যেভাবে এগুচ্ছে ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়

|| তাসনিফ আবীদ ||

মাদরাসা শিক্ষাব্যবস্থার আধুনিকায়ন ও যুগোপযুগী করতে ২০১৩ সালে দেশে প্রথমবারের মতো প্রতিষ্ঠিত হয় ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়। অনেক আন্দোলন সংগ্রামের ফসল এই বিশ্ববিদ্যালয় মাদরাসা শিক্ষার মানোন্নায়নে কীভাবে কাজ করছে? এ বিষয়ে কথা হয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে।

ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আব্দুর রশীদ বলেন, ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয় যেন পূর্ণাঙ্গ, আধুনিক, যুগোপযোগী, অসাম্প্রদায়িক, শান্তিপ্রিয় এবং দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ জাতি গড়তে সহায়তা করতে পারে- সেই লক্ষ্যে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। আমরা পড়াশোনার মানোন্নয়নে গুরুত্ব দিচ্ছি। সবার সঙ্গে সমন্বয় করে যুগোপযোগী ও কর্মমুখী শিক্ষার বাস্তবায়নই আমাদের উদ্দেশ্য।

মাদরাসা শিক্ষার আধুনিকায়নে আরবি বিশ্ববিদ্যালয় কীভাবে কাজ করে যাচ্ছে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়টির প্রভাষক মোঃ জহিরুল ইসলাম জানান, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো একটি এফেলিয়েট বিশ্ববিদ্যালয় হলো ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়। এই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মাদরাসা শিক্ষাধারার ফাযিল/স্নাতক ও কামিল/স্নাতকোত্তর পর্যায়ের ডিগ্রী প্রদান করা হয়। মাদরাসা শিক্ষার উন্নয়ন ও আধুনিকায়ন, ফাযিল/স্নাতক, কামিল/স্নাতকোত্তর পর্যায়ে শিক্ষাক্রম/পাঠ্যপুস্তক অনুমোদন, শিক্ষার গুণগত মান উন্নয়ন, মাদরাসা শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ, শিক্ষাঙ্গনগুলোর পরিবীক্ষণ ও পরীক্ষা পরিচালনা-সহ সার্বিক তত্ত্বাবধান আমরা করে থাকি।

‘এছাড়া আমাদের কাজকে আরো তরান্বিত করতে কেরানীগঞ্জে ২০ একর এলাকাজুড়ে ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস নির্মাণসহ প্রয়োজনীয় ভৌত অবকাঠামো উন্নয়নে প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। যা বাস্তাবায়ন হলে মাদরাসায় অধ্যায়নরত শিক্ষার্থীদের দেশের ভেতরে ও বাইরে দক্ষ জনশক্তিতে পরিণত করাসহ নানা উদ্যোগ বাস্তায়ন হবে।’ যুক্ত করেন তিনি

বিভিন্ন কারণে আলিয়া মাদরাসার শিক্ষার্থীদের মাঝে বর্তমানে আরবি ভাষায় বেশ দুর্বলতা থেকে যাচ্ছে। যা উচ্চশিক্ষায় গিয়ে তাদেরকে ভোগাচ্ছে। এ নিয়ে কোনো উদ্যোগ আছে কী না জানতে চাইলে তিনি বলেন, মাদরাসা শিক্ষার্থীদের জন্য আরবি ভাষা শিক্ষাকে আরো সহজ ও সাবলীল করতে এবং আরবি ভাষায় পারঙ্গম করে তুলতে ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ে তৈরি হবে আলাদা ‘আরবি ভাষা ইনস্টিটিউট’। স্থায়ী ক্যাম্পাসের নির্ধারিত তিন একর জমিতে সৌদি সরকারের অর্থায়নে স্থাপিত হবে ‌আরবি ভাষা ইনস্টিটিউট।

এদিকে আরবি বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে কথা হয় আলিয়া মাদরাসা সংশ্লিষ্ট কয়েকজনের সঙ্গে।তারা মনে করছেন, সিলেবাসের আধুনিকায়নের নামে আলিয়া নেসাবের মাদরাসা শিক্ষায় আরবি ও কুরআন হাদীসের শিক্ষার সঙ্কোচন হচ্ছে দিন দিন। বাংলাদেশের লাখ লাখ মাদ্রাসা শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের প্রায় শতাব্দীকালের প্রাণের দাবি ছিলো ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়। বিশ্ববিদ্যালয়টি উচ্চশিক্ষায় আরবি ও কুরআন হাদিসের শিক্ষাকে যথেষ্ট গুরুত্ব দিচ্ছে। কিন্তু আলিয়া মাদরাসার প্রাথমিক ও মাধ্যমিকে আরবি ও কুরআন হাদীসের শিক্ষার সঙ্কোচনের কারণে উচ্চশিক্ষায় এসে শিক্ষার্থীদের খেই হারাতে হয়। যদি ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয় এ বিষয় উদ্যোগী হয়ে প্রাথমিক ও মাধ্যমিকে আরবি ও কুরআন হাদীসের শিক্ষাকে গুরুত্বপূর্ণ স্থান দিতে পারে তাহলে উচ্চশিক্ষায় বিশ্ববিদ্যালয়টির সার্বিক উদ্যোগ সফলতার মুখ দেখবে। না হয় দিন দিন আলিয়া মাদরাসা থেকে শিক্ষার্থীরা দাখিল বা আলিম শেষ করে জেনারেলে চলে যাবে।

আগের সংবাদআফগানিস্তানে কাউকে আক্রমণের সুযোগ দিবে না তালেবান
পরবর্তি সংবাদফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দিতে প্রস্তুত যুক্তরাজ্য