আলিয়া মাদরাসার স্বতন্ত্র শিক্ষাক্রমের দাবিতে মানববন্ধন

ফাতেহ ডেস্ক:

ডারউইনের বিতর্কিত মতবাদ, হিন্দুত্ববাদ বাদ দিয়ে বাংলাদেশের কৃষ্টি-কালচার, কুরআন-সুন্নাহ ও মুসলিম ঐতিহ্য অক্ষুন্ন রেখে মাদরাসার পাঠ্যপুস্তক প্রণয়নসহ ১৩ দফা দাবিতে সারাদেশে মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়েছে। গতকাল দেশের মাদরাসা শিক্ষকদের সর্ববৃহৎ সংগঠন বাংলাদেশ জমিয়াতুল মোদার্রেছীনের আয়োজনে এই মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়। রাজধানী ঢাকাসহ দেশের সবগুলো জেলায় মাদরাসার শিক্ষক, শিক্ষার্থী এবং ওলামা মাশায়েখ এই কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করেন। একইসাথে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর কাছে ১৩ দফা দাবি সম্বলিত স্মারকলিপিও প্রদান করা হয়।

জমিয়াতুল মোদার্রেছীনের ১৩ দফা দাবিগুলো হল:

১. মাদরাসা শিক্ষার জন্য এ সরকারের প্রণীত ও জাতীয় সংসদে গৃহীত জাতীয় শিক্ষা নীতি-২০১০ এ বর্ণিত মাদরাসা শিক্ষার স্বীকৃতি লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য পূরণের উপযোগী স্বতন্ত্র শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যসূচী এবং পাঠ্যবই, এনসিটিবি, মাদরাসা শিক্ষা বোর্ড ও জমিয়াতুল মোদার্রেছীনের বিজ্ঞ ও বিশেষজ্ঞ আলেমদের সমন্বয়ে প্রণয়ন করার বিকল্প নেই । অনতিবিলম্বে একটি সমন্বিত কমিটি গঠন করে এ কাজ শুরু করতে হবে।

২. দাবীকৃত শিক্ষাক্রম অনুযায়ী পাঠ্যবই প্রণয়নের পূর্বপর্যন্ত প্রচলিত পঠ্যপুস্তকসমূহ পাঠদান অব্যাহত রাখতে হবে।

৩. সাধারণ শিক্ষায় এসএসসি পরীক্ষা দশটি বিষয়ে ১০০০ নম্বরের অনুষ্ঠিত হবে। মাদরাসা শিক্ষার দাখিল পরীক্ষার জন্য মূল বিষয় ঠিক রেখে সমন্বয় সাধন করে ১০০০ নম্বর নির্ধারণ করতে হবে। ৪. বেসরকারি সকল স্তরের শিক্ষক-কর্মচারীগণের চাকুরী জাতীয়করণ করতে হবে।

৫. সংযুক্ত ইবতেদায়ী প্রধান সহ স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদরাসা শিক্ষকদের উপযুক্ত বেতন/ভাতা প্রদান করতে হবে এবং প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ন্যায় স্বতন্ত্র ও সংযুক্ত ইবতেদায়ী শিক্ষার্থীদেরকে উপবৃত্তি, টিফিনসহ সুযোগ সুবিধা প্রদান করতে হবে।

৬. প্রধানমন্ত্রী অনুমোদিত ২০১৮ সালে প্রণিত স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদরাসার নীতিমালা শতভাগ বাস্তবায়ন করতে হবে এবং স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদ্রাসা মঞ্জুরীর ১৪ বছরের অচলাবস্থার অবসান ঘটাতে হবে।

৭. মহিলা কোটা শিথিল ও সংশোধনপূর্বক যোগ্য ও মেধাবী শিক্ষক নিয়োগের ব্যবস্থা করতে হবে।

৮. আরবি প্রভাষকগণের উচ্চতর পদে আসীন হওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে।

৯. অধ্যক্ষ/উপাধ্যক্ষ পদে নিয়োগের ক্ষেত্রে আরবি প্রভাষকদের জন্য পথ উন্মুক্ত করতে হবে।

১০. কামিল পাশ সহকারী মৌলভীদের উচ্চতর স্কেলের ব্যবস্থা করতে হবে।

১১. মাদরাসা শিক্ষকগণের জন্য বিভাগীয় পর্যায়ে প্রশিক্ষণ ইনিস্টিটিউট স্থাপন করতে হবে।

১২. মাদরাসার জনবল কাঠামো ও এমপিও নীতিমালা ২০১৮ (২৩ নভেম্বর ২০২০ পর্যন্ত সংশোধিত) স্কুল ও কলেজের নীতিমালা ২০২১ এর সাথে সমন্বয় করে মাদরাসার অনার্স স্তরের জন্য শিক্ষক-কর্মচারীদের এমপিওভুক্ত করতে হবে।

১৩. প্রায় দুই হাজার শিক্ষকের ইনক্রিমেন্ট কর্তন করা হয়েছে যা অমানবিক। অনতি বিলম্বে বকেয়াসহ প্রাপ্য ইনক্রিমেন্ট প্রদানের ব্যবস্থা করতে হবে।

কেন্দ্র ঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসাবে মানববন্ধন ও প্রধানমন্ত্রী বরাবরে স্মারকলিপি পেশ করেছে জমিয়াতুল মোদার্রেছীন চট্টগ্রাম মহানগর ও জেলা শাখা। গতকাল সোমবার দেশের মাদরাসা শিক্ষকদের একক সংগঠন বাংলাদেশ জমিয়াতুল মোদার্রেছীনের এ কর্মসূচিতে সংগঠনের সর্বস্তরের নেতাকর্মী, শিক্ষক, কর্মচারী ছাড়াও উলামা মাশায়েখগণ শরিক হন। বেলা সাড়ে ১১টায় জমিয়াতুল মোদার্রেছীন নেতারা কোর্ট হিলে চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে স্মারকলিপি পেশ করেন। জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মমিনুর রহমানের অনুপস্থিতিতে তার পক্ষে স্মারকলিপি গ্রহণ করেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) মো. আবু রায়হান দোলন।

আগের সংবাদজি-২০ সম্মেলনে রাশিয়ার যুদ্ধের সমাপ্তি চাইলেন জেলেনস্কি
পরবর্তি সংবাদকওমি মহিলা মাদরাসা: শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য-বিপর্যয়ে শঙ্কায় শিক্ষকরা