অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ভ্যাকসিন পেতে প্রস্তুত বাংলাদেশ!

ফাতেহ ডেস্ক:

অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের তৈরি করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিনের জন্য ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউটের সঙ্গে ত্রিপক্ষীয় চুক্তি করেছে বাংলাদেশ। চুক্তি অনুযায়ী প্রথম দফায় বাংলাদেশ ৩ কোটি ডোজ ভ্যাকসিন আনবে। অগ্রাধিকার ভিত্তিতে প্রথম দিকে যাতে ভ্যাকসিন আনা যায় সেই পরিকল্পনায় এগোচ্ছে সরকার। এরেইমধ্যে সরকারের টিকা কেনার আর্থিক প্রস্তুতি শুরু হয়েছে।

জানা গেছে, প্রথম দফায় ভ্যাকসিন আনতে বাংলাদেশকে পরিশোধ করতে হবে প্রায় আড়াই হাজার কোটি টাকা। ভ্যাকিসেনর প্রতি ডোজে খরচ পড়বে ৪ ডলার অর্থাৎ বাংলাদেশি মুদ্রায় ৩৩৯ টাকা। বিক্রি হবে ৫ ডলারে বা ৪২৩ টাকায়। ভ্যাকসিন জনসাধারণকে বিনা পয়সাও দেওয়া হতে পারে। তবে এ বিষয়ে এখনও কোন চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়নি সরকার।

দেশের সাড়ে ১৬ কোটি মানুষের ভ্যাকসিন কিনতে প্রয়োজন হবে প্রায় ১৪ হাজার কোটি টাকা। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় অর্থ বিভাগের কাছে ভ্যাকসিনের জন্য এক হাজার ২৭১ কোটি টাকা চেয়েছে। সোমবার (১৭ নভেম্বর) ভ্যাকসিন কিনতে ৬৩৫ কোটি টাকা ছাড় করেছে অর্থ বিভাগ। চলতি ২০২০-২১ অর্থবছরে করোনা মোকাবিলা বাজেটে বরাদ্দ রাখা হয়েছে ১০ হাজার কোটি টাকা। অন্যদিকে উন্নয়ন সহযোগীরা ভ্যাকসিন কিনতে ৮ হাজার ৫০০ কোটি টাকা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।

অর্থ বরাদ্দের বিষয়ে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব মো. আবদুল মান্নান জানান, যে অর্থ ছাড় করা হয়েছে তা প্রাথমিক লট। পর্যায়ক্রমে বাকি অর্থ ছাড় করা হবে বলে জানান তিনি।

এদিকে করোনাকালীন সংকটে সরকারের রাজস্ব কমে গেছে। তাই ভ্যাকসিনের অর্থ যোগান নিয়ে কিছুটা সংশয় সৃষ্টি হয়েছে। তবে সরকার ভ্যাকসিনের অর্থ জোগাড় করতে নিজেদের অবস্থান থেকে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। দেশের সাড়ে ১৬ কোটি মানুষের জন্য ভ্যাকসিন নিশ্চিত করতে উন্নয়ন সহযোগীদের সাথে দেনদরবার চালিযে যাচ্ছে সরকার। অক্টোবরে ভার্চুয়ালি অনুষ্ঠিত বিশ্বব্যাংক ও আইএমএফের বার্ষিক সভায় অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল ভ্যাকসিন প্রাপ্তি নিশ্চিত করতে উন্নয়ন সহযোগীদের বারবার অনুরোধ করেছেন।

মরণঘাতী করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে একযোগে কাজ করছে গোটা বিশ্ব। এর ভ্যাকসিন তৈরির লক্ষ্যে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের বিজ্ঞানীরা দিন-রাত খেটে চলেছেন। এ দৌড়ে সবচেয়ে এগিয়ে চীন, যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়াসহ আরও কয়েকটি দেশ। ইতিমধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের ওষুধ প্রস্তুতকারক কোম্পানি ফাইজার ও মর্ডানা চূড়ান্ত পরীক্ষায় তাদের ভ্যাকসিন ৯০ ও ৯৫ ভাগ কার্য়কর বলে দাবি করেছে। চলতি বছরের শেষে তারা বাজারে ভ্যাকসিন আনতে পারে। অন্যদিকে আশা করা হচ্ছে যুক্তরাজ্যের অক্সফোর্ডের আবিষ্কৃত ভ্যাকসিন আগামী মাসের মধ্যে বাজারে আসবে। সে ভ্যাকসিনই অগ্রাধিকার ভিত্তিতে পাওয়ার চেষ্টা করছে বাংলাদেশ।

ভ্যাকসিন প্রাপ্তির বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)-এর দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের সাবেক উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. মোজাহেরুল হক বলেন, নিয়ম অনুযায়ী প্রতিটি দেশের ২০ শতাংশ মানুষ অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ভ্যাকসিন পাবে। এ ক্ষেত্রে ফ্রন্টলাইনার হিসেবে পাবেন স্বাস্থ্যকর্মীরা। দরিদ্র দেশগুলোর জিএভিআইর অর্থায়নের মাধ্যমে ভ্যাকসিন পাওয়ার সুযোগ রয়েছে, যা থেকে বাংলাদেশও এ সুবিধা পাবে।

আগের সংবাদরিজভী আবারও হাসপাতালে
পরবর্তি সংবাদ‘বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য নিয়ে ইসলামি সংগঠনগুলোর আপত্তি পর্যবেক্ষণ করছি’