|| তাসনিফ আবীদ ||
চলতি মাসের শুরুর দিকে দেশের কওমি মাদরাসাগুলোর সর্বোচ্চ অথরিটি আল-হাইআতুল উলয়া লিল-জামি’আতিল কওমিয়া বাংলাদেশ’র উদ্যোগে পুনঃগঠন করা হয় জাতীয় মুফতি বোর্ড। জামিয়া ইসলামিয়া দারুল উলুম মাদানিয়া যাত্রাবাড়ী বড় মাদরাসার মুহতামিম আল্লামা মাহমুদুল হাসানকে চেয়ারম্যান এবং মারকাযুদ দাওয়াহ ইসলামিয়া ঢাকা’র আমিনুত তালিম মুফতি আব্দুল মালেককে সদস্যসচিব করে ১৭ সদস্যবিশিষ্ট একটি কমিটিও গঠন করা হয়।
বিশ্বের মুসলিম অমুসলিম বিভিন্ন দেশে ইসলামি শরিয়া কেন্দ্রীক কোনো জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সমস্যা নিরসনের জন্য কাজ করে থাকে দেশের জাতীয় মুফতি বোর্ড বা জাতীয় ফতোয়া বোর্ড। অনেক প্রতীক্ষার পর বাংলাদেশেও জাতীয় মুফতি বোর্ড পুনঃগঠন করা হলো। এখন বোর্ডটি কীভাবে কাজ করবে? কোন কোন বিষয়গুলো গুরুত্ব পাবে এর দায়িত্বশীলদের কাছে? এ বিষয়ে জানতে চেয়েছিলাম জাতীয় মুফতি বোর্ড’র সদস্য ও আল জামিয়াতুল ইসলামিয়া ইদারাতুল উলুম ঢাকা আফতাবনগর মাদরাসার মুহতামিম মুফতি মোহাম্মদ আলীর কাছে।
তিনি জানান, জাতীয় মুফতি বোর্ড আগে থেকেই ছিল। কিন্তু এবার আল-হাইআতুল উলয়া লিল-জামি’আতিল কওমিয়া বাংলাদেশ’র চেয়ারম্যানের উদ্যোগে সংগঠনটি পুনঃগঠন করা হলো। আমাদের কাজ হবে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক বিষয়ে মানুষকে সচেতন ও দ্বীন মেনে চলার পথ সহজ করার লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় ফতোয়া প্রদান করা।
‘আপনারা জানেন বর্তমানে অভিশপ্ত ট্রান্সজেন্ডার মতবাদ বিকট আকার ধারণ করেছে। তাই এই বিষয়ে জাতিকে সচেতন করার লক্ষ্যে ফতোয়া দিয়েছে জাতীয় মুফতি বোর্ড। এর পাশাপাশি এ বিষয়ে প্রচার পত্র প্রকাশের উদ্যোগও নেওয়া হয়েছে। প্রদত্ত ফতোয়ার আলোকে সারসংক্ষেপে একটি রিসালা প্রকাশ করা হবে। যা আলেম-ওলামা, মসজিদের ইমাম-খতিব এবং ওয়ায়েজদের এ বিষয়ে আলোচনা করতে সহায়ক হবে। এছাড়া জাতীয় ফতোয়া বোর্ডের একটি প্রতিনিধিদল সরকারের সঙ্গে এ বিষয়ে আলোচনা করবেন।’ যুক্ত করেন তিনি
মুফতি মোহাম্মদ আলী জানান, এর আগেও জাতীয় মুফতি বোর্ড হিজবুত তাওহিদ ফেতনার বিরুদ্ধে মানুষকে অবগতি করার জন্য ফতোয়া প্রকাশ করেছিল। যা সাধারণ মানুষের জন্য ইমান বাঁচাতে খুবই সহায়ক হয়েছিল।
জাতীয় মুফতি বোর্ড ওয়েবসাইট তৈরির মাধ্যমে তাদের ফতোয়াকে সারাবিশ্বে ছড়িয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করবে কীনা এবং এই বোর্ডে সাধারণ মানুষ লিখিতভাবে ফতোয়া চাইতে পারবে কী না জানতে চাইলে সংগঠনটির এই সদস্য বলেন, এ বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। সময়টা যেহেতু অনলাইনের তাই সামনে অনলাইনের মাধ্যমে হয়তো জাতীয় মুফতি বোর্ড-এর ফতোয়াগুলো প্রকাশ করা হবে।
প্রসঙ্গত, চেয়ারম্যান ও সদস্য সচিব ছাড়া মুফতি বোর্ডের সদস্যরা হলেন, মাওলানা সাজিদুর রহমান, মাওলানা আব্দুল কুদ্দুছ, মাওলানা মুফতি রুহুল আমীন, মাওলানা মাহফুজুল হক, মুফতি আরশাদ রাহমানী, মুফতি মোহাম্মাদ আলী, মুফতি ফয়জুল্লাহ, মুফতি জসিমুদ্দীন, মুফতি এনামুল হক, মুফতি শামসুদ্দিন জিয়া, মুফতি মুজিবুর রহমান (সিলেট), মুফতি মিজানুর রহমান সাঈদ, মুফতি দিলাওয়ার হুসাইন, মুফতী আব্দুস সালাম (ফরিদাবাদ) ও মুফতি কেফায়াতুল্লাহ (হাটহাজারী)।