দ্বিধা
লেবুর ফুলে একলা হাওয়া
মার্কারি–দিন যায়
জীবনব্যাপী দূরের তুমি
বিষণ্ণতা প্রায়
বৃষ্টি পড়ে, একটা চড়ুই
রেলিঙে এক ফাঁকে
দেখেছে কার চুলের কাঁটা
ঘুমায় বইয়ের তাকে
যোগাযোগের হাওয়ায় কাঁপে
সাঁকোটা উত্তরে
তোমার বাড়ির বাদাম গাছও
আমার লেখা পড়ে—!
কেটলিপোড়া বাষ্পতে ঘ্রাণ
মরীচিকায়, জ্বলো
বাকির টাকার চায়ের মতো
দ্বিধায় টলমলো
অহেতু এই জংশনে কেউ
থামেনি একবার
মানুষ সে তার দূরের ছায়া
সরোদ–পারাপার!
তুলারাশি
তুমি কি টিলার ছোট মেয়ে—তুলারাশি
শাসনে রেখেছো হাওয়া আর উপকূল!
অ্যানাস্থেশিয়া ভেসে যায় বুদ্বুদে
প্রবীণ বাতাসে কেঁপে ওঠে ধুন্দুল—
আমরা শুধুই এপিটাফ পড়ে পড়ে
পাশার ভেতরে খুঁজে গেছি নদীতীর
পোড়া ঘাসগুলো চিনিয়ে দিচ্ছে দূর
এইসব কত সাব–অল্টার্ন ভীড়!
তুমিও বেদের মেয়ে ছিলে এককালে
জোছনা অথবা অন্য যেকোনো নামে
হাঙরের ভয়ে নিভে গেছে ভরা চাঁদ
সমুদ্র–শোরে বিপুল মধ্যযামে—
পাখি
১.
পাখিরা কত দিন পাখি থাকে—
যদি না গমের বাগান
পিঠ ভরে উঁচু করে গান!
একেকটি শেকড়
আদতে ওড়ার বাসনা থেকে আরও নিচে যায়
আর হাওয়াকে শেখায় ডানা—পানির ওপর, বাবলের দৃশ্য জুড়ে
২.
পাখিটা বসে আছে পাখি হওয়া থেকে দূরে—
সমুদ্র
খুব ভোর। আমাদের ঘুম ভাঙে। পাথরের ওপর আমরা শুয়ে পড়ি আবার। পোকাদের অনন্ত গুঞ্জনের ভেতর জড়ো হয় সমুদ্রের একাকিত্ব আর ঢেউয়ের নীল নীল সব আওয়াজ। শরীর ক্লান্ত হলে দূরে দোকানী মেয়েটার দিকে তাকিয়ে কুড়ানো নুড়ির থেকে কিছু ছুড়ে দিই সমুদ্রে—একজন সাইকেল–আরোহী ক্যারিয়ারে ধোপাদের পরিচ্ছন্ন কাপড় উড়িয়ে দিচ্ছে সূর্যাস্তের তরমুজ খেতে—আমরা হাই তুলি—
বৎসরের সমস্ত কুয়াশা জমা হতে থাকে পরিত্যক্ত এক ট্রাকের কাঁচে, পাশেই ধানবীথিকার খাঁড়ি, সমুদ্রের গভীরে ডুবতে ডুবতে একটা খরগোশের মনে হয়—ধর্ষিতা মেয়েটার হেমন্তও ফাঁকা প্ল্যাটফর্মের মতো বিষণ্নমান—
বাতাসের কথোপকথনের মধ্যে কারা যেন লুকিয়ে রাখছে সমুদ্রে নামার পোশাক—
লেখক : তরুণ কবি ও গদ্যকার