
ফাতেহ ডেস্ক:
ভারতের উত্তর প্রদেশে জ্ঞানবাপী মসজিদ বিতর্কিত করার চেষ্টার মধ্যেই হিন্দুত্ববাদীদের নজর পড়েছে মথুরায় শাহি ঈদগাহ মসজিদের ওপর। অনেকটা জ্ঞানবাপী মসজিদের ধাঁচেই মথুরার শাহি ঈদগাহ মসজিদে সার্ভের নির্দেশ দিয়েছে উত্তরপ্রদেশের এক আদালত। আগামী ২ জানুয়ারি অর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়া ওই মসজিদ চত্বরে সমীক্ষা করবে।
আধ্যাত্মিক শহর মথুরাকে ঘিরে হিন্দুদের বিশ্বাস, ওই জায়গাটি শ্রীকৃষ্ণের জন্মস্থান। কৃষ্ণজন্মভূমি চত্বরেই রয়েছে শাহি ঈদগাহ মসজিদ। ইতিহাসবিদদের একাংশের দাবি, প্রাচীন কেশবনাথ মন্দির ভেঙেই মসজিদটি তৈরি করেন আওরঙ্গজেব। ১৯৩৫ সালে ওই মন্দির চত্বরের মালিকানা মথুরার রাজার হাতে সঁপে দেয় এলাহাবাদ হাই কোর্ট। পর্যায়ক্রমে সেই স্বত্ব বর্তায় বিশ্ব হিন্দু পরিষদের ঘনিষ্ঠ শ্রী কৃষ্ণভূমি ট্রাস্টের হাতে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই দুই ধর্মের মানুষের মধ্যে তৈরি হয় সংঘাত। অবশেষে ১৯৬৮ সালে এক চুক্তির মাধ্যমে জমির মালিকানা হিন্দুদের হাতে থাকলেও মসজিদটির রক্ষণাবেক্ষণ করার অধিকার পায় মুসলিম পক্ষ।
আপাতত মুসলিম পক্ষের হাতে মসজিদটির রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব থাকলেও হিন্দুদের দাবি ওখানেই জন্ম হয়েছিল শ্রী কৃষ্ণের। একাধিক হিন্দু সংগঠন সপ্তদশ শতকের ওই মসজিদটি ভেঙে দেয়ার দাবিতে মথুরার ওই স্থানীয় আদালতে মামলা দায়ের করে। হিন্দু সেনা নামের একটি সংগঠনের তরফে মামলা দায়ের করেছিলেন আইনজীবী বিষ্ণু শর্মা। তার দায়ের করা মামলার ভিত্তিতে মথুরার স্থানীয় আদালত জানিয়ে দিয়েছে, আগামী ২ জানুয়ারি বিতর্কিত ওই মসজিদের সার্ভে করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে এএসআইকে। ২০ জানুয়ারির আগে আদালতে রিপোর্ট জমা দেবে অর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়া।
‘বাবরি তো ঝাকি হ্যায়, মথুরা কাশী বাকি হ্যায়।’ নয়ের দশকে করসেবকদের এই হুঙ্কার ভোলার নয়। মথুরা ও কাশী নিয়ে হিন্দুত্ববাদীদের নানা দাবি এর আগেও শোনা গিয়েছে। ‘অল ইন্ডিয়া আখড়া পরিষদ’কে বলতে শোনা গিয়েছিল, রাম মন্দিরের নির্মাণ শেষ হলে মথুরা ও কাশীর মন্দিরগুলোকে ‘মুক্ত’ করা হবে। ওই বিতর্কের আবহে আদালতের এই নির্দেশ বেশ তাৎপর্যপূর্ণ।
সূত্র : সংবাদ প্রতিদিন