ঠিকানা যখন বৃদ্ধাশ্রম; অনুশোচনা, উপলব্ধি ও ধর্মভাবনা

খাজা হাসান মুঈনুদ্দীন:

শুরুর আলাপ 

বৃদ্ধাশ্রম; কথাটা শুনলেই মনসপটে ভেসে ওঠে কতগুলো করুণ চেহারার জলছবি, জীবনের পড়ন্ত বেলায় যারা একটু ভালোবাসা খুঁজে ফিরেন। মাথা গুজার ঠাই হারিয়ে যারা একেবারে পথে নেমে গেছেন। যারা নিজের সন্তান ও পরবর্তী প্রজন্মকে আগলে রেখে শেষ জীবনটা হাসি-খুশি কাটাতে চান। জীবনসায়াহ্নে সন্তান ও নাতিনাতকুরের পাশে থেকে পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করতে চান। অথচ মানবতার চরম উপহাস!সন্তানরা ক্রমে ভুলে যায় স্বীয় বাবা-মায়ের আদুরে স্মৃতিবিজড়িত সেই দিনগুলো। অস্বীকার করে বসে স্বযত্নে আগলে রাখার প্রতিটি মুহূর্ত, ভালোবাসার প্রতিটি ক্ষণ।

বৃদ্ধাশ্রম হল বয়স্কদের থাকার জায়গা। অনেকটাই হোস্টেল এর মতো। যে সব বৃদ্ধ-বৃদ্ধাদের দেখার কেউ নেই তাদের জন্যই তৈরি হয়েছে এই আবাসন। পরিবার ও স্বজনদের থেকে আলাদা আবাস বা আশ্রয়ের নাম বৃদ্ধাশ্রম। সময়ের সবচে নিষ্ঠুর পরিভাষা হয়ত এটাই। মূলত অসহায় ও গরীব বৃদ্ধদের প্রতি করুণার বোধ থেকেই হয়ত বৃদ্ধাশ্রমের সৃষ্টি ; যেখানে বৃদ্ধদের প্রয়োজনীয় সেবা ও আশ্রয়ের ব্যবস্থা আছে। ঠিক সময়ে সময়ে খাবার দেওয়া হয়। হোস্টেলের মতো কমন রুম থাকে। আর এই কমন রুমে টিভি দেখার, বিকেলে পার্ক এ ঘোরানোর ব্যবস্থাও থাকে। বৃদ্ধাশ্রমের ক্যাটালগে এমন হাজারো সুযোগ-সুবিধার কথা লেখা থাকলেও বাস্তব চিত্র ভিন্ন। বৃদ্ধাশ্রমে অবস্থান করা বৃদ্ধ ও বৃদ্ধাদের অনুযোগ-অভিযোগের কমতি নেই। সন্তান ও পরিবার হারা এই মানুষগুলো হয়তো বড্ড অভিমানে নিজেদের অপ্রাপ্তির কথা কাউকে বলতে চান না। আর বলেই বা কি হবে? এর সমাধান করার মতো কেউ কি আছে? নিজেদেরকে সমাজের অপাংক্তেয়ই ভেবে ভেবে জীবনের শেষ সময়টা কাটে অনুশোচনায়।

উৎপত্তি ও বিকাশ

বৃদ্ধাশ্রমের ধারণা সর্বপ্রথম শান রাজবংশের মাথায় এসেছিল। তারা খ্রিস্টপূর্ব ২২০০ শতকে প্রাচীন চীনে প্রথম বৃদ্ধাশ্রম প্রতিষ্ঠিত করেছিল। গৃহছাড়া অবহেলিত ও অসহায় বৃদ্ধ-বৃদ্ধাদের আশ্রয়ের জন্যে ছিল এই উদ্যোগ। পরিবার থেকে বিতাড়িত বৃদ্ধ-বৃদ্ধাদের জন্য আলাদা এই আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণ করে ইতিহাসে বিশেষ স্থান দখল করে নিয়েছিল এই শান রাজবংশ। তাদের আবিষ্কৃত এই ধারণা বর্তমান সমগ্র বিশ্বে প্রসার লাভ করেছে।(১) বাংলাদেশে বৃদ্ধাশ্রমের ধারণার প্রবর্তন হয় ডা. এ. কে. এম আবদুল ওয়াহেদের হাত ধরে। বার্ধক্যে সবার জন্য শারীরিক-মানসিক সুস্থতা ও স্বস্তিময় জীবনযাপনের জন্য প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদানের লক্ষ্যে ডা. এ. কে. এম আবদুল ওয়াহেদের উদ্যোগে ১৯৬০ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় বাংলাদেশ প্রবীণ হিতৈষী সংঘ ও জরাবিজ্ঞান প্রতিষ্ঠান। সরকারি উদ্যোগে ১৯৮৫ সালে ঢাকার আগারগাঁওয়ে নিজস্ব ভবন এবং পরে ১৯৯৩-৯৪ সালে সরকারি অনুদানে হাসপাতাল ও হোম ভবন নির্মাণ করা হয়। বর্তমানে দেশব্যাপী প্রতিষ্ঠানটির ৫০টিরও বেশি শাখা রয়েছে। ১৯৮৭ সালের গোড়ার দিকে ঢাকার উত্তরায় আজমপুরে গড়ে তোলেন ‘বয়স্ক পুনর্বাসন কেন্দ্র’। ১৯৯৪ সালে কেন্দ্রটিকে স্থায়ীভাবে স্থানান্তরিত করা হয় গাযীপুরের মণিপুর বিশিয়া কুড়িবাড়ীতে। এ ছাড়া কিছু বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, যেমন- অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মচারী কল্যাণ সমিতি, ব্র্যাক, ইআইডি, প্রবীণ অধিকার ফোরাম প্রভৃতি প্রবীণদের কল্যাণে কাজ করে। এই সকল সংস্থা মূলত বৃদ্ধ বয়সে যাদের সহায় সম্বল নেই, তাদেরকে মাথায় রেখেই কাজ পরিচালনা করে।
২৮.১০.২০১৮ইং তারিখে প্রকাশিত সমাজসেবা অধিদফতরের তথ্য মোতাবেক বর্তমান বাংলাদেশের নিবন্ধনকৃত শান্তি নিবাসের (বৃদ্ধাশ্রমের) সংখ্যা ছয়টি।এগুলো ফরিদপুর, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, বাগেরহাট, বরিশাল ও সিলেট জেলায় অবস্থিত। তখনকার সমাজকল্যাণমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন বলেন, সারা দেশে প্রতিটি বৃদ্ধাশ্রমে ৫০টি করে মোট ৩০০টি সিট রয়েছে।(২)

বর্তমানে সমাজসেবা অধিদপ্তর সম্পূর্ণ জিওবির অর্থায়নে ৭ হাজার ৩৯৮ দশমিক ৯১ লাখ টাকা ব্যয়ে জুলাই ২০২০ হতে জুন ২০২২ মেয়াদকালে বাস্তবায়নের জন্য ৮টি সরকারি শিশু পরিবারে ২৫ শয্যাবিশিষ্ট শান্তি নিবাস স্থাপন শীর্ষক একটি প্রকল্প হাতে নিয়েছে। সম্প্রতি একনেক এটির অনুমোদন দিয়েছে। প্রকল্পটির মাধ্যমে ৮টি সরকারি শিশু পরিবারে শান্তি নিবাস স্থাপন করা হবে। শান্তি নিবাসগুলো হলো- ১. শান্তি নিবাস (প্রবীণা), শেখ রাসেল দুঃস্থ শিশু প্রশিক্ষণ ও পুনর্বাসন কেন্দ্র, টুঙ্গিপাড়া, গোপালগঞ্জ; ২. সরকারি শিশু পরিবার (প্রবীণা) লালমনিরহাট সদর, লালমনিরহাট; ৩. শান্তি নিবাস (প্রবীণ), সরকারি শিশু পরিবার, সম্ভুগঞ্জ, ময়মনসিংহ; ৪. শান্তি নিবাস (প্রবীণা), সরকারি শিশু পরিবার, সুনামগঞ্জ সদর, সুনামগঞ্জ; ৫. শান্তি নিবাস (প্রবীণা), সরকারি শিশু পরিবার, মাইজদী, নোয়াখালী; ৬. শান্তি নিবাস (প্রবীণ), সরকারি শিশু পরিবার, বায়া, রাজশাহী; ৭.শান্তি নিবাস (প্রবীণ), সরকারি শিশু পরিবার, মহেশ্বরপাশা, খুলনা ও ৮. শান্তি নিবাস (প্রবীণ), সরকারি শিশু পরিবার, সাগরণী, বরিশাল।

বর্তমান সমাজকল্যাণমন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদ বলেন, বর্ণিত প্রকল্পের ধারাবাহিকতায় ধীরে ধীরে দেশের সব জেলায় একটি করে শান্তি নিবাস (প্রবীণ/প্রবীণা) স্থাপন করা হবে। বর্তমানে চারটি প্রবীণ নিবাস স্থাপন প্রকল্প চলমান রয়েছে। তার মধ্যে সম্পূর্ণ সরকারি অর্থায়নে একটি, যৌথ অর্থায়নে দুটি ও পিপিপির আওতায় একটি প্রকল্প চলমান। এছাড়া বিগত অর্থবছরে যশোর ও মাদারীপুর জেলার দুটি প্রবীণ নিবাস স্থাপন সংক্রান্ত প্রকল্প শেষ হয়েছে।(৩)

কেন সুগম হচ্ছে বৃদ্ধাশ্রমের পথ?

বিশ্লেষকদের মতে, মুসলিম যৌথ পরিবারগুলো ভেঙে যাচ্ছে। ফলে পারিবারিক বন্ধন শিথিল হয়ে যাচ্ছে। সন্তানরা মা-বাবার প্রতি দায়িত্ব ও কর্তব্য ভুলে যাচ্ছে। নিজেদের নিয়েই ব্যস্ত হয়ে পড়ছে তারা। অনেক সন্তানের দাবী, কর্মজীবনের নানান ব্যস্ততায় বাবামায়ের সাথে কথা বলার মতো পর্যাপ্ত সময় হয়ে উঠে না। তাই বাবা-মাকে একাকি নিঃসঙ্গ রাখার চেয়ে বৃদ্ধাশ্রমে সমবয়সীদের সঙ্গে দিয়ে আসেন। যেন ভালো সময় কাটে। এই যুক্তি কি আদৌ গ্রহণযোগ্য? এমন সন্তানকে কুসন্তান বলাই মনে হয় শ্রেয়। বৃদ্ধ মা-বাবাকে বাড়তি বোঝা হিসেবে বিবেচনা করছে অনেকে। যে মা-বাবাই ছিল সারা জীবনের আশ্রয়স্থল, সে কিনা আজ বৃদ্ধ বাবা-মাকে নিজের কাছে রাখার নুন্যতম প্রয়োজন বোধ করছে না। উল্টো বাবা-মাকে উটকো ঝামেলা মনে করছে। তাঁদেরকে রেখে আসছে বৃদ্ধাশ্রমে। কিংবা অবহেলা ও নিষ্ঠুর আচরণে এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি করছে যেন বাধ্য হয়ে তারা নিজেরাই ভিন্ন কোনো ঠাঁই খুঁজে নেন। যেন নিজেরাই আগ বেড়ে বৃদ্ধাশ্রমের দরজার কড়া নাড়েন। বৃদ্ধ বাবামায়ের সম্পদ ভাগবাটোয়ারা করে সন্তানরা ভোগ করছে কিন্তু বাবামায়ের দায়িত্ব নিতে কোন সন্তান রাজি নয়। সম্পদহীন করে অমানবিকভাবে তাদের আলাদা করে দেওয়া হচ্ছে। নতুবা বৃদ্ধাশ্রমে পাঠানো হচ্ছে।

ছেলের বউয়ের সাথে মনোমালিন্যের কারণে বৃদ্ধ শ্বশুর-শ্বশুরী পায় না সদাচরণ, বেঁচে থাকার মত মিলে না আহার, পায় না উপযুক্ত পরিধেয় বস্ত্র এবং নানাবিধ রোগের যাতাকলে পিষ্ট হয়েও পায় না চিকিৎসার জন্য পারিবারিক সহযোগিতা। অর্থের অভাবে ব্যক্তিগত চাহিদার সকল অংশ থাকে অপূরণীয়। ফলে কষ্ট-ক্লেশে জর্জরিত হয়ে অনেকেই স্বেচ্ছায় বৃদ্ধাশ্রমকে জীবনের শেষ ঠিকানা বানিয়ে নেয়। এমনই একজন চট্টগ্রামের পটিয়া উপজেলার মুখপাড়া এলাকার ৭৭ বছর বয়সী অরুণ ভট্টাচার্য। একমাত্র ছেলের বউয়ের লাথি ঘুষি খেয়ে হাতের আঙ্গুল ভেঙ্গে এখন আমেনা-বশর বয়স্ক পুনর্বাসন কেন্দ্রে আছেন।(৪) অনেকে শেষ বয়সে স্মৃতিশক্তি হারিয়ে অবুঝ শিশুর মত ঘুরে বেড়ায় পথে-প্রান্তরে। অচেনা কারোর সহযোগিতায় তার ঠাঁই হয় বৃদ্ধাশ্রমে।
মূলত এ কারণেই বৃদ্ধাশ্রমের সংখ্যা দিনদিন বাড়ছে। অথচ একটা সময় যৌথ পরিবারই ছিল মুসলিম বাঙালি সমাজ ব্যবস্থার সবচেয়ে বড় শক্তি। শিশুরা দাদা-দাদির সান্নিধ্যে বড় হত। ইসলামিক প্রাথমিক শিক্ষা ও আদব-আখলাকসহ বিভিন্ন বিষয়ে দাদা-দাদিই শিক্ষকের ভূমিকা পালন করতেন। নাতি-নাতনিরাও দাদা-দাদির মাঝেই খুঁজে পেত নির্ভরতার আশ্রয়। উভয়ের মাঝে গড়ে উঠত ঘনিষ্ঠতা। বয়জ্যেষ্ঠরাও পরম মমতায় আগলে রাখতেন পরিবারের বাকি সদস্যদের। কিন্তু পশ্চিমা কালচারের প্রভাবে এই চিত্র অনেকটাই বদলে যাচ্ছে। যৌথ পরিবার ভেঙে একক পরিবারের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। একক পরিবার বেড়ে যাওয়াটা কিন্তু মূল সমস্যা না। আসল সমস্যা হলো আমরা বৃদ্ধ মা-বাবার দায়িত্ব সম্পর্কে ভুলতে বসেছি। ফলে বৃদ্ধাশ্রম নামক কারাগার প্রতিনিয়ত তৈরি হচ্ছে। দশক দুই আগেও অধিকাংশ বাঙালির মাঝে বৃদ্ধাশ্রমের তেমন ধারণা ছিল না। এখন দেশের অনেক জায়গায়ই বৃদ্ধাশ্রম গড়ে উঠেছে। সময়ের সাথে সাথে বৃদ্ধাশ্রমের সংখ্যা উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে। আর নারকীয় এ বৃদ্ধাশ্রমে আশ্রয় হচ্ছে অনেক বৃদ্ধ মা-বাবার। সেখানে যেতে তাদের বাধ্য করা হয়। অনেকে আবার জন্মদাতা মা-বাবার জন্য অতটুকু ভদ্রতাও দেখান না। বাবামাকে রাস্তার ধারে ফেলে রেখে পালিয়ে যায়। ডাক্তার দেখানোর কথা বলে অচেনা জায়গায় বসিয়ে রেখে চলে যায় বা দূর পাল্লার গাড়ীতে তুলে দিয়ে কৌশলে নেমে যাওয়ার মত ঘৃণ্য দৃষ্টান্তও রয়েছে।

গৌরনদী উপজেলার টরকী বাস স্ট্যান্ডে পঁচাশি বছর বয়সী বৃদ্ধা মা আরাফাতুন্নেসাকে রাস্তার ধারে ফেলে রেখে পালিয়ে যায়। টানা আট দিন এভাবেই কাটে। মাঝে মাঝে ছেলেদের নাম ধরে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন বৃদ্ধা। স্থানীয়রা নিতে চাইলে বলেন, আমার ছেলেরা আমাকে নিতে আসবে। (৫) যারা কালের সেরা বুদ্ধিজীবী, সাহিত্যিক, সাংবাদিক, শিক্ষক ও চাকরিজীবী ছিলেন, রঙীন রঙে বর্ণাঢ্য ছিল যাদের জীবন, জীবনের পড়ন্ত বিকেলে তারা নিঃসঙ্গ, একাকি। বৃদ্ধ বয়সে এসে নিজ সন্তানদের অবহেলা ও বঞ্চনার শিকার হয়ে বহু পিতা-মাতা এখন বৃদ্ধাশ্রমের বাসিন্দা হতে বাধ্য হচ্ছেন। পরিবার ও সন্তান থেকেও যারা ‘সন্তানহারা দুঃখী বাবা-মা’ হয়ে জীবন যাপন করছেন। এরচে বড় দুঃখ অভাগা বাবামায়ের জীবনে আর কি হতে পারে?

সন্তানদের সুবোধ ফিরে আসুক

বৃদ্ধাশ্রম বর্তমান সময়ের এক তিক্ত বাস্তবতা। পরিবার-পরিজনের অবহেলা ও অনাদরের ফলেই এর প্রয়োজনীয়তা বেড়ে চলেছে। সন্তানরা নিজের স্বার্থ হাসিলে বৃদ্ধ বাবা-মায়ের ব্যাপারে কঠিন সীদ্ধান্ত নিতে একটুও দ্বিধাবোধ করছে না। বেমালুম ভুলে যাচ্ছে তার উপর বাবামায়ের ইহসানের কথা। সন্তানদের নিজ দায়িত্ব ও কর্তব্য সম্পর্কে সচেতন হতে হবে। এই ব্যাপারে কুরআন ও হাদিসে যথেষ্ট গুরুত্ব উল্লেখিত হয়েছে।
কুরআন ও হাদিসের দিকনির্দেশনা–
আল্লাহ তাআলা বলেন,
وَ وَصَّیْنَا الْاِنْسَانَ بِوَالِدَیْهِ حَمَلَتْهُ اُمُّهٗ وَهْنًا عَلٰی وَهْنٍ وَّ فِصٰلُهٗ فِیْ عَامَیْنِ اَنِ اشْكُرْ لِیْ وَ لِوَالِدَیْكَ اِلَیَّ الْمَصِیْرُ .
আমি মানুষকে তার পিতা-মাতা সম্পর্কে নির্দেশ দিয়েছি- (কারণ) তার মা কষ্টের পর কষ্ট সয়ে তাকে গর্ভে ধারণ করেছে আর তার দুধ ছাড়ানো হয় দু’ বছরে- তুমি শোকর কর আমার এবং তোমার পিতা-মাতার। আমারই কাছে তোমাদের ফিরে আসতে হবে। (সুরা লোকমান- ১৪)।

এ আয়াতে পিতা-মাতার কৃতজ্ঞতা আদায়ের কথা বলা হয়েছে। কারণ বাবামা সন্তানের জন্য অনেক কষ্ট-মোজাহাদা করেছেন। তাই সারাজীবনই পিতা-মাতার শোকর আদায় করা উচিৎ। তবে কৃতজ্ঞ হওয়ার সবচে মোক্ষম সময় হলো তাদের বার্ধ্যক্যে। কারণ এ সময় তারাও শিশুর মত হয়ে যান। নিজেরা কিছুই করতে পারেন না। সন্তানই তখন তাদের বেঁচে থাকার সম্বল হয়ে উঠে। এদিকে ইঙ্গিত করে আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেছেন-
وَ قَضٰی رَبُّكَ اَلَّا تَعْبُدُوْۤا اِلَّاۤ اِیَّاهُ وَ بِالْوَالِدَیْنِ اِحْسَانًا اِمَّا یَبْلُغَنَّ عِنْدَكَ الْكِبَرَ اَحَدُهُمَاۤ اَوْ كِلٰهُمَا فَلَا تَقُلْ لَّهُمَاۤ اُفٍّ وَّ لَا تَنْهَرْهُمَا وَ قُلْ لَّهُمَا قَوْلًا كَرِیْمًا وَ اخْفِضْ لَهُمَا جَنَاحَ الذُّلِّ مِنَ الرَّحْمَةِ وَ قُلْ رَّبِّ ارْحَمْهُمَا كَمَا رَبَّیٰنِیْ صَغِیْرًا رَبُّكُمْ اَعْلَمُ بِمَا فِیْ نُفُوْسِكُمْ اِنْ تَكُوْنُوْا صٰلِحِیْنَ فَاِنَّهٗ كَانَ لِلْاَوَّابِیْنَ غَفُوْرًا.
তোমার প্রতিপালক নির্দেশ দিয়েছেন যে, তাকে ছাড়া আর কারও ইবাদত করো না, পিতা-মাতার সাথে সদ্ব্যবহার করো, পিতা-মাতার কোনও একজন কিংবা উভয়ে যদি তোমার কাছে বার্ধক্যে উপনীত হয় তবে তাদেরকে উফ্ (পর্যন্ত) বলো না এবং তাদেরকে ধমক দিও না; বরং তাদের সাথে সম্মানজনক কথা বল। এবং তাদের প্রতি মমতাপূর্ণ আচরণের সাথে তাদের সামনে নিজেকে বিনয়াবনত কর এবং দুআ কর, হে আমার প্রতিপালক! তারা যেভাবে আমার শৈশবে আমাকে লালন-পালন করেছেন, তেমনি আপনিও তাদের প্রতি রহমতের আচরণ করুন। (সুরা বনী ইসরাঈল- ২৩,২৪)।

এ দুআ থেকে বুঝে আসে যে, সন্তান শৈশবে যে ধরনের লালন-পালনের মুখাপেক্ষী হয়, ঠিক তেমনি পিতা-মাতাও বৃদ্ধ বয়সে সে ধরনের মমতাপূর্ণ আচরণের মুখাপেক্ষী হয়ে থাকেন। তাদের সাথে মমতাপূর্ণ আচরণের আদেশ দিয়েছেন। অথচ অনেক সন্তান বৃদ্ধ পিতা-মাতার সাথে খারাপ আচরণ করে থাকে। এমনকি মারধর পর্যন্ত করে। স্ত্রীকে খুশী করার জন্য বৃদ্ধ পিতা-মাতাকে অচেনা জায়গায় ফেলে আসা, দূরপাল্লার গাড়ীতে তুলে দিয়ে পালিয়ে আসা, ডাক্তার দেখানোর কথা বলে জমি দলীল করে নিয়ে ঘাড় ধাক্কা দিয়ে রাস্তায় বের করে দেয়া, হাসপাতালে ভর্তির কথা বলে বৃদ্ধাশ্রম নামক কারাগারে বন্দী করে রাখার মতো ন্যক্কারজনক ঘটনার কথা মাঝে-মধ্যে পত্র-পত্রিকায় দেখা যায়। অথচ মহান আল্লাহ তাদের সাথে এমন আচরণ তো দূরের কথা ‘উহ’ শব্দও করতে নিষেধ করেছেন।

বাবামায়ের সাথে সর্বদা বিনয়ী আচরণ করবে। উত্তম আখলাকের পরিচয় দিবে। আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, রাসুল সা. বলেন, এক লোক রাসুল সা.-এর নিকট এসে জিজ্ঞেস করল, হে আল্লাহর রাসুল সা.! আমার কাছে কে উত্তম ব্যবহার পাওয়ার বেশী হকদার? তিনি বললেন, তোমার মা। সে বলল, তারপর কে? তিনি বললেন, তোমার মা। সে বলল, তারপর কে? তিনি বললেন, তোমার মা। সে বলল, তারপর কে? তিনি বললেন, তোমার পিতা।(৯)

এমনকি পিতা-মাতা অমুসলিম হলেও তাদের সাথে সুসম্পর্ক বজায় রাখার নির্দেশ দিয়েছে ইসলাম। যেমন আসমা বিনতে আবু বকর রা. বলেন, রাসুলুল্লাহ সা.-এর যুগে আমার মা মুশরিক অবস্থায় আমার নিকট আসলেন। আমি রাসুলুল্লাহ সা.-এর নিকট ফতোওয়া চেয়ে বললাম, তিনি আমার প্রতি খুবই আসক্ত, আমি কি তার সঙ্গে সদাচারণ করব? তিনি বললেন, হ্যাঁ, তুমি তোমার মায়ের সাথে সদাচারণ কর।(১০)
বার্ধক্যে মা-বাবার খেদমত করতে পারাটা যেমন জান্নাতে দাখেল হওয়ার কারণ তেমনি মা-বাবার খেদমত না করাটাও হতভাগা হওয়ার কারণ। এক হাদীসে বর্ণিত হয়েছে, সে ব্যক্তির নাক ধূলিমলিন হোক, আবার সে ব্যক্তির নাক ধূলিমলিন হোক, সে ব্যক্তির নাক ধূলিমলিন হোক! বলা হলো, ইয়া রাসুলাল্লাহ! কার? তিনি বললেন, যে ব্যক্তি তার পিতামাতা উভয়কে কিংবা একজনকে বার্ধক্যে পেল এবং সে জান্নাতে প্রবেশ করার সুযোগ লাভ করল না।(১১)

সন্তান বাবামায়ের খেদমতের পাশাপাশি তাদের হাজতও পূরণ করবে। তাদের ভরণপোষণে কোন অবহেলা করবে না। আমর বিন শুআইব বর্ণনা করেন, একজন লোক রাসুল সা.-এর নিকট এসে বলল, হে আল্লাহর রাসুল সা.! আমার সম্পদ ও সন্তান আছে। আমার পিতা আমার সম্পদের মুখাপেক্ষী। তিনি বললেন, তুমি ও তোমার সম্পদ উভয়ই তোমার পিতার। তোমাদের সন্তান তোমাদের জন্য সর্বোত্তম উপার্জন। সুতরাং তোমরা তোমাদের সন্তানের উপার্জন থেকে খাও।(১২)

সুতরাং বাবামায়ের ভরণপোষণের দায়িত্ব নিজ কাধে তুলে নেয়া সন্তান কর্তব্য। যদি এই দায়িত্ব কোন গাফলতি করে তাহলে তাকে চাপ প্রয়োগ করতে করে। শাস্তির মুখোমুখি করতে হবে। আইনের কাঠগড়ায় দাঁড় করাতে হবে। ২০১৩ সালে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় ২৫ পৃষ্ঠা ব্যপী ‘পিতা-মাতার ভরণ-পোষণ আইন’-এর খসড়া উপস্থান করেন। তাতে বিধিমালার বিস্তারিত আলোচনা রয়েছে। এখানে সন্তানের কিছু আচরণ বিধি নির্ধারণ করা হয়েছে। যেমন,
১) পিতা-মাতার সঙ্গে সব সময় মর্যাদাপূর্ণ আচরণ ও যত্নসহকারে দেখভাল করতে হবে।

২) পিতা-মাতার মতামতকে গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করতে হবে।

৩) পিতা-মাতার শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যগত বিষয়ে বিশেষ ভাবে খেয়াল রাখতে হবে এবং প্রয়োজনীয় সেবা-শুশ্রুষা, পথ্য ও অন্যান্য উপকরণ যথাসম্ভব দ্রুত সরবরাহ করবে।

৪) পিতা-মাতার নিজস্ব সম্পদ বিনষ্ট করবে না এবং পিতা-মাতার আইনানুগ অধিকার সমুন্নত রাখবে।

৫) পিতা-মাতার অভিজ্ঞতা ও দক্ষতাকে কাজে লাগানোর সুযোগ নিশ্চিত করবে।

৬) ছলচাতুরির মাধ্যমে পিতা-মাতার সম্পদের যথেচ্ছা ব্যবহার করবে না।

৭) পিতামাতার সম্পদে অন্য উত্তরাধিকারদের অংশ আত্মসাতের চেষ্টা করবে না।

৮) পিতা-মাতার নিজস্ব সম্পদ না থাকলে তাদের দোষারোপ করবে না।

৯) পিতা-মাতার সুনাম, মর্যাদা ও পারিবারিক ঐতিহ্য বজায় রাখতে সচেষ্ট থাকবে।

১০) আয়-রোজগারের সক্ষমতা অনুসারে পিতা-মাতার ভরণ-পোষণ ও ভবিষ্যৎ সুরক্ষার লক্ষ্যে আপদকালীন সঞ্চয়ের ব্যবস্থা করবে।

১১) পিতা-মাতার নাগরিক অধিকার নিশ্চিত করবে।

এছাড়াও পিতা-মাতার অন্ন, বস্ত্র, চিকিৎসা সেবার যথাযথ ব্যবস্থা নিতে বাধ্য থাকবে। অন্যথায় পিতামাতা প্রশাসন বরাবর লিখিত অভিযোগ জানালে উপযুক্ত প্রক্রিয়া গ্রহণ করে ৩০ দিনের মধ্যে নিষ্পত্তি করার ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। পিতা-মাতার ভরণ-পোষণ বাধ্যতামূলক বিল পাশ করেছে সংসদে। তাদেরকে ভরণ-পোষণ না করলে দুই লাখ টাকা জরিমানা, অনাদায়ে দুই মাস জেল। এ ধরনের অপরাধ যামীন অযোগ্য বলে বিবেচিত হবে।(১৩)

বৃদ্ধাশ্রমের কার্যক্রম ও ধর্মীয় পরিবেশ

বর্তমান সময়ে এসে বৃদ্ধাশ্রমের প্রয়োজনীয়তা অস্বীকার করা যাচ্ছে না। আমাদের দিলের তামান্না বৃদ্ধাশ্রমের সকল বাবা-মা আপন পরিবারের কাছে ফিরে যাক। পরিবার তাদের সাদরে গ্রহন করুন। বৃদ্ধাশ্রমের কার্যকরিতা হারিয়ে যাক। সকল বৃদ্ধাশ্রম অসহায় নরনারী না পেয়ে নিজেদের দেওলিয়া ঘোষণা করুক। সেই সুদিন ফিরে আসার আগ পর্যন্ত বৃদ্ধাশ্রমের কার্যক্রমে যেন কোন ধরনের অনৈতিকতা প্রকাশ না পায়। সেবার মান নিয়ে যেন কোন প্রশ্ন না উঠে। সেই জন্য কিছু বিষয়ে গুরুত্ব দিতে হবে।

এক. শতভাগ সেবা নিশ্চিত করা। ব্যবসায়ী মনোভাব কিংবা দায়সারাভাব যেন বৃদ্ধাশ্রমের সেবামূলক কাজের স্বাতন্ত্র্য বিনষ্ট না করে দেয়।

দুই. পরিবেশ মনোরম হওয়া। নিরাপত্তায় যেন কোন ঘাটতি না হয়। কক্ষ, বিছানা, চাদর পরিচ্ছন্ন রাখা। হাটাহাটি ও শারীরিক চর্চার জন্যে বিস্তৃত আঙিনা রাখা। কিংবা বিকল্প কোন ব্যবস্থা করা।

তিন. মমতা ও সহমর্মিতাপূর্ণ আচরণ। বৃদ্ধাশ্রম যেহেতু বৃদ্ধ ও অসহায় মানুষের আশ্রয়স্থল, তাই সেবক সেবিকারা যেন তাদের সাথে মমতা ও সহমর্মিতাপূর্ণ আচরণ করেন সে বিষয়টিও নিশ্চিত করতে হবে। এটা মানবিক দায়িত্বও। রূঢ় ও কর্কশ আচরণ কাম্য নয়।

চার. রুচিসম্মত খাবার পরিবেশন করা। এই বয়সে সাধারণ খাবার সবার জন্য প্রযোজ্য নাও হতে পারে। কারো কারো ক্ষেত্রে বিশেষ চাহিদা অনুযায়ী খাবার বন্দোবস্ত করতে হবে। পাশাপাশি অষুধপত্রের সেবনের প্রতি খেয়াল রাখতে হবে।

পাঁচ. মহিলা পুরুষের থাকার জন্যে আলাদা ভবন কিংবা ভিন্ন কামরার ব্যাবস্থা করা। যেন পর্দার ব্যাপারটা গুরুত্ব পায়। এই বিষয়ে কোনভাবেই অবহেলা করা যাবে না।

ছয়. দীনি পরিবেশ গড়ে তোলা। জীবনের শেষ সময়টা যেন দ্বীনী পরিবেশে, ইবাদত-বান্দেগী ও তাওবা-ইস্তেগফারের মাধ্যমেই কাটে সে দিকেও বিশেষ গুরুত্ব দিতে হবে। বৃদ্ধাশ্রমে যদি দ্বীনী পরিবেশ কায়েম করা যায় তাহলে এর মাধ্যমে তারা আত্মিক প্রশান্তিও লাভ করবেন। আত্মিক প্রশান্তি মানুষকে হতাশা, দুঃখ ও বেদনা থেকে মুক্তি দেয়। মানুষ কষ্টের মাঝেও এক অনাবিল সুখের খোঁজ পায়। এজন্য বৃদ্ধাশ্রমকে যদি দ্বীনী তালীম ও ইবাদতের উপযোগী করে তোলা যায় তাহলে অন্তত শেষ জীবনে হলেও তারা নিজেদেরকে আখেরাতমুখী করে ঈমান-আমল নিয়ে দুনিয়া থেকে বিদায় নিতে পারবেন। এ তো একজন মুসলমানের জন্য মহা সফলতা। আল্লাহ তাআলা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে জীবনের শেষ সময়ে আল্লাহ তাআলার হামদ ও তাসবীহ এবং বেশি বেশি তাওবা ইস্তেগফারের আদেশ করে উম্মতকে এ শিক্ষা দিয়েছেন, তারা যেন জীবনের শেষ সময়ে বেশি বেশি আল্লাহ তাআলার হামদ ও তাসবীহ, জিকির-আজকার করেন, ইবাদত-বন্দেগীতে রত থাকেন। আল্লাহ তাআলার দরবারে বেশি বেশি তাওবা-ইস্তেগফার করেন। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন-
فَسَبِّحْ بِحَمْدِ رَبِّكَ وَ اسْتَغْفِرْهُ اِنَّهٗ كَانَ تَوَّابًا
তখন আপনি আপনার প্রতিপালকের প্রশংসাসহ তাঁর পবিত্রতা ঘোষণা করুন ও তার কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করুন। নিশ্চয়ই তিনি অতি ক্ষমাশীল। (সুরা নাসর-৩)।

উপংহার

আমাদের ভুলে গেলে চলবে না আজ যিনি সন্তান, তিনিই আগামী দিনের বাবা কিংবা মা। সবাইকে একদিন বার্ধক্যের স্বাদ নিতে হবে। এ এক অপ্রিয় চরম সত্য। অমোঘ বিধান। আমরা তারুণ্যে মা-বাবাকে নানান অজুহাতে দূরে ঠেলে দেওয়ার পায়তারা করছি। অদূর ভবিষ্যতে যে নিজেদের জীবনে প্রতিফলন হবে না তার গ্যারান্টি কি? তাই পরিবারের বয়োজ্যেষ্ঠ মা-বাবাকে অবহেলা, অবজ্ঞা করা উচিত নয়। মা-বাবা আমাদের যেভাবে আগলে রেখেছেন ঠিক সেভাবে বৃদ্ধ বয়সে তাদের সন্তানতুল্য স্নেহ-ভালোবাসা, সেবা-যত্ন করা উচিত। বৃদ্ধ বয়সে এসে মা-বাবারা যেহেতু শিশুদের মতো কোমলমতি হয়ে যান, তাই তাদের জন্য সুন্দর জীবনযাত্রার পরিবেশ তৈরি করাই সন্তানের কর্তব্য। বৃদ্ধ মা-বাবাকে শেষ বয়সে দূরে ঠেলে নয় বরং সেবা-শুশ্রূষা ও ভালোবাসায় তাদের যত্নে রাখুক সন্তান, এটাই কাম্য। আমাদের পৃথিবীতে বৃদ্ধাশ্রম নামক কারাগারের পরিসমাপ্তি ঘটুক। বৃদ্ধ বাবামায়ের শেষ সসময়টুকু কাটুক আপনজনদের সান্নিধ্যে। জীবন-অধ্যায়ের সুন্দর সমাপ্তি হোক।

সূত্র
(১) প্রথম আলো, ১৭ই জানুয়ারী’১৪
(২) সময়ের প্রয়োজনে পরিবর্তন ডটকম, ২৮শে অক্টোবর’১৮
(৩) দৈনিক জাতীয় অর্থনীতি,২৮ জুলাই ২২
(৪) সিটিজিবার্তা ডটকম, ৬ই মে ’১৯
(৫) দৈনিক ইত্তেফাক, ৯ই ফেব্রুয়ারী’১৪
(৬) দৈনিক যায়যায়দিন, ০২ জুন ১৯
(৭) দৈনিক নয়াদিগন্ত, ০২ জুন ১৯
(৮) দৈনিক প্রথম আলো, ৯ই ফেব্রুয়ারী’ ২০
(৯) বুখারী-৫৯৭১; মুসলিম-২৫৪৮
(১০) বুখারী-২৬২০; মুসলিম-১০০৩
(১১) মুসলিম-৪৬২৭, আহমাদ-৮৫৫৭, শু‘আবুল ঈমান-৭৫০০।
(১২) আবু দাউদ-৩৫৩০; ইবনু মাজাহ-২২৯২
(১৩) http://bdlaws.minlaw.gov.bd

আগের সংবাদছাগল চুরির অভিযোগে আওয়ামী লীগ নেতা কারাগারে
পরবর্তি সংবাদমাইক্রোবাসের ১১ যাত্রী নিহত: গেটম্যানের বিরুদ্ধে মামলা