চড়া হজের খরচ, নিবন্ধন করার সাহস করছে না হাজিরা

মুনশী নাঈম:

হজযাত্রীদের চূড়ান্ত নিবন্ধনের সময় শেষের দিকে হলেও এখনও মাত্র সাত শতাংশ হজযাত্রী নিবন্ধন করেছে। গত ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে হজযাত্রীদের চূড়ান্ত নিবন্ধন শুরু হয়। শেষ হবে আগামীকাল ২৩ ফেব্রুয়ারি। কিন্তু গত ১৪ দিনে মাত্র ৮ হাজার ৮২৭ জন নিবন্ধন করেছেন। অর্থাৎ মোট হজযাত্রীর মাত্র সাত শতাংশ নিবন্ধন হয়েছে।

কোনো ব্যক্তিকে হজে যেতে এখন প্রাক-নিবন্ধন ও নিবন্ধন দু’টি ধাপ পার হতে হয়। প্রাক-নিবন্ধন সারা বছরই চলে। ৩০ হাজার টাকা দিয়ে প্রাক-নিবন্ধনয় করা যায়। হজের আগে প্রাক-নিবন্ধিত ব্যক্তিকে চূড়ান্ত নিবন্ধন করতে হয়।

হজ এজেন্সির মালিকরা বলছেন, হজের খরচ বেড়ে যাওয়ায় মানুষের জন্য ব্যয় মেটানো কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে। এজন্য যারা প্রাক-নিবন্ধন করেছেন তাদের অনেকেই এত টাকা খরচ করে হজে যেতে চাচ্ছেন না। তারা এখন ওমরাহ পালনে যেতে চাচ্ছেন। এ কারণে এখন ওমরাহ যাত্রী অনেক বেড়ে গেছে।

এ বছর আগেভাগেই হজের কার্যক্রম শুরু করেছে ধর্ম মন্ত্রণালয়। গত ১ ফেব্রুয়ারি সরকারি ব্যবস্থাপনায় হজে যেতে খরচের প্যাকেজ ঘোষণা করেন ধর্ম প্রতিমন্ত্রী। তিনি জানান, এ বছর সরকারি ব্যবস্থাপনায় হজে যেতে একটি মাত্র প্যাকেজে খরচ হবে ৬ লাখ ৮৩ হাজার ১৫ টাকা। এর সাথে কোরবানির খরচ ২৮ হাজার ৩৯০ টাকা যুক্ত হবে। যাতে হজযাত্রীরা সি ক্যাটাগরির সুবিধা পাবেন। গত বছরের তুলনায় এবার খরচ বেড়েছে এক লাখ ৭০ হাজার ৫৭২ টাকা। সরকারি ব্যবস্থাপনায় হজে যাওয়ার সর্বনিম্ন প্যাকেজ ৬ লাখ ৮৩ হাজার ১৮ টাকা। এছাড়া বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় প্যাকেজের মূল্য ৬ লাখ ৫৭ হাজার টাকা।

এ প্রসঙ্গে কথা হয় ইউনিভার্সাল হজ এজেন্সির মালিক তানভির আহমেদের সঙ্গে। ফাতেহকে তিনি বলেন, ‘অন্যবারের তুলনায় এবার হজের খরচ বেশি। তাই মানুষ নিবন্ধন করতে সাহস পাচ্ছে না। নিবন্ধনের সময় আরও বাড়ানো হবে৷ আশা করি, পূর্ণ হয়ে যাবে।’

কোন খাতে কত খরচ হচ্ছে, তা তুলে ধরেছেন তানভির আহমেদ। বিভিন্ন খাতের খরচ জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘বিমান ভাড়া ১ লাখ ৯৭ হাজার ৭৯৭ টাকা। মক্কা ও মদীনায় বাড়িভাড়া বাবদ ২ লাখ ৪ হাজার ৪৪ টাকা। জেদ্দা-মক্কা-মদিনা ও মিনা-আরাফা-মুজদালিফায় যাতয়াত ভাড়া ৩৫ হাজার ১৬২ টাকা। বাস সার্ভিস বাবদ ২৮৩৯ টাকা। জমজম পানি ৪২৫ টাকা। সার্ভিস চার্জ তাবুর সি ক্যাটাগরী অনুসারে ১ লাখ ৬০ হাজার ৬৩০ টাকা। মক্কা রুট সার্ভিস ৫২৭। উন্নতমানের বাসভাড়া ১৯ হাজার ৩৩৩ টাকা। দেশে ফেরার লাগেজ ভাড়া ৮৫১ টাকা। ভিসা ফি ৮৫১৭ টাকা৷ স্বাস্থ্য বিমা ৯৪৬ টাকা। এছাড়াও রয়েছে আইডি কার্ড ও ট্যাপ খরচ ৮০০ টাকা। প্রশিক্ষণ ফি ৩০০ টাকা। খাওয়া খরচ ৩৫ হাজার টাকা। হজ গাইড ১৫ হাজার ১৭৫ টাকা। এই মোট ৬ লাখ ৮৩ হাজার ১৪ টাকা।’

তিনি আরও বলেন, ‘হজের পাঁচ দিনে মিনা, আরাফাহ ও মুজদালিফায় মোয়াল্লেমের সেবার ভিত্তিতে চারটি ক্যাটাগরি করা হয়েছে। সর্বনিম্ন ডি ক্যাটাগরির জন্য পাঁচ দিনে খরচ ধরা হয়েছে এক লাখ ৩৬ হাজার ১৩০ টাকা, সি ক্যাটাগরির জন্য এক লাখ ৬০ হাজার ৬৩০ টাকা, বি ক্যাটাগরির জন্য খরচ হবে দুই লাখ ২৪ হাজার ৬২১ টাকা এবং এ ক্যাটাগরির জন্য খরচ ধরা হয়েছে দুই লাখ ৯০ হাজার ৯৩০ টাকা।’

আগের সংবাদ১৪ দিনে হজযাত্রী নিবন্ধন হয়েছে মাত্র সাত শতাংশ!
পরবর্তি সংবাদএবার শক্তিশালী ভূমিকম্পে কাঁপল তাজিকিস্তান