
আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
ভারতের নামকরা বিশ্ববিদ্যালয় বেনারস হিন্দু ইউনিভার্সিটি বা বি এইচ ইউ-এর একটি পরীক্ষার প্রশ্নপত্রে গোমাংস নিয়ে দুটি প্রশ্ন থাকায় সেখানকার ছাত্ররা বিক্ষোভ দেখাচ্ছে। সংবাদ সংস্থা এএনআই জানিয়েছে, হোটেল ম্যানেজমেন্ট এবং ক্যাটারিং টেকনোলজির ছাত্রদের দ্বিতীয় সেমিস্টারের প্রশ্নপত্রে দুটি প্রশ্ন ছিল গোমাংস সংক্রান্ত। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ অবশ্য বলছে তারা ছাত্রছাত্রীদের তৈরি করে আন্তর্জাতিক মানের হোটেলে কাজ করার জন্য। তাই গোমাংসের বিষয়ে তাদের জানাটাই বাঞ্ছনীয়।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলি জানাচ্ছে, ১৫ নম্বরের একটি প্রশ্নে জানতে চাওয়া হয়েছিল ‘কত ধরণের গোমাংস হয়? সংজ্ঞা লেখ’। আর দ্বিতীয় প্রশ্নটি ছিল ‘স্টক’ কী দিয়ে বানানো হয় – সেখানেও গোমাংসের ঝোল ব্যবহার করা হয় কী না, তা জানতে চাওয়া হয়েছিল।
ছাত্র বিক্ষোভের জেরে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ একটা বিবৃতি প্রকাশ করেছে। সেখানে বলা হয়েছে যে, এবছর থেকেই চালু হওয়া হোটেল ম্যানেজমেন্ট এবং ক্যাটারিং টেকনোলজির ছাত্রছাত্রীদের খাবার তৈরি এবং রান্নার বিষয়ে শিখতেই হয়। আমরা ছাত্রছাত্রীদের সেই সব বিষয়েই শেখাচ্ছি, যা ভারতে বা ভারতের বাইরে বিভিন্ন দেশে খাদ্য হিসাবে বিবেচিত হয়, যাতে তারা চাকরীর খোঁজ করার সময়ে প্রস্তুত থাকে।এতে বলা হয়, যে প্রশ্ন দুটি নিয়ে বিতর্ক হচ্ছে, সেটা সিলেবাসেরই অংশ। ভারতের প্রতিষ্ঠিত হোটেল ম্যানেজমেন্ট শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে যে সিলেবাস পড়ানো হয়, বি এইচ ইউতেও সেটাই পড়ানো হচ্ছে। এ নিয়ে অনর্থক বিতর্ক তৈরি করা হচ্ছে।
সাম্প্রতিক সময়ে ভারতে হিন্দুত্ববাদীরা বাড়িতে গোমাংস রাখা হয়েছে অথবা গোমাংস নিয়ে যাওয়া হচ্ছে এমন গুজব ছড়িয়ে একাধিক মুসলমানকে পিটিয়ে মেরে ফেলেছে এমন ঘটনা ঘটেছে। হাট থেকে বৈধভাবে গরু কিনে নিয়ে যাওয়ার সময়েও পিটিয়ে মেরে ফেলার ঘটনা ঘটেছে রাজস্থানে। উত্তরভারতের বিভিন্ন রাজ্যে গরু পরিবহন রুখতে হিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলোর নজরদার বাহিনী তৈরি করেছে। বিজেপি-শাসিত একাধিক রাজ্য সেখানে গোমাংস খাওয়া বা খাওয়ার জন্য গরু জবাই করার ওপরে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। হিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলো গোমাংসের ইস্যুতে মুসলমান সম্প্রদায়কেই টার্গেট করে থাকে।
সূত্র: বিবিসি