আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
দক্ষিণ আমেরিকার দ্বিতীয় বৃহত্তম দেশ আর্জেন্টিনার জনসংখ্যা চার কোটি ৫৬ লাখ ২০ হাজার ৩৮১। দেশটির মুসলিম নাগরিকের সংখ্যা প্রায় সাড়ে চার লাখ। যা আর্জেন্টিনার মোট জনসংখ্যার মাত্র ২ শতাংশ। এরপরও আর্জেন্টিনায় বসবাসকারীদের মাঝে মুসলিমরা দেশটির বৃহত্তম সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠী। পরিসংখ্যান অনুযায়ী লাতিন আমেরিকার দেশগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি মুসলমানের বাস এ দেশটিতে। আর্জেন্টিনার মুসলমানদের একপঞ্চমাংশই বাস করে রাজধানী বুয়েন্স আয়ার্সে।
বর্তমানে আর্জেন্টিনার বিভিন্ন শহরে ১৫০টির বেশি ইসলামিক সেন্টার আছে। এর তত্ত্বাবধানে অসংখ্য মাদরাসা, স্কুল ও কলেজ পরিচালিত হয়। ১৯৯৬ সালে সৌদি বাদশার সহায়তায় কিং ফাহাদ ইসলামিক কালচারাল সেন্টার নামে দক্ষিণ আমেরিকার সর্ববৃহৎ মসজিদ স্থাপিত হয়। ইসলামিক সেন্টার অব আর্জেন্টিনা দেশের ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা মসজিদগুলোতে রমজানে কোরআন ও ধর্মীয় বিষয়ে পাঠদানের ব্যবস্থা করে। তারা রমজান মাসে বিশেষ টেলিভিশন সম্প্রচারের ব্যবস্থা করে। যেখানে মুসলিমগণ ইসলামি জীবনব্যবস্থা সম্পর্কে জানতে ও প্রশ্ন করার সুযোগ পান।
বর্তমানে আর্জেন্টাইন মুসলমানদের সবচেয়ে বড় সংকট হচ্ছে, ধর্মীয় শিক্ষার অভাব। স্প্যানিশ ভাষায় ইসলামি উপকরণের অভাব। স্থানীয় মুসলিম নেতারা স্প্যানিশ ভাষায় ইসলামি বইপত্র অনুবাদ করাকে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছেন। জ্ঞানের অভাবে অনেক মুসলিম তাদের আত্মপরিচয় ভুলে যাচ্ছেন। এমনকি তারা ‘নিধর্মী’ হিসেবে পরিচয় দিচ্ছেন।
‘কাউন্সিল অন হেমসিগ্রিক অ্যাফেয়ার্স’-এর গবেষণা সহযোগী ভিনসেন্ট লোফাসোর মতে, আর্জেন্টাইন মুসলিমদের সমস্যা হচ্ছে, প্রথমত ‘তারা তাদের অনেক প্রথা (ইবাদাত) ভুলে গেছে। তারা তাদের ধর্ম সম্পর্কে জানে না। আরবি ভাষাও তারা জানে না। এমন অনেক মুসলিম পরিবার আছে যেখানে একজন মাত্র আরবি পারেন (তিনি দাদা/দাদি হবেন), বাকিরা শুধুমাত্র স্প্যানিশ পারেন।
দ্বিতীয় কারণ হিসেবে তিনি বলেন, মাতৃভাষা স্প্যানিশে খুব কম ইসলামি বইপত্র পাওয়া যায়, বিশেষত কোরআন পাওয়া যায় না (কুরআনের স্প্যানিশ অনুবাদ হলেও তা সহজলভ্য নয়)।
তৃতীয় ও শেষ কারণ হিসেবে তিনি বলেন, সেখানে মাদরাসা বা ইসলামিক স্কুল ও ইসলাম প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের অভাব রয়েছে। ফলে অনেক মুসলিম স্থানীয় প্রথা(খ্রিস্টান ধর্ম) দ্বারা প্রভাবিত হচ্ছেন, এমনকি অনেকে তার মূল ধর্ম (ইসলাম) ভুলে যাচ্ছেন।