হাসান রোবায়েতের কবিতা

মাটির জীবনবর্তী দূরে

দিন চলে যাচ্ছে—স্বভাববশত—দরজা খুলে দিই, জানালা তাকিয়ে আছে নিধুয়া বনের দিকে—কারা যেন খাটিয়ায় লাশ নিয়ে চলে যাচ্ছে সমুদ্রের ওপার—ভাবি, লোকটার দেনা ছিল কিনা! পাওনাদারের কথা হয়তো রাখতে পরে নি শেষ দিন—এই অগভীর দুপুরে তারই ছোট ছেলে: যে এখনো মৃত্যুকে বোঝে নি, হারায়েছে লাল বল মাঠের পাশের জঙ্গলে—

অজস্র হরিণের রক্তে লাল হচ্ছে সন্ধ্যার রঙ—মাটির জীবনবর্তী দূরে ওই যে কুশারের বন ঘন রক্তে ছেয়ে গেছে মাঠ—পিঁপড়ারা মুখে করে নিয়ে যাচ্ছে কবরের মাটি—

স্বভাববশত, চলে যাচ্ছে দিন—

সূর্যাস্তের রঙ

বাতাস বয়ে যাচ্ছে। অ্যাকাশিয়া বনের উপর দিয়ে তারা চলে যাচ্ছে কোথাও। দূরে, গড়ের ঢাল বেয়ে একজন মানুষ গরুর খুঁটিতে আঘাত করতে করতে ভাবছে—একদিন হুট করে অপঘাতে মরে গেলে পৃথিবীর সবচেয়ে ছোট প্রজাপতির রঙও হবে না মলিন, গোর-ফেরত যাত্রীদের পায়ে লেগে থাকা ধুলা সন্ধ্যার রজতাভ আলোয় ছড়িয়ে পড়বে হলদি ফুলের শিশিরে। মেয়েটা কাঁদবে কি—!

বঙ্কু মাঝির শেষ না হওয়া গল্প হয়তো একদিন অ্যাকাশিয়ার বক্রহলুদ ফুলে ঝরে থাকবে সারা মাঠ—!

সন্ধ্যা হচ্ছে।আকাশমণি গাছের ফাঁকে ফাঁকে সূর্যাস্তের রঙ কাটা মুরগির মতো লাফিয়ে উঠছে মুহুর্মুহু—

লেখক : বিখ্যাত কবি ও গদ্যলেখক 

আগের সংবাদতুর্কি দরবেশ সাঈদ নুরসি ও তাঁর বিস্ময়কর আধ্যাত্মিক মিশন
পরবর্তি সংবাদসুলাইমান সাদী’র কবিতা