
নাসিম ইমরান:
‘জেমস ওয়েব টেলিস্কোপ ৪৬০ কোটি বছর অতীতের ছবি দেখিয়েছে।’
উক্ত বাক্যে কয়েকটি বিষয় রয়েছে। যথা:
১. জেমস ওয়েব টেলিস্কোপ
২. ৪৬০ কোটি বছর
৩. অতীত
৪. ছবি
৫. দেখা
১, ২ ও ৪ নং স্পষ্ট, ব্যাখ্যার প্রয়োজন নেই। টেলিস্কোপ হলো মহাকাশ পর্যবেক্ষণের একটি যন্ত্র। জেমস ওয়েব একটি টেলিস্কোপের নাম যা উক্ত বাক্যে ‘জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপ’ গঠনে উদ্ধৃত। ‘৪৬০ কোটি বছর’ একটি পরিমাপ, যা উক্ত বাক্যে অতীতের পরিমাণ হিসেবে উদ্ধত। আর ‘ছবি’ হলো কোন কিছুর স্থির চিত্র। কিন্তু ৩ ও ৫ ব্যাখ্যা সাপেক্ষ।
প্রথমে আসি দেখায়, আমরা কোন বস্তু কখন দেখি? যখন বস্তুর উপর আলো পড়ে, এবং সে আলো প্রতিফলিত হয়ে আমাদের চোখে এসে পড়ে, তখন সেই সমান্তরাল আলোক রশ্মি চোখের কর্ণিয়ার (কালো রাজা) ভিতর দিয়ে চোখের লেন্স অতিক্রম করার সময় বিভিন্ন কোণে আপতিত হয় এবং বেঁকে গিয়ে বিভিন্ন দিকে চলে যায়। লেন্সের মধ্য দিয়ে এই বেঁকে যাওয়া আলোক রশ্মি আবার চোখের রেটিনার একটি নির্দিষ্ট বিন্দুতে একত্রিত হয়ে বস্তুটির একটি উল্টো প্রতিবিম্ব তৈরি করে সেখানে ফোকাস করে। রেটিনার ওপর আলো পড়লে স্নায়ুর সঙ্গে সংযুক্ত ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র রড ও কোণ কোষগুলো সেই আলো গ্রহণ করে তাকে তড়িৎ প্রেরণায় পরিণত করে। ওই স্নায়ু তড়িৎ প্রেরণাকে তাৎক্ষণিকভাবে অক্ষি স্নায়ুর মাধ্যমে মস্তিষ্কে পাঠায়। মস্তিষ্ক রেটিনায় সৃষ্ট উল্টো প্রতিবিম্বকে পুনরায় উল্টো করে দেয়। ফলে আমরা বস্তুটি যে রকম থাকে সে রকমই দেখি।
এই দেখার জন্য অতি ক্ষুদ্র হলেও কিছু সময়ের প্রয়োজন হয়। এ সময়টা আমরা দুই ভাগে বিভক্ত করতে পারি।
১. আলোক রশ্মি ভ্রমণের সময় যা দুটি স্টেপে সম্পূর্ণ হয়।
ক. বস্তু থেকে আলো প্রতিফলিত হয়ে চোখ পর্যন্ত আসার সময়।
খ. আলোক রশ্মি চোখের কর্ণিয়ার ভিতর দিয়ে রেটিনার নির্দিষ্ট বিন্দু পর্যন্ত আসার সময়।
২. তড়িৎ প্রেরণার স্নায়ু ভ্রমণের সময়, যা রেটিনা থেকে মস্তিষ্ক পর্যন্ত হয়ে থাকে।
এখানে ১ এর খ ও ২ দেহের অভ্যন্তরীণ ব্যপার, তাই বস্তু দূরে কিংবা কাছে হওয়ায় এ দুইয়ের সময়ে তারতম্য হবে না। কিন্তু ১ এর ক, তথা বস্তু থেকে আলো প্রতিফলিত হয়ে চোখ পর্যন্ত আসার সময় কম-বেশি হবে বস্তু দূরে কিংবা কাছে হওয়ার অনুপাতে।
আলোর গতি প্রতি সেকেন্ডে ১ লাখ ৮৬ হাজার মাইল। সে হিসেবে আলো ১ বছরে যে পথ অতিক্রম করে তা ১ আলোক বর্ষ। বস্তুটি যদি ১ লাখ ৮৬ হাজার মাইল দূরে হয় তাহলে সেখান থেকে আলো প্রতিফলিত হয়ে চোখ পর্যন্ত আসতে সময় লাগবে ১ সেকেন্ড। সে ক্ষেত্রে আমরা বস্তুটির ১ সেকেন্ড আগের বা অতীতের অবস্থা দেখবো।
পৃথিবী থেকে সূর্যের গড় দূরত্ব আনুমানিক ১৪.৯৬ কোটি কিলোমিটার। তবে পৃথিবীর কক্ষপথ যেহেতু উপবৃত্তাকার সেহেতু সূর্য থেকে তার দূরত্ব পরিবর্তিত হয়, জানুয়ারি মাসে সে সূর্যের সবচেয়ে কাছে (অনুসূর) আসে এবং জুলাইয়ে সবচেয়ে দূরে (অপসূর) সরে যায়। যাহোক, গড় দূরত্বে সূর্য থেকে আলো পৃথিবীতে আসতে ৮ মিনিট ১৯ সেকেন্ড সময় নেয়। তাই আমরা সাধারণত সূর্যের ৮ মিনিট ১৯ সেকেন্ড অতীতের অবস্থা দেখতে পাই।
একটা মজার হাইপোথিসিস হলো, ধরুন ১৪৫০ আলোক বর্ষ দূরের কোনো একটি গ্রহে এই মুহুর্তে আমাদের চেয়েও উন্নত মস্তিষ্কের কোন প্রাণী আছে। তারা যদি আরো উন্নত কোন টেলিস্কোপ দিয়ে আমাদের পৃথিবীতে নজর দেয় তাহলে তারা এই মুহুর্তে পৃথিবীতে নববী যুগ দেখতে পারবে।
জেমস ওয়েব টেলিস্কোপ যে বস্তুর ছবি দেখিয়েছে সেগুলোর কিছু থেকে আলো আসতে সময় লাগে ৪৬০ কোটি বছর, আর কিছু থেকে ১৩৫০ কোটি বছর তাই আমরা সে বস্তুগুলোর ৪৬০-১৩৫০ কোটি বছর অতীতের অবস্থা দেখছি। এটি একটি সাধারণ ব্যাপার কেননা আমরা প্রতিনিয়ত বস্তুর অতীতের অবস্থাই দেখি কারণ বস্তু থেকে আলো প্রতিফলিত হয়ে চোখে আসতে কিছু সময়তো লাগেই।
বরং প্রশ্ন হয় আমরা কি কখনও বস্তুর বর্তমান অবস্থা দেখতে পাই?
এর উত্তর জানতে আমাদের ব্যাখ্যা করতে হবে উপরিউক্ত বাক্যের ‘অতীত’ শব্দকে। অতীত হলো সময়ের তিন কালের একটি কাল, যথা- অতীত, বর্তমান, ভবিষ্যৎ। সময়কে যদি একটি সরল রেখা মনে করা হয় আর সে সরল রেখার মাঝে একটি ‘বিন্দু’ হলো বর্তমান যা সরল রেখার বাম থেকে ডানে ট্রাভেল করছে, তাহলে সরল রেখার শুরু থেকে বিন্দুর বাম দিক পুরোটা অতীত কাল ‘বিন্দু’ বর্তমান কাল আর বিন্দুর ডান দিক ভবিষ্যৎ কাল।
এইযে ‘বিন্দু’ যাকে বর্তমান কাল ধরা হলো এর পরিমাণ কতটুকু? এর পরিমাণ যদি হয় এক সেকেন্ড তাহলে চলমান সেকেন্ড বর্তমান কাল, এর আগের পুরো সময় অতীত কাল এবং পরবর্তী সেকেন্ড থেকে ভবিষ্যৎ কাল। এবং এ অবস্থায় আমরা ১ লাখ ৮৬ হাজার মাইলের ভিতরের বস্তুর বর্তমান অবস্থা দেখতে পারবো। কেননা আমরা বর্তমান ধরেছি ১ সেকেন্ড এবং ১ সেকেন্ডের মধ্যেই উল্লেখিত রেঞ্জের মধ্য থেকে চোখে আলো আসতে সক্ষম। আর উল্লেখিত রেঞ্জের বাহিরের বস্তুর বর্তমান দেখতে পারবো না বরং অতীত দেখবো।
কিন্তু পুরো সেকেন্ড তো বর্তমান নয়, সেকেন্ডকে ভাঙা সম্ভব। সেকেন্ডকে যদি ১০ ভাগ করা হয়, তাহলে চলমান ভাগ বর্তমান কাল, এর আগের ভাগ পর্যন্ত অতীত কাল এবং পরবর্তী ভাগ থেকে ভবিষ্যৎ কাল। এবং এ অবস্থায় আমরা ১৮৬০০ মাইলের (১ লাখ ৮৬ হাজারের ১০ ভাগের ১ ভাগ) ভিতরের বস্তুর বর্তমান অবস্থা দেখতে পারবো। এ রেঞ্জের বাহিরের বস্তুর বর্তমান দেখতে পারবো না বরং অতীত দেখবো।
বর্তমানের পরিমাণ ১ সেকেন্ড নয় বা ১ সেকেন্ডের ১০ ভাগের ১ ভাগও নয় তাহলে বর্তমানের পরিমাণ কতটুকু? সময়কে যত ক্ষুদ্রাতি ক্ষুদ্র অংশে ভাগ করা সম্ভব তার এক ভাগ পরিমাণ সময় হলো বর্তমান কাল। এখন দেখা যাক সেকেন্ডকে কত ক্ষুদ্র অংশে ভাগ করা যায়।
সেকেন্ডের ভগ্নাংশকে সাধারণত এক দশমাংশ বা এক শতাংশ গণনা করা হয়। বৈজ্ঞানিক কাজে, এক সেকেন্ডের ছোট ছোট ভগ্নাংশকে মিলিসেকেন্ড (১ হাজার ভাগের ১ ভাগ), মাইক্রোসেকেন্ড (১০ লক্ষ ভাগের ১ ভাগ), বা ন্যানোসেকেন্ডে (১০০ কোটি ভাগের ১ ভাগ) গণনা করা হয়, এবং কখনও কখনও এর থেকেও ছোট এককে মাপা হয়। এক সেকেন্ডের খুব ছোট ভগ্নাংশের উদাহরণ হল ১-গিগা হার্জ মাইক্রোপ্রসেসর, যার সময়কাল ১ ন্যানোসেকেন্ড।
শূন্য কেলভিন তাপমাত্রায় একটি অনুত্তেজিত সিজিয়াম ১৩৩ পরমাণুর ৯,১৯২,৬৩১,৭৭০ টি স্পন্দন সম্পন্ন করতে যে সময় লাগে তাকে ১ সেকেন্ড বলে। ১ সেকেন্ডর ৯,১৯২,৬৩১,৭৭০ ভাগের এক ভাগ সময়ে সিজিয়াম ১৩৩ পরমাণুর ১ টি স্পন্দন সম্পন্ন হয়। চলমান স্পন্দন সম্পন্ন করার সময় পরিমাণ বর্তমান, আগের স্পন্দন অতীত, আগত স্পন্দন ভবিষ্যৎ।
আবার সিজিয়াম ১৩৩ পরমাণুর ১ টি স্পন্দন সম্পন্ন করার পরিমাণ সময়ে আলো ৩২৫৬২৮১৮.৫ ন্যানো মিটার জায়গা অতিক্রম করে তাহলে ১ স্পন্দনের ৩২৫৬২৮১৮.৫ ভাগের এক ভাগ সময়ে ১ ন্যানো মিটার জায়গা অতিক্রম করে। ১ ন্যানো মিটার জায়গা অতিক্রম করার সময় পরিমাণ বর্তমান, আগে অতীত ও পরে ভবিষ্যৎ।
মোট কথা ১ সেকেন্ডর ৯,১৯২,৬৩১,৭৭০ ভাগের এক ভাগ, সেই অংশের আবার ৩২৫৬২৮১৮.৫ ভাগের এক ভাগ সময় বর্তমান, এখানেও ভাগ শেষ নয়। তাই বর্তমান সময়ের আসলে কোন অস্তিত্ব আছে কিনা এ ব্যাপারটি অনেকে স্বীকার করেন না। তাঁরা বলেন বর্তমান হলো অতীত ও ভবিষ্যতের মাঝে পার্থক্যকারী একটি পর্দা মাত্র। তাইতো আরবিতে বর্তমান কাল ও ভবিষ্যৎ কাল বোঝাতে এক শব্দই ব্যবহার হয়।
এই যখন বর্তমানের অবস্থা, আমরা কোন কিছুরই বর্তমান দেখি না বরং অতীতই দেখি। নিকটের বস্তুর নিকট অতীত, দূরের বস্তুর দূর অতীত।
জেমস ওয়েব টেলিস্কোপ ৪৬০ কোটি বছর অতীতের ছবি দেখিয়েছে মানে ৪৬০ কোটি আলোক বর্ষ দূরের বস্তুর ছবি দেখিয়েছে। যা এর আগে হবল টেলিস্কোপও দেখিয়েছে।
হাবল টেলিস্কোপের স্পষ্টতা জেমস ওয়েব টেলিস্কোপের থেকে কম, এবং সেটি তুলতে হাবলের অনেক সময় লেগেছিল, কিন্তু জেমস ওয়েবের জ্যোতির্বিদরা তড়িঘড়ি করে একটি ছবি ছাড়লেন, কিন্তু স্পষ্ট করে বললেন না আমরা আসলে কী দেখছি। এমন যেন এটি একটি মণি মানিক্যের ছবি, হীরে জহরত দেখে মুগ্ধ হও, এর বেশি তোমাকে বলে লাভ নেই, তুমি বোধহয় বুঝবে না। আসলেই আমরা বুঝছি না।
জ্যোতির্বিজ্ঞানী দীপেন ভট্টাচার্য কিছু নোকতা উল্লেখ করেন।
১. ছবিটির কেন্দ্রের দিকে দেখবেন কিছু সাদা গ্যালাক্সি জটলা পাকাচ্ছে। এটাকে বলা হচ্ছে SMACS 0723 গ্যালাক্সিদল (cluster)। এটি একটি অখ্যাত গ্যালাক্সিদল – এটি সম্বন্ধে আমাদের কিছুই বলা হয়নি, শুধু জানি এখান থেকে আলো আসতে ৪৬০ কোটি বছর লাগছে।
২. ভালো কথা, তাহলে আবার কেন বলছ এই ছবিতে বহু পুরনো গ্যালাক্সিও (১৩০০ কোটি বছর আগে সৃষ্ট) দেখা যাচ্ছে। কোথায় সেগুলো? কেন সেগুলো হাত দিয়ে দেখিয়ে দিলো না?
৩. যা বুঝতে পারছি কোন গ্যালাক্সিগুলো আরো দূরে সেগুলোকে নিয়ে ওয়েবের জ্যোতির্বিদরা জল্পনা করছেন, তারা মনে হয় ঠিক নিশ্চিত নন। তাহলে আমরাই কিছু জল্পনা করি …
৪. খেয়াল করে দেখুন কেন্দ্রের চারদিকে একটি বৃত্তের পরিধিতে কয়েকটি সরু বক্রাকার গ্যালাক্সি দেখা যাচ্ছে। মহাকর্ষীয় লেন্সিং (gravitational lensing) -এর ফলে একটি পেছনের গ্যালাক্সির আলো তার সামনে কোনো বড় ভর থাকলে সেটির দেশকালের বক্রতা অনুসরণ করে ভরটির সামনে (তার চারদিকে) কয়েকটি বিম্বে বিভক্ত হয়ে যায়। এরকম lensing-এর বহু উদাহরণ আছে। মনে হচ্ছে এরকম অন্তত একটি গ্যালাক্সিকে আমরা দেখছি। NASA কিন্তু lensing নিয়ে কিছুই বলছে না, কিন্তু তারা কি এই lensed গ্যালাক্সির আলোর বয়স ১৩০০ কোটি বলছে? মনে হয় না, কারণ lensed গ্যালাক্সিটি SMACS cluster থেকে খুব পেছনে মনে হয় না।
৫. খেয়াল করুন চিত্রে আরো বক্রাকার গ্যালাক্সি আছে। সেগুলোও কি lensed? মনে হয় না, কিন্তু এর মধ্যে একটা বিভ্রান্তির সৃষ্টি হচ্ছে। মনে হচ্ছে ক্যামেরার lens distortion-এ অনেক গ্যালাক্সিই কেন্দ্রের চারদিকে একটা বক্রাকার পথে সজ্জিত।
৬. তাহলে কোন গ্যালাক্সিটা সবচেয়ে দূরে? এখানে আমাদের অনুমান করতে হবে। বাছতে হবে একটি ম্লান লাল গ্যালাক্সি।
৭. এই ছবিটি আকাশের কতটা অংশ জুড়ে আছে? ওনারা বললেন, একটি বালুকণাকে এক হাত দূরত্বে রাখলে সেটি আমাদের চোখে যে আকার সৃষ্টি করবে আকাশে এই ছবিটির আকার ততটুকুই। এ কী অদ্ভূত উপমা? এর থেকে কিছুই বোঝা গেল না। একটি বালুকণার আকার কতটুকু? কে জানে সেটা? কেউ না!! সেটা 0.05 থেকে 2 মিলিমিটার হতে পারে। আর এক হাত দূরত্বটাই বা কত? তাও সঠিক কারুর জানা নেই। আমি যদি এক হাত দূরত্ব 0.5 মিটার ধরি, তবে সেই বালুকণা আমার চোখে 0.005 থেকে 0.2 ডিগ্রী কোণ প্রক্ষেপণ করবে। পূর্ণ চাঁদ হল 0.5 ডিগ্রী। ওনারা কি বলতে পারতেন না এই ছবিটি চাঁদের 0.2/0.5 = 40% অংশ বা 0.005/0.5 = 1%? 1% আর 40% এর মধ্যে তো বিশাল পার্থক্য, তাহলে এরকম অর্থহীন উপমা দেবার দরকার কী? এতে বিজ্ঞানের কোনো লাভ হয় না।
৮. বিজ্ঞানকে সাধারণের কাছে গুরুত্ব সহকারে উপস্থাপন করা দরকার। অনেক বিজ্ঞানীই সাধারণের বোধ-ক্ষমতার ওপরে আস্থা রাখেন না। এটা হল একটা, কিন্তু তারা এই ছবিটার যে সঠিক অর্থ আমাদের দিতে পেরেছেন তেমনও নয়।
আর নাসার প্রোপাগান্ডা নিয়ে নতুন করে বলার কিছু নেই, ড. মারুফ মল্লিক বলেন,
গত শতকের ৭০ এর দশক। সোভিয়েত রাশিয়ার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের টক্কর চরমে। বার্লিনের অধিকাংশ হারিয়েছে রাশিয়ার কাছে। কিউবা সংকটেও সুবিধা করতে পারেনি। কোরিয়া দুইভাগ হয়েছে। ভিয়েতনামের যুদ্ধেও যায় যায় অবস্থা। কূটনীতিতে বেশ হতাশজনক অবস্থার মধ্যেই কিছু ছবি প্রকাশ করে প্রথম চাঁদে যাওয়ার ঘোষণা দেয় যুক্তরাষ্ট্র।
বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থা খুব সুবিধার না। কিছুদিন আগেই আফগানিস্তান থেকে চলে গেছে তালেবানদের হাতে ছেড়ে দিয়ে। সিরিয়া, ইরাক থেকে পিছু হটছে। আর ইউক্রেনের একের পর এক এলাকা দখল করে নিচ্ছে রাশিয়া। নিষেধাজ্ঞা, হুমকি, ধমকি দিয়েও রাশিয়াকে ঠেকানো যাচ্ছে না।
এরই মধ্যে কয়েক বিলিয়ন বছর আগের ছবি ধারণ করে হাউকাউ লাগিয়ে দিছে। এই ছবিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম সয়লাব। লোকজন বিগ ব্যাং দেখার স্বপ্ন দেখছে এই ছবি দেখার পর। এরপর হয়ত ইশ্বরের ছবি তোলার ঘোষণা দিতে পারে মার্কিনীরা। কোনো আলোর ছবি দেখিয়ে বলবে ওই যে ওই খানে ঈশ্বর থাকে। কারণ সেখানে বেশি বেশি ঈশ্বর কনার অস্তিত্ব পাওয়া গেছে। জর্জ জুনিয়র বুশ তো হোয়াইট হাউজের বারান্দায় ঈশ্বরের সঙ্গে কথোপকথনের দাবী করেছিল ইরাক আক্রমনের সময়।
ইমেজ বিল্ডিং ও প্রোপাগান্ডায় মার্কিনীদের বিকল্প নাই। জেমসের আগে হাবল কিন্তু এ ধরনের অনেক ছবিই তুলছে। তারপরও জেমসের ছবি দিয়ে হাউকাউ হচ্ছে। কারণ মার্কিনীদের দিনকাল বেশি ভালো যাচ্ছে না।
তথ্যসূত্র
১. উইকিপিডিয়া
২. জ্যোতির্বিজ্ঞানী ড. দীপেন ভট্টাচার্য (১৯৫৯)
৩. ড. মারুফ মল্লিক
৪. বিভিন্ন অনলাইন মাধ্যম