাড় না দেয়ার মানসিকতা ও একচ্ছত্র নিয়ন্ত্রণ প্রশ্ন থেকেই এই সমস্যার সৃষ্টি। এটা উভয় পক্ষেরই ক্ষতি করে। শেষ বয়সী এসব শ্বশুর-শ্বাশুরীর যদি ক্ষমতা থাকে, আর্থিকভাবে স্বনির্ভর হয় আর মানসিকতা মন্দ হয়, তাহলে ছেলের বউ সহ ছেলের প্রতি তারা এক প্রকার জুলুম করে থাকেন। আর বাবা-মা যদি সক্ষম না হোন, তবুও জুলুম করেন তখন নিঃশর্তে ছেলে তাকে বউ থেকে আলাদা করে দেয়া। অথবা কোন কারণ ছাড়াই আলাদা করে দেয়। ওপরের একটাও উচিত না। দরকার ছিল, সবার মাঝে সম্পর্ক দৃঢ় করা। সুতরাং সহমর্মিতার চর্চা ব্যতিত কোন কিছুই সম্ভব নয়।
অবিবাহিত নারী-পুরুষ; সমাজের বৃত্তেরই একটি অংশ।
বিবাহ ও ভালোবাসাকে অতটা গুরুত্বপূর্ণ হিশেবে হয়তো তারা কখনো নেননি। কিংবা নানান জটিলতা তাদেরকে এই জটিলতা (?) থেকে বিরত রেখেছে। ষাটোর্ধ্ব বয়সে এসে বাংলাদেশের সমাজে তাদের হালচাল কেমন এই মূহুর্তে সার্ভে করে দেখলে আমরা যা পাই— তারা অন্য সবার মতোই আছেন বা কিছু কিছু ক্ষেত্রে আর্থিকভাবে আরও সুখি আছেন। কারণ, তারা ক্যারিয়ারের পুরোটা সময় ব্যায় করেছেন অর্থোপার্জনের পেছনে। একটু খেয়াল করলে দেখবেন, আমাদের দেশে অর্থকড়ি আসে বয়স একটু বাড়লে। যারা বিয়েই করেন স্ট্যাবলিশড হয়ে তাদের বয়সটা দেখুন। আর যারা বিয়েই করেন না তাদেরটা বিবেচনা করুন।
সংরক্ষিত নারী আসনে সংসদ সদস্য রুমিন ফারহানা এক প্রশ্ন ধরে বলছিলেন, ‘না, আমার একাকিত্ব অনুভব হয় না। নেটফ্লিক্স আছে, বন্ধু-বান্ধব, মা আছেন। সময় কেটে যায়।’ যদিও তার বয়স চল্লিশ। তারা একাকিত্বে অভ্যস্ত। আর এই অভ্যস্ততা তাদের খুব কমই সমস্যায় ফেলে। পশ্চিমাদের ব্যাপারটাও এরকম। তাদের একাকিত্ব অনুভব হয় না৷ কারণ, এভাবেই তারা জীবনযাপনে অভ্যস্ত।
হিজড়া সম্প্রদায়ের ষাটোর্ধ্ব জীবন কেমন
নারী পুরুষের যেকোন এক দিকে বেশি যারা তাদের জৈবিক চাহিদা পূরণ করতে হয়, সে হিশেবে তাদের ব্যাপারে আলাপটা শুরু থেকে করতে হয়। তাদের সামাজিক মর্যাদার বাস্তবিক ও প্রায়োগিক স্বীকৃতি স্থাপন না করা পর্যন্ত তাদের ষাটোর্ধ্ব জীবনের ভালোবাসা ও একাকিত্ব নিয়ে আলাপ করাটা জটিল। কারণ, তাদের আলোচনাই মৌলিকভাবে করা হচ্ছে যারা একটা সময় সম্মিলিত জীবনযাপনের পরে এসে হুট করেই যেন একা পড়ে গেছেন, তাদের ওই আগের ও পরের জীবনের তুলনামূলক চালচিত্র নিয়ে।
তবে একটা নোক্তা বলে রাখি—
১— নারী বা পুরুষ এই ক্যাটাগরিতে যারা পড়ছেন তাদের বিবাহের ব্যবস্থা করা। তাহলে এই ধারাবাহিকতায় সব কিছুই স্বভাবিকতা পাবে।
ষাটোর্ধ্ব নারী-পুরুষ যা চায়
১. তাদের কৃতিত্বের স্বীকৃতি চায় তারা। তাই, তারা কিছুই বুঝে না, এটা বলে তাদের কষ্ট দেয়া অনুচিত।
২. আসলে এই বয়সে এসে ‘প্রথম’ অনেক কিছু পিছে স্মৃতির আড়ালে পড়ে থাকলেও এখনও অনেক ‘প্রথম’ কিছুর বাকি পড়ে আছে। সেজন্য, তারা কখনোই নিজেদের বুড়ো মনে করেন না। আমাদের দায়িত্ব, তাদেরকে এটা মনে করতে না দেয়া, তারা বয়ষ্ক।
৩. ষাটোর্ধ্বদের বিভিন্ন জিজ্ঞাসার মাঝে একটি কমন উত্তর এটা ছিল, এই দীর্ঘ সময়ে আমরা খুব দেখেছি, খুব শিখেছি। এক কথায় অভিজ্ঞতার ঝুলি সমৃদ্ধ হয়েছে খুব। তারা চায় যুবকরা তাদের অবহেলা না করুক। তাদের সৃষ্টিকে ছুঁয়েই আজ এত বড় হয়েছি আমরা- এই মানসিকতা নিয়ে তাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাক।
৪. অনেক ষাটোর্ধ্বই পরামর্শ দিয়েছেন, নিজ পরিবারের সবার সাথে সুসম্পর্ক তৈরী করা জরুরি। তারা চান, আমরা তাদের দেখাশুনা করি। তাদের খোঁজখবর রাখি।
কুরআন নবীর ভাষায় আমাদের শেখাচ্ছে, ‘বলুন, হে আমার রব, আমার পিতা মাতাকে দয়া করুন যেভাবে তারা আমার প্রতি শিশুকালে দয়া করেছেন।’ খুব সুক্ষ্ম একটি বিষয়— পিতামাতা’র কাছে সন্তান বৃদ্ধ বয়সেও শিশু। তাই, তাদের দয়া ও দোয়া সন্তানের প্রতি সব সময়ই রয়েছে।
হাদিসে এসেছে— ‘বরকত ও সুখ তোমাদের বৃদ্ধদের কাছে পাবে।’
‘সে আমাদের দলভুক্ত নয়, যে বড়দের শ্রদ্ধা করে না, ছোটদের স্নেহ করে না। —তিরমিজি শরিফ
নবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, জিবরাইল আমাকে বলেছে, বৃদ্ধদের সব সময় অগ্রাধিকার দিন।— আবু দাউদ শরীফ
আমাদের উচিত স্ব স্ব অবস্থান থেকে সকল মুরুব্বিদের প্রতি সম্মান, শ্রদ্ধা, ভালোবাসা, সহমর্মিতা, সৌহার্দ্য প্রদর্শন পূর্বক তাদের একাকিত্ব ও টানাপোড়েন দূর করা। সকল ধর্ম ও মতের সহাবস্থানকে ইসলামের সার্বজনীন দৃষ্টিভঙ্গিতে পাঠপূর্বক তাদের সবার প্রতি আমাদের সর্বোচ্চ শ্রম ব্যয় করা। এবং সচেতনতার বার্তা ছড়িয়ে দেয়া। আল্লাহ আমাদের সহায় হোন।