কেন সরব হচ্ছে না খতমে নবুওত সংগঠনগুলো?

মুনশী নাঈম:

কাদিয়ানীদের তথাকথিত ‘ইজতেমা’ বন্ধের দাবিতে পঞ্চগড় শেরে বাংলা পার্কে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ পঞ্চগড় জেলা শাখার নেতৃত্বে অবস্থান কর্মসূচি পালিত হয়েছে। এতে অংশ নিয়েছে জেলার আলেমা-উলামা এবং ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা। দাবির প্রেক্ষিতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, আগামী বছর থেকে পঞ্চগড়ে কাদিয়ানিদের বার্ষিক সম্মেলন হতে দেয়া হবে না।

পঞ্চগড়ের জনসাধারণ কাদিয়ানিদের বিরুদ্ধে পথে নেমে এলেও এবার তেমন সরব দেখা যায়নি খতমে নবুওত আন্দোলন শিরোনামের সংগঠনগুলোকে। প্রশ্ন উঠছে—কেন এই নীরবতা?

এ প্রসঙ্গে কথা হয় মজলিসে তাহাফফুজে খতমে নবুওতের দায়িত্বশীল মাওলানা আবদুল কাইয়ুম সুবহানির সঙ্গে। নীরবতার প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি ফাতেহকে বলেন, ‘আমরা নীরব নই। সবাই তো মাহফিলে এ বিষয়টি নিয়ে কথা বলছেই। যে যার জায়গা থেকে কথা বলছে। কাদিয়ানীদের নিয়ে কথা বলা শুধু খতম নবুওত সংগঠনের দায়িত্ব নয়। এটা বরং সবারই দায়িত্ব।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা প্রধানমন্ত্রীর কাছে এ বিষয়ে স্মারকলিপি দিয়েছি গত বছরের ১৭ ডিসেম্বর। যেন কাদিয়ানীদেরকে অনুসলিম ঘোষণা করা হয়। প্রধানমন্ত্রী এ বিষয়ে পজেটিভ। তবে পারিপার্শ্বিক বিভিন্ন কারণে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে চাইলেই কোনো দলকে অমুসলিম ঘোষণা করা যায় না। তবে আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি।’

এবার হেফাজতও কাদিয়ানীদের অমুসলিম দাবিতে কোনো কথা বলেনি। সংগঠনের যুগ্ম মহাসচিব আবদুল কাইয়ুম সুবহানি ফাতেহকে বলেন, ‘আমরা চেষ্টা করছি সব দলকে একটি সম্মেলন করার। কিন্তু তার আগো জনগণের মধ্যে সচেতনতা তৈরী করতে হবে। জনগণকে এরসাথে সম্পৃক্ত করতে হবে। নয়ত সর্বদলকে নিয়ে সম্মেলন করলেও লাভ হবে না।’

তবে কাদিয়ানীদের চলতি বছরের সম্মেলন হচ্ছে কিনা, সেই তথ্যটিই জানেন না খতমে নবুওত আন্দোলন পরিষদের দায়িত্বশীল মাওলানা বাহাউদ্দীন জাকারিয়া। ফলে তার সংগঠনের পক্ষ থেকে এ বছর কোনো পদক্ষেপ নেয়া হয়নি৷ ফাতেহকে তিনি বলেন, ‘জানলে পদক্ষেপ নিতাম।’

এদিকে পঞ্চগড় জেলায় আয়োজিত কাদিয়ানীদের ইজতেমা বন্ধের দাবি জানিয়েছেন দেশের শীর্ষস্থানীয় আলেমরা। গতকাল এক যুক্তবিবৃতিতে তারা বলেন, কাদিয়ানি সম্প্রদায়ের (আহমদিয়া জামাত) পক্ষ থেকে আগামী ৩, ৪, ৫ মার্চ পঞ্চগড় জেলায় ‘জাতীয় ইজতেমা’ নামে দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলমানের ঈমান আকিদা বিধ্বংসী অনুষ্ঠান আয়োজন করতে যাচ্ছে। আমরা এর তীব্র প্রতিবাদ করছি এবং অবিলম্বে তা বন্ধের জন্য সরকারের কাছে জোর দাবি জানাচ্ছি।

বিবৃতিদাতাদের মধ্যে রয়েছেন, আল্লামা শাহ মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী, আল্লামা শাহ মুহাম্মাদ ইয়াহইয়া, আল্লামা আতাউল্লাহ হাফেজ্জী, আল্লামা আব্দুল হামিদ পীর সাহেব মধুপুর, আল্লামা শায়েখ সাজিদুর রহমান, আল্লামা মুহিব্বুল হক গাছবাড়ী, আল্লামা আব্দুল আওয়াল, আল্লামা আবুল কালাম, মুফতি মিজানুর রহমান সাঈদ, মাওলানা আরশাদ রাহমানী, মাওলানা মুবারকুল্লাহ্, মাওলানা সাইফুল্লাহ সিদ্দিকী পীর সাহেব শর্ষিনা, মাওলানা শাব্বীর আহমাদ রশীদ, মাওলানা মুহিউদ্দিন রাব্বানী, মাওলানা আনওয়ারুল করীম যশোর, মাওলানা শওকত হুসাইন সরকার, মাওলানা জহুরুল ইসলাম, মাওলানা আহমাদ আলী কাসেমী, মাওলানা ইমাদুদ্দীন, মাওলানা আব্দুল কাইয়ুম সুবহানী, মাওলানা মুজিবুর রহমান হামিদী, মুফতি কিফায়াতুল্লাহ আজহারী, মুফতি মাসউদুল করীম ও মুফতি কামাল উদ্দিন।

আগের সংবাদভূমিকম্পের জন্য সমকামীরা দায়ী : ইহুদি ধর্মগুরু
পরবর্তি সংবাদসায়েন্সল্যাবে ভবনে বিস্ফোরণ, নিহত ৩