পর্দা মেনে পরীক্ষা দিতে চাওয়ায় ছাত্রী হেনস্তার অভিযোগ!

||তাসনিফ আবীদ||

পর্দা মেনে মুখ ঢেকে পরীক্ষা দেওয়ার সময় শিক্ষক কর্তৃক ছাত্রী হেনস্তার অভিযোগ উঠেছে। ব্রাহ্মনবাড়িয়া সরকারি কলেজের ইংরেজি বিভাগের অনার্স প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী আমাতুল্লাহ জান্নাতুল বাকিয়া এই অভিযোগ করেন। অভিযোগে তিনি ব্রাহ্মনবাড়িয়া সরকারি কলেজের ম্যানাজমেন্ট বিভাগের প্রধানকে অভিযুক্ত করেন।

সোমবার (১৬ অক্টোবর) সন্ধ্যা ৭ টায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিজেই ঘটে যাওয়া ঘটনার বর্ণনা দিয়ে আমাতুল্লাহ লিখেন, “আমি ইংরেজি বিভাগের অনার্স প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী। ১৬ অক্টোবর আমার ফাস্ট ইয়ার ফাইনাল পরীক্ষা ছিলো। ব্রাহ্মনবাড়িয়া সরকারি কলেজে আমার সিট পড়েছে। আমি যথারীতি পর্দা মেনে চলার চেষ্টা করি আলহামদুলিল্লাহ। স্বভাবতই আমি মুখ ঢেকেই পরীক্ষা দিচ্ছিলাম।

৪০ মিনিট সময় বাকি আছে পরীক্ষা সময় শেষ হওয়ার, এমন সময় এক স্যার এসে মুখ ঢেকে পরীক্ষা দেওয়া নিয়ে কথা বলে। উনি এসেই আমার খাতা নিয়ে নেয়। মুখ খোলার জন্য বলে। আমি উনাকে বলি যে, ম্যাম আমাকে সনাক্ত করুক। অই স্যার আমাকে ধমক দিয়ে বলেন যে, আমাকে অই লোকের সামনেই মুখ দেখাতে হবে অন্যথায় উনি আমার পরীক্ষা বাতিল করবেন। তারপর এক পর্যায়ে উনি আমাকে চোর, বেয়াদব ডাকা শুরু করে। আমার কষ্টে রীতিমতো হাত পা কাঁপছিলো! আর চোখ দিয়ে পানি এসে গেছিলো। তারপর আমি রাগে খাতা বা পরীক্ষার তোয়াক্কা না করে হল থেকে বের হয়ে যাই।”

এদিকে ঘটনার সত্যতা জানার জন্য আমাতুল্লাহ জান্নাতুল বাকিয়ার পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তার বড় ভাই মাইনুল হাসান জুবায়ের ফাতেহকে বলেন, আমরা চাচ্ছি সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এ বিষয়ের প্রতিবাদ জানাতে। এবং ভবিষ্যতে যেনো আর কেউ এরকম আচরণ করতে না পারে সেই ব্যাপারে দেশবাসীকে সতর্ক করতে। এছাড়া আমরা বিষয়টি নিয়ে কলেজের প্রিন্সিপাল ও ডিসি মহোদয়সহ ৮জনকে স্মারকলিপি দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছি।

অপরদিকে বিষয়টি নিয়ে ব্রাহ্মনবাড়িয়া সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর খান রফিকুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে ফাতেহকে তিনি বলেন, এটা যেহেতু একটা পাবলিক পরীক্ষা যেভাবে নিয়মকানুন করা আছে আমাদের সেগুলো মেনেই সবকিছু করতে হয়ে। আমরা তো ক্লাসে ছাত্রীদেরকে মুখ খোলার জন্য বলি না। আপনি ছাত্রীদের সঙ্গে কথা বলে দেখতে পারেন। কিন্তু এখন পরীক্ষার মধ্যে শিক্ষার্থীরা নানা অসাধুপায় গ্রহণ করায় বোর্ড কঠোর হচ্ছে। নিয়মকানুন কঠিন হচ্ছে। যে হিসেবে এডমিট কার্ডের সঙ্গে আমাদেরকে চেহারা মিলিয়ে শিক্ষার্থীর পরিচয় শনাক্ত করতে হয়।

নারী শিক্ষক দিয়ে শনাক্তের বিষয়টি সম্ভব ছিল কী না? জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি তো তখন সেখানে ছিলাম না। তবে যতটুকু শুনেছি, ওই শিক্ষার্থীকে ম্যাডামের সামনে মুখ খুলতে বলার পরও সে তা করেনি।

আগের সংবাদফিলিস্তিনের শহীদদের স্মরণে শনিবার বাংলাদেশে রাষ্ট্রীয় শোক
পরবর্তি সংবাদগাজীপুরের সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীরকে ক্ষমা করলো আওয়ামী লীগ