বাইশের ধর্মীয় ইস্যু: আলোচিত যত ঘটনা

মুনশী নাঈম:

নানা ঘটনা ও উপঘটনায় সরব ছিল দুই হাজার বাইশ। ঝিমিয়ে পড়া সময় যায়নি, কোনো না কোনো ইস্যুতে, কোনো না কোনো আন্দোলনে জেগে ছিল বাংলাদেশ। বিশেষ করে বাংলাদেশের ইসলামি অঙ্গন। অন্যান্য বছরের চেয়ে এবারের বাইশ যেন একটু ভিন্ন, একটু অনন্য। এই ফিচারে দুই হাজার উনিশের গুরুত্বপূর্ণ ১৫ ঘটনার দিকে ফিরে তাকিয়েছি আমরা। নীচে তার বৃত্তান্ত রইলো।

১. বাইতুল মোকাররমের খতিব নিয়োগ

৩১ মার্চ জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের খতিব পদে নিয়োগ দেয়া হয় মোজাহেদে আজম আল্লামা শামছুল হক ফরিদপুরী ছদর ছাহেব রহ.-এর ছাহেবজাদা ও গোপালগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী গওহরডাঙ্গা মাদরাসার প্রিন্সিপাল মুফতি রুহুল আমীনকে। বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের প্রাক্তন খতিব প্রফেসর মাওলানা সালাহ উদ্দিন ৩ ফেব্রুয়ারি ইন্তেকাল করলে খতিবের পদটি শূন্য হয়ে যায়।

কে হচ্ছেন বাইতুল মোকাররমের খতিব, এই নিয়ে বেশ আলোচনা চলছিল। আলোচনায় ছিল মাওলানা মাহমুদুল হাসান, মাওলানা ফরিদ উদ্দিন মাসউদ, মাওলানা উবায়দুর রহমান খান নদভি, মুফতি ড. ওয়ালীউর রহমান খান নদভী, মাওলানা আতাউল্লাহ হাফেজ্জী, মাওলানা সাজিদুর রহমান এবং মাওলানা রুহুল আমিন সহ আরও কয়েকজনের নাম। অবশেষে অনেক আলোচনার পর মুফতি রুহুল আমীনকে খতিব পদে নিয়োগ দেয়া হয়। বছরের শুরুতে বাইতুল মোকাররমের খতিব নিয়োগের বিষয়টি ছিল আলোচনার শীর্ষে।

২. গণকমিশনের শ্বেতপত্র, দুদকের তদন্ত

১২ মার্চ ‘বাংলাদেশে মৌলবাদী সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাসের ২০০০ দিন’ শীর্ষক শ্বেতপত্র প্রকাশ করে গণকমিশন। এতে ১১৬ আলেমের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ এনে দুদককে তদন্ত করতে বলা হয়।

তালিকায় যাদের নাম ছিল:

১. মাওলানা নূরুল ইসলাম ওলিপুরী, ২. মাওলানা সাজিদুর রহমান, ৩. মুফতি রেজাউল করিম, ৪. মুফতি সৈয়দ ফয়জুল করিম, ৫. মাওলানা খোরশেদ আলম কাসেমী, ৬. মাওলানা আবুল কালাম আজাদ (বাশার), ৭. মাওলানা জুনায়েদ আল হাবিব, ৮. মুফতি দিলওয়ার হোসাইন সাইফী, ৯. মাওলানা সাইয়্যেদ কামাল উদ্দিন জাফরী, ১০. মাওলানা মাহমুদুল হাসান ভূজপুরী, ১১. মাওলানা মাহমুদুল হাসান ফতেহপুরী, ১২. মাওলানা মুহিব খান, ১৩. মুফতি সাঈদ আহমদ কলরব, ১৪. মুফতি দিলাওয়ার হোসাইন, ১৫. মাওলানা গিয়াস উদ্দিন তাহেরী, ১৬. মাওলানা আব্দুর রহিম বিপ্লবী, ১৭. মাওলানা আরিফ বিল্লাহ, ১৮. মাওলানা বজলুর রশিদ, ১৯. মুফতি নাজিবুল্লাহ আফসারী, ২০. মাওলানা ওয়াসেক বিল্লাহ নোমানী, ২১. মুফতি নূর হোসেন নুরানী, ২২. মুফতি কাজী ইব্রাহিম, ২৩. মাওলানা গোলাম রাব্বানী, ২৪. মাওলানা মুজাফফর বিন মহসিন, ২৫. মাওলানা মোস্তফা মাহবুবুল আলম, ২৬. মাওলানা মাহমুদুল হাসান গুনবি, ২৭. মাওলানা শায়েখ সিফাত হাসান, ২৮. মাওলানা মোহাম্মদ রাকিব ইবনে সিরাজ, ২৯. মাওলানা ফয়সাল আহমদ হেলাল, ৩০. মাওলানা মতিউর রহমান মাদানী, ৩১. মাওলানা মুজিবুর রহমান, ৩২. মাওলানা খালেদ সাইফুল্লাহ আইয়ুবী, ৩৩. মাওলানা হাফিজুর রহমান ছিদ্দীকী, ৩৪. মাওলানা আজিজুল ইসলাম জালালী, ৩৫. মাওলানা মেরাজুল হক কাসেমী, ৩৬. মুফতি মুহসিনুল করিম, ৩৭. মাওলানা আব্দুল বাসেত খান, ৩৮. মাওলানা আবদুল খালেক সাহেব শরিয়তপুরী, ৩৯. মুফতি মাহমুদ উল্লাহ আতিকী, ৪০. মুফতি উসমান গণি মুছাপুরী, ৪১. মাওলানা আবু নাঈম মুহাম্মাদ তানভীর, ৪২. মুফতি শিহাবুদ্দীন, ৪৩. মুফতি মুসতাঈন বিল্লাহ আল-উসওয়ায়ী, ৪৪. মাওলানা আশরাফ আলী হরষপুরী, ৪৫. মাওলানা জাকারিয়া, ৪৬. মুফতি আমজাদ হোসাইন আশরাফী, ৪৭. মুফতি আনোয়ার হোসাইন চিশতী, ৪৮. মাওলানা আতিকুল্লাহ, ৪৯. মাওলানা বশির আহমদ, ৫০. মাওলানা সিরাজুল ইসলাম মিরপুরী, ৫১. মাওলানা রিজওয়ান রফিকী, ৫২. মাওলানা আবরারুল হক হাতেমী, ৫৩. মাওলানা রাফি বিন মুনির, ৫৪. মাওলানা আনোয়ারুল ইসলাম জাবেরী, ৫৫. মাওলানা মোতাসিম বিল্লাহ আতিকী, ৫৬. মুফতি শেখ হামিদুর রহমান সাইফী, ৫৭. মাওলানা আজহারুল ইসলাম আজমী, ৫৮. মাওলানা কামাল উদ্দিন দায়েমী, ৫৯. মাওলানা কামাল উদ্দিন কাসেমী, ৬০. মাওলানা মুফতি রুহুল আমিন নুরী, ৬১. মাওলানা মাজহারুল ইসলাম মাজহারী, ৬২. মাওলানা মাহমুদুল হাসান ফেরদাউস, ৬৩. মুফতি এহসানুল হক জিলানী, ৬৪. মাওলানা মাহবুবুর রহমান জিহাদি, ৬৫. মুফতি আব্দুল হক, ৬৬. মুফতি শাহিদুর রহমান মাহমুদাবাদী, ৬৭. মাওলানা ইসমাঈল বুখারী, ৬৮. মাওলানা জয়নুল আবেদীন হাবিবী, ৬৯. মাওলানা ইউসুফ বিন এনাম, ৭০. মাওলানা শাববীর আহমদ উসমানী, ৭১. মুফতি জাহিদুল ইসলাম যায়েদ, ৭২. মাওলানা আব্দুল কাইয়ুম জামী, ৭৩. মাওলানা আবুল কালাম আজাদ, ৭৪. মাওলানা ইসমাইল হোসাইন, ৭৫. মুফতি আব্দুর রহিম হেলালী, ৭৬. মুফতি ওমর ফারুক যুক্তিবাদী, ৭৭. মাওলানা মুশাহিদ আহমদ উজিরপুরী, ৭৮. মাওলানা কাজিম উদ্দীন (অন্ধ হাফেজ), ৭৯. মাওলানা ফেরদাউসুর রহমান, ৮০. মুফতি হারুনুর রশিদ, ৮১. মাওলানা আবুল কাসেম, ৮২. মুফতি ওয়ালী উল্লাহ, ৮৩. মাওলানা আবু নাঈম মুহাম্মাদ তানভীর, ৮৪. মাওলানা জাকারিয়া নাটোর, ৮৫. মাওলানা আবুল হাসান (সাদী), ৮৬. মুফতি রুহুল আমিন নুরী, ৮৭. মুফতি মামুনুর রশিদ কামালী, ৮৮. মাওলানা আবদুল কালাম আজাদ, ৮৯. মাওলানা ডা. সিরাজুল ইসলাম সিরাজী (নওমুসলিম), ৯০. মাওলানা শামসুল হক যশোরী (নওমুসলিম), ৯১. মুফতি হাবিবুর রহমান মিসবাহ, ৯২. মাওলানা মুফতি ওলিউল্লাহ, ৯৩. মাওলানা বেলাল হুসাইন ফারুকী, ৯৪. মুফতি ওমর ফারুক যুক্তিবাদী, ৯৫. মাওলানা আমির হামজা, ৯৬. মাওলানা মিজানুর রহমান আযহারী, ৯৭. মাওলানা তারেক মনোয়ার, ৯৮. মাওলানা আব্দুল হালিম বোখারী, ৯৯. মাওলানা আতাউল্লাহ হাদেমী, ১০০. মাওলানা আ ফ ম খালিদ হোসেন, ১০১. মাওলানা মামুনুল হক, ১০২. মুজিবুর রহমান হামিদী, ১০৩. মাওলানা মুশতাকুন্নবী, ১০৪. মাওলানা সালাহ উদ্দীন নানুপুরী, ১০৫. মাওলানা কুতুব উদ্দীন নানুপুরী, ১০৬. মাওলানা বেলাল উদ্দীন, ১০৭. মাওলানা রফিকুল ইসলাম মাদানী, ১০৮. মাওলানা রুহুল আমিন যুক্তিবাদী, ১০৯. মাওলানা আবুল কালাম বয়ানী, ১১০. মাওলানা রফিকুল্লাহ আফসারী, ১১১. মাওলানা আব্দুল্লাহ আল-আমিন, ১১২. মাওলানা মোয়াজ্জেম হোসাইন সাইফী, ১১৩. মাওলানা আলাউদ্দীন জিহাদি, ১১৪. মাওলানা আবু বকর মোহাম্মদ জাকারিয়া, ১১৫. জৈনপুরী সিলসিলার মাওলানা এনায়েতুল্লাহ আব্বাসী এবং ১১৬. মাওলানা মাহবুবুর রহমান জৈনপুরী।

তবে এ তালিকার বিরুদ্ধে সম্মিলিতভাবে প্রতিবাদ জানান আলেমরা। তর্কে-বিতর্কে উত্তপ্ত থাকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম। বিভিন্ন বিতর্কের পর ষরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এ তালিকার কোনো ভিত্তি নেই। দুদকও তদন্ত করা থেকে সরে আসে। এটি ছিল ২০২২ সালের আলোচিত ঘটনাগুলোর অন্যতম একটি।

৩. জনশুমারি: দেশে মুসলিম জনসংখ্যা বেড়েছে

আলোচনায় ছিল চলতি বছর দেশের সর্বশেষ জনশুমারির প্রসঙ্গও। জনশুমারিতে দেখা যায়, দেশে ইসলাম ধর্মাবলম্বী জনসংখ্যা এক দশকে বেড়েছে ০ দশমিক ৩৯ শতাংশ। একই সময়ে কমেছে অন্য ধর্মাবলম্বী জনসংখ্যা। ২০২২ এর জনশুমারি অনুযায়ী, দেশের জনসংখ্যার ৯১ দশমিক ০৪ শতাংশ মুসলমান, ৭ দশমিক ৯৫ শতাংশ হিন্দু, ০ দশমিক ৬২ শতাংশ বৌদ্ধ, ০ দশমিক ৩০ শতাংশ খ্রিস্টান এবং অন্যান্য ০ দশমিক ১২ শতাংশ। অন্যদিকে ২০১১ সালে এই হার ছিল যথাক্রমে ৯০ দশমিক ৩৯ শতাংশ, ৮ দশমিক ৫৪ শতাংশ, ০ দশমিক ৬২ শতাংশ, ০ দশমিক ৩১ শতাংশ ও ০ দশমিক ১৪ শতাংশ।

দেশে হিন্দুদের জনসংখ্যার হার কমা এবং মুসলিম জনসংখ্যার হার বাড়া নিয়ে একটি বিতর্ক তৈরী হয়। কিছুদিন আলোচনায় ছিল এটিও।

৪. সিলেটে আলেমদের ত্রাণ বিতরণ

চলতি বছরের জুনে দেশের সিলেট, সুনামগঞ্জ, নেত্রকোনা ও কুড়িগ্রামে আকস্মিক ও ভয়াবহ বন্যা দেখা দিলে বন্যার্ত মানুষের জন্য যারা কাজ করেছে তাদের ভেতর আলেমসমাজের ভূমিকা ছিল অগ্রগণ্য। সংকটের প্রথম দিন থেকে তাঁরা মাঠে থেকে কাজ করেছেন। সঙ্কটাপন্ন মানুষের পাশে আলেমদের দাঁড়ানোর বিষয়টি সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্যাপক প্রশংসা কুড়িয়েছে। অন্যদিকে এবারের ত্রাণ কার্যক্রমে কথায় কথায় আলেম সমাজের সমালোচনা করা, তাদের চরমপন্থী হিসেবে উপস্থাপনকারী সেকুলারদের দেখা মেলে নি। এ নিয়েও ক্ষোভ জানিয়েছেন নেটিজেনরা।

এরমধ্যে আস সুন্নাহ ট্রাস্ট-এর উদ্যোগে সাড়ে ৬ কোটি টাকার ত্রাণ বিতরণ এবং আস সুন্নাহ ফাউন্ডেশনের দশ কোটি টাকার ত্রাণ বিতরণ নজর কাড়ে দেশের আপামর জনতার। ত্রাণ বিতরণ করে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামি, খেলাফত মজলিশ, চরমোনাই পীরের ইসলামি আন্দোলন, ইসলামি ঐক্যজোট, পিসব। এছাড়াও বিভিন্ন সংগঠন, মাদরাসা, ব্যক্তি উদ্যোগে ত্রাণ বিতরণ করা হয়।

৫. ওয়াজ মাহফিলে জুতা নিক্ষেপ

কিশোরগঞ্জ-২ (কটিয়াদী-পাকুন্দিয়া) আসনে বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য মেজর (অব.) আক্তারুজ্জামান রঞ্জনকে ওয়াজ মাহফিলে জুতা নিক্ষেপের ঘটনাটি সামাজিক যোগযোগমাধ্যমে আলোচিত ছিল বেশ। ৩০ অক্টোবর কিশোরগঞ্জের কটিয়াদীতে একটি ওয়াজ মাহফিলে মুফতি আরিফ বিন হাবীবকে আসম্মান করায় এ ঘটনা ঘটে।

মুফতী আরিফ বিন হাবীব পবিত্র কুরআন ও সহিহ্ হাদিসের প্রমাণ দিয়ে কিছু জাল হাদিস এবং বহুল প্রসিদ্ধ কিছু ভুল তথ্য নিয়ে গঠনমূলক বয়ান করেন মাহফিলে। বয়ান শেষে সাবেক সংসদ সদস্য আক্তারুজ্জামান রঞ্জন মাইক হাতে নিয়ে অসম্মানজনকভাবে এই বয়ানের বিষয়ে আপত্তি তোলেন। একপর্যায়ে উপস্থিত জনতা তার প্রতি ক্ষিপ্ত হয়ে জুতা নিক্ষেপ করা শুরু করেন।

তবে এ ঘটনায় পরে ক্ষমা চেয়েছেন আক্তারুজ্জামান রঞ্জন। ফেসবুক লাইভে এসে তিনি বলেন, ‘আমার কোনো বক্তব্য ও ভুল-ভ্রান্তি যদি আপনাদের মনোপীড়ার কারণ হয়ে থাকে, যে কারণে আপনারা কষ্ট পেয়ে আমাকে যে গালিগালাজ করেছেন—তার জন্য আমার কোনো অভিযোগ নাই। আপনাদের কথা আমি মাথা পেতে নিলাম। আমি যদি আপনাদের কষ্ট দিয়ে থাকি, আমার কথায় আপনারা যদি কষ্ট পেয়ে থাকেন, মনে আঘাত পেয়ে থাকেন, আমি আপনাদের সবার কাছে আন্তরিকভাবে ক্ষমা চাচ্ছি।’

৬. হেফাজতের উলামা সম্মেলন

১৭ ডিসেম্বর রাজধানীর কাজী বশির মিলনায়তনে হেফাজতের জাতীয় ওলামা মাশায়েখ সম্মেলনও ছিল আলোচনায়। সম্মেলন থেকে ৭ দফা দাবি জানানো হয়। ৭ দফার মধ্যে রয়েছে:

এক. কারাবন্দী হেফাজত নেতা-কর্মীদের মুক্তি দিতে হবে।
দুই. হেফাজতের নামে ২০১৩ সাল থেকে আজ পর্যন্ত হওয়া সব মামলা প্রত্যাহার করতে হবে।
তিন. নবী সা.কে কটূক্তিকারীদের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ শাস্তির বিধান চালু করতে হবে।
চার. কাদিয়ানিদের রাষ্ট্রীয়ভাবে অমুসলিম ঘোষণা করতে হবে।
পাঁচ. জাতীয় শিক্ষানীতিতে ধর্মীয় শিক্ষা বাধ্যতামূলক করতে হবে।
ছয়. জাতীয় শিক্ষা কমিশনে হাইয়াতুল উলিয়ার নেতৃবৃন্দের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে।
সাত. আসন্ন ইজতেমায় দিল্লীর মাওলানা সাদ কান্ধলভিকে বাংলাদেশে আসার অনুমতি প্রদান থেকে সরকারকে বিরত থাকতে হবে।

এছাড়া হেফাজতে ইসলামের পরবর্তী কর্মসূচী বিষয়ে সম্মেলনে জানানো হয়, অনতিবিলম্বে হেফাজতের জেলা-উপজেলা কমিটি পূনর্গঠন করা হবে। জেলায় জেলায় শানে রিসালাত সম্মেলন করা হবে। তাছাড়া ঢাকায় জাতীয় শানে রিসালাত সম্মেলন করা হবে।

৭. হিন্দু থেকে মুসলিম তরুণী

বছরের শেষদিকে ময়মনসিংহে ধর্ম পরিবর্তন করে হিন্দু থেকে মুসলিম হওয়া ফাতেমা রহমানকে নিয়ে আলোচনা ছিল শীর্ষে।

ফাতেমা রহমান গত ৫ ডিসেম্বর ময়মনসিংহের চিফ জুডিশিয়াল মেজিস্ট্রেট আদালতে উপস্থিত হয়ে হিন্দু ধর্ম ত্যাগ করে ইসলাম গ্রহণ করেন। এফিডেভিটে তিনি নিজেকে প্রাপ্ত বয়স্কা উল্লেখ করে কোনো চাপ ছাড়াই নিজের ইচ্ছায় ধর্ম পরিবর্তনের সিদ্ধান্তের কথা জানান। এরপর ঘটনাটি ফাতেমা ওরফে অর্পার পরিবার জানলে তারা ক্ষিপ্ত হন এবং তার ধর্ম পালনে বাধা দেন। ৫ ডিসেম্বর রাতে জাতীয় জরুরি সেবা ‘৯৯৯’ নম্বর থেকে কল পেয়ে কোতয়ালি মডেল থানা পুলিশের একটি টিম রাতেই ফাতেমাকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। এ ঘটনায় সোমবার (২৬ ডিসেম্বর) ফাতেমা ওরফে অর্পাকে ময়মনসিংহের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করা হয়। এ সময় আদালতের বিজ্ঞ বিচারক তার জবানবন্দি নিতে তাকে সেফ হোমে রাখার আদেশ দেন। মামলার পুরো প্রক্রিয়াটিতে ময়মনসিংহের আলেমরা বেশ সক্রিয় ছিলেন।

৮. বেফাকের মহাপরিচালক নিয়োগ

বেফাকের মহাপরিচালক পদে মাওলানা উবায়দুর রহমান খান নদভীর নিয়োগটিও ছিল আলোচনায়। তার নিয়োগে কওমি তরুণরা আশান্বিত হয়। ফেসবুকে অভিনন্দনের জোয়ার বয়ে যায়। কওমি তরুণদের পক্ষ থেকে তার কাছে স্মারকলিপিও দেয়া হয়।

১৬ অক্টোবর রাজধানীর যাত্রাবাড়ীর ভাঙ্গাপ্রেসে বেফাকের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত বৈঠকে মাওলানা উবায়দুর রহমান খান নদভীকে দেশের কওমি মাদরাসাভিত্তিক সর্ববৃহৎ শিক্ষা বোর্ড বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশের মহাপরিচালক হিসেবে নিয়োগের সিদ্ধান্ত হয়। ৬ নভেম্বর থেকে তিনি অফিসে যোগদান করেন। এর আগে ২০২০ সালের ২৩ নভেম্বর বেফাকের মহাপরিচালকের পদ থেকে স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করেন অধ্যাপক মাওলানা জোবায়ের আহমদ চৌধুরী। এরপর থেকে সহকারী মহাপরিচালক মাওলানা মুহাম্মদ জোবায়ের ভারপ্রাপ্ত মহাপরিচালকের দায়িত্ব পালন করছিলেন।

৯. ঢাবিতে হিজাব নিষিদ্ধ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে হিজাব-নিকাবে বাধা ইস্যুতে পুরো বছরই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছিল আলোচনায়। ১৪ সেপ্টেম্বর দ্বিতীয় সেমিস্টারের ভাইভা দিতে যায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) বাংলা ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের এক নারী শিক্ষার্থী। ভাইভা বোর্ডের সদস্যরা চেহারা দেখতে চাইলে পর্দা (নিকাব) করার কারণে ওই শিক্ষার্থী তাতে অসম্মতি জানায়। ফলে ওই শিক্ষার্থীকে ভাইভাতে অনুপস্থিত দেখায় ভাইভা বোর্ড। এবং একই কারণে আগের সেমিস্টারের ভাইভাতে উপস্থিত থেকেও অনুপস্থিত হয় ওই শিক্ষার্থী। পরে এক সংবাদ সম্মেলনে হিজাব পরার স্বাধীনতা চায় শিক্ষার্থীরা। সম্মেলনে প্রকাশিত এক জরিপে বলা হয়, হিজাব-নিকাবের কারণে শিক্ষক, কর্মচারী বা সহপাঠীর বিরূপ মন্তব্যের শিকার হয়েছেন ২১১ জনের মধ্যে ১৪১ জনই।

পত্রিকা এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এ ব্যাপারে লেখালেখি করা হলে উল্টো ১৮.৯.২০২২ তারিখে মৌখিক এবং ৬.১২.২০২২ লিখিত নোটিশ দিয়ে মুখ খুলে পরীক্ষা দেয়াকে বাধ্যতামূলক করে দেয়া হয় ঢাবির বাংলা বিভাগে। পরে বিষয়টির প্রতিবাদ জানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসির কাছে স্মারকলিপি দেয় শিক্ষার্থীরা।

ফাতেহে এক প্রতিবেদনে ঢাবিতে হিজাববিদ্বেষের ভয়াল চিত্র উঠে আসে। তাতে বলা হয়, হিজাব-নিকাব নিয়ে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়তে হয় সমাজবিজ্ঞান অনুষদে। অনুষদের বাংলা বিভাগ, সংস্কৃত বিভাগে ছাত্রীরা হেনস্থা হয় সবচেয়ে বেশি। এছাড়াও লোক প্রশাসন বিভাগ, শিক্ষা ও গবেষণা বিভাগ, টুরিজম এন্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিভাগও রয়েছে এই তালিকায়। এমনকি ইসলামিক এবং আরবি বিভাগেও এমন ঘটনা ঘটে। ছাত্রীরা সবচে বেশি হেনস্থা হন এবং বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়েন ভাইভা বোর্ডে। তারপর পরীক্ষার হলে। এছাড়া ক্লাসরুম এবং প্রেজেন্টেশনেও এমন পরিস্থিতিতে পড়তে হয়। তবে সবচে বেশি সমস্যায় পড়তে হয় ভাইবা বোর্ডে।

১০. কাবিননামায় ‘কুমারি’ শব্দ বাতিল

মুসলিম বিয়ের ক্ষেত্রে কাবিননামার ৫ নম্বর কলামে থাকা ‘কুমারি’ শব্দটি সংবিধান পরিপন্থি এবং তা বাতিল ঘোষণা করে গত ১৭ নভেম্বর পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ করেন হাইকোর্ট। রায়ে বলা হয়েছে, ‘কাবিননামায় কুমারি শব্দ থাকা নারীর জন্য অপমানজনক, বৈষম্যমূলক, পক্ষপাতদুষ্ট এবং সংবিধান ও সিডও সনদের (বৈষম্য বিলোপ সনদ) পরিপন্থি’। এ কারণে ছয় মাসের মধ্যে কাবিননামার ফরম থেকে ‘কুমারি’ শব্দ বাদ দেওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে সরকারকে নির্দেশ দেন উচ্চ আদালত। বিচারপতি নাইমা হায়দার ও বিচারপতি খিজির আহমেদ চৌধুরীর হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় প্রকাশ করেন।

২০১৯ সালের ২৫ আগস্ট বিয়ের কাবিননামার ফরমের পাঁচ নম্বর কলামে কনে কুমারী কি না, এ শব্দ উঠিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। কুমারী শব্দের জায়গায় অবিবাহিত লিখতে বলা হয়। ওই সময় এ বিষয়ে রুলও জারি করেছিলেন আদালত। জারি করা ওই রুল নিষ্পত্তি করে হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট বেঞ্চ এ রায় ঘোষণা করেন।

বেঞ্চের কনিষ্ঠ বিচারপতি খিজির আহমেদ চৌধুরী তার পর্যবেক্ষণে বলেছেন, মুসলিম বিবাহ ও তালাক রেজিস্ট্রেশন আইন ২০০৯ এর রুলসের অধীনে প্রণীত নিকাহনামায় কন্যার ক্ষেত্রে কুমারী কি না কলাম রাখা হয়েছে। কিন্তু একই ফর্মে পুরুষের ক্ষেত্রে এ ধরনের কোনো কলাম নেই, যা সংবিধানের ২৭, ২৮ ও ৩১ অনুচ্ছেদের পরিপন্থি। মুসলিম বিবাহ একটি চুক্তি ও পারস্পরিক সম্মতির মাধ্যমে হয়। এই বিবাহের ক্ষেত্রে পূর্ববর্তী সময়ে রেজিস্ট্রির কোনো বিধান ছিল না। জটিলতা এড়ানোর জন্য ১৯৭৪ সালের মুসলিম বিবাহ ও তালাক রেজিস্ট্রেশন আইনে বিবাহ ও তালাক রেজিস্ট্রির বিধান রাখা হয়েছে। সুতরাং সার্বিক সমন্বয়ের জন্য বর ও কনের সার্বিক অবস্থা সমন্বিতভাবে হওয়া উচিত। এ কারণে কন্যা কুমারী কি না, এই শব্দ বাদ দিয়ে বাকি বর্ণনা বলবৎ থাকবে।

১১. ইসলামি বই প্রকাশে বাধা

ক্রমাগত বেড়ে চলা কাগজের দাম নিয়ে চিন্তিত সারা বছরই চিন্তিত ছিলেন ইসলামি বই প্রকাশকারী প্রতিষ্ঠানগুলো। পুরাতন বইয়ের দাম না বাড়ালেও আপাতত কাগজের দাম না কমা পর্যন্ত নতুন বই প্রকাশ না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন অনেকে। দেশের কাগজের বাজারে বিশ্ববাজারের মন্দার ঢেউ প্রভাব ফেলেছে। কাগজ তৈরির কাঁচামাল অধিক মূল্যে ও বর্ধিত পরিবহন ব্যয়ে দেশে আনায় কাগজ তৈরিতে উৎপাদন খরচ বেড়েছে। এ কারণে কাগজের মূল্যবৃদ্ধি যে মাত্রায় স্বাভাবিক ছিল, তার তুলনায় বাস্তবে অস্বাভাবিক মাত্রায় বেড়েছে। এ বৃদ্ধি ক্ষেত্রবিশেষে দ্বিগুণ বা তারও বেশি হয়েছে।

বাজার বিশ্লেষণে দেখা গেছে, হোয়াইট প্রিন্ট কাগজের দাম টনপ্রতি ছিল ১ লাখ ৩৫ হাজার। সপ্তাহের ব্যবধানে ২৫ হাজার টাকা বেড়ে তা দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ৬০ হাজার টাকায়। প্রতি টন হোয়াইট নিউজপ্রিন্ট কাগজের দাম বেড়েছে ১৫ হাজার টাকা। এ কাগজের দাম ২০ হাজার থেকে বেড়ে এখন বিক্রি হচ্ছে প্রতি টন ১ লাখ ৩৫ হাজার টাকায়। ২০২১ সালে ৮০ গ্রাম অপসেট এক রিম কাগজের মূল্য ১৫০০ টাকা হলেও বর্তমানে দাম বেড়ে তা ৩০০০ টাকা হয়েছে। ১০০ গ্রামের একই কাগজ ১৭৫০ থেকে ৪২০০ টাকা দাঁড়িয়েছে। ২০ বাই ৩০ ইঞ্চি নিউজপ্রিন্ট কাগজের রিম ৩৮০ টাকা থেকে ১০০০ টাকা হয়েছে।

১২. আফটার স্কুল মাকতাব

২৬ নভেম্বর আফটার স্কুল মাকতাবের একটি অনুষ্ঠান বেশ সাড়া ফেলে। স্কুল-কিন্ডারগার্ডেন কিংবা কোচিংয়ে পড়ার কারণে অনেকেই সকালবেলার মাকতাবে যেতে পারে না। নিতে পারে না ধর্মীয় শিক্ষার প্রথম পাঠ। পড়ে উঠতে পারে না কুরআন। স্কুল-কিন্ডারগার্ডেন কিংবা কোচিংয়ের টাইম-শিডিউলে সকালবেলার মাকতাব হারাচ্ছে গুরুত্ব। তাই মাকতাবের ঐতিহ্যবাহী ধর্মীয় শিক্ষায় শিশুদের শিক্ষিত করে তুলতে শুরু হয়েছে আফটার স্কুল মাকতাব। স্কুল ছুটির পর বিকেলে বা সন্ধায় এই মাকতাবে পড়তে পারে শিক্ষার্থীরা।

আফটার স্কুল মাকতাব শাখা সম্পন্ন করে হাফেজ হবার পথে এগুচ্ছে ছাত্ররা। কর্তৃপক্ষের দেয়া তথ্যমতে, ২০ পারা হিফজ করেছেন একজন। ১৫ পারা হিফজ করেছেন একজন৷ পাঁচপারার উপর হিফজ করেছেন ১১ জন। ফজিলতের সূরা, যেমন সূরা ইয়াসিন, ওয়াকেয়া, আর-রহমান, দুখান, কাহাফ ইত্যাদি সূরা হিফজ করেছেন ৩৯জন। ২৬ নভেম্বরের অনুষ্ঠানে কুরআন সবক গ্রহণ করেন আরও ১৫২ জন ছাত্র। চলতি বছর এই মাকতাবের অধীনে কুরআন খতম করেন ৭০ জন শিক্ষার্থী। এছাড়াও গাইবান্ধার একটি স্কুলে এই মাকতাবের কারিকুলামে কুরআনের সবক নিয়েছেন ৩৫০ জন শিক্ষার্থী।

১৩. সাতক্ষীরায় খতিব-লাঞ্ছনা

সালাম না দেয়ায় উপজেলা পরিষদ মসজিদের খতিবকে অপমান-অপদস্থ করেছেন সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রুলী বিশ্বাস। শুধু এতটুকুই নয়, পরে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের এক মিটিং থেকেও তাকে বের করে দেন। এ ঘটনায় জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ওই খতিব।

ঘটনা ঘটে অক্টোবরে। গত ১২ রবিউল আওয়াল মহানবী হযরত মোহাম্মদের সা. জন্ম ও মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষ্যে কীভাবে ধর্মীয় অনুষ্ঠান করা যায় সেটি জানার জন্য গত ৮ অক্টোবর ইউএনও স্যারকে ফোন দেন তিনি। কিন্তু বেখেয়ালে সালাম দিতে ভুলে যান। এতেই ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেন ইউএনও। তিনি রুক্ষ ভাষায় খতিবকে বলেন, আমাকে সালাম করলেন না কেন? আমার স্বাক্ষরে আপনার বেতন হয়। তারপর খতিবকে বেয়াদব বলেও বকাবকি করেন।

একজন ইমামকে অপমান অপদস্ত করায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন দেশের ধর্মীয় সমাজ এবই ইমামরা। তারা এই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার শাস্তিরও দাবি করেন।

১৪. নোয়াখালী গ্রেফতার কাণ্ড

‘ইসলামে মূর্তিপূজা এক ভয়ঙ্কর অপরাধ। অতএব কোনো মুসলমান পূজাকে উইশ করতে পারেনা। পূজায় শুভেচ্ছা জানানো হারাম, স্পষ্ট কুফুরী।’ ফেসবুকে এমন পোস্ট দেয়ায় নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ থেকে ইসলামী যুব আন্দোলন নোয়াখালী জেলা উত্তরের দফতর সম্পাদক ইয়াছিন রুবেলকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তার পোস্টে ধর্মীয় সম্প্রীতি নষ্ট হওয়ার আশঙ্কার অভিযোগ তুলে ১ অক্টোবর সন্ধ্যায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাকে গ্রেফতারের পরই প্রতিবাদে মুখর হয়ে উঠেন দেশের ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা। ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের প্রতিবাদ ও ইসলামী আন্দোলন নোয়াখালী জেলা নেতৃবৃন্দের সহযোগিতায় ৩ অক্টোবর তিনি জামিনে মুক্তি পান।

১৫. মিরপুরে নির্যাতনের ভিডিও ভাইরাল

সেপ্টেম্বরের ঘটনা এটি। এসি বন্ধ করতে দেরী হবার কারণে মসজিদের খাদেমকে নির্যাতন করেছে মসজিদের সভাপতি। ঘটনাটি ঘটেছে মিরপুর ২ নং কাঠালবাগ বাইতুল জান্নাত জামে মসজিদে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া একটি সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, খাদেম আবদুল মতিনকে বিভিন্নভাবে নির্যাতন করছে মসজিদের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আবদুল কাদের। খাদেম রুম থেকে বের হয়ে যেতে চাইলে সভাপতি তাকে ধরে এনে গলা চেপে ধরেন। কখনও দেন কিল, ঘুষি, থাপ্পর।

ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর প্রতিবাদ জানান ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা। তারা বলেন, দেশের আনাচে-কানাচে এমন ঘটনা প্রায়ই ঘটে চলেছে। প্রায় মসজিদের খাদেম-মুআজ্জিনরা এ ঘটনার শিকার। তারা মসজিদের সভাপতি-মুতাওয়াল্লির হাতে সামান্য সামান্য বিষয়ে নির্যাতিত হয়। তাদের চাকরি সভাপতিদের হাতে জিম্মি।

 

আগের সংবাদশিক্ষার্থীদের রাস্তায় দাঁড়িয়ে সংবর্ধনা দেয়া যাবে না
পরবর্তি সংবাদবাইশের মুসলিম বিশ্ব: আলোচিত যত ঘটনা