ইমরান আল হাদী:
সরিষা ক্ষেতময় সারাদিন
মধুভার মৌচাকে ভায়োলিন
কাঠচেরা হাহাময় সারাদিন
করাতের হ্রেসায় সমাসীন
বিষখালী নদী তীর বুধবার
বাকু বাদশাহর মজলিশ
জঙ্গমে কাঁপে কচি বুক তার
আজনবি চোখেতে সে নবিশ
ঠোঁটের উপর ফোটে তাসাহুদ
মুনাজাতে ঝরে মোর সে দাবি
রাত্রির রোনাজারে বুদবুদ
খোয়াবের মশকোতে সে ছবি
নালিশের লঘুভার ফরিয়াদে
হায়াতুননেছা নাম ইয়ায়াদে।
গৃহস্থ-ভরা দিন দুধভাত
বলক ফোটা ভাতে স্বাদুবাস
চৈতি দুপুরে ভাতঘুম মৌতাত
বঁধুয়ার গতরে কারুবাস
ছায়ানীল গগনে উড়োচিল
মাতৃ কুক্কুট ডানাতে ঘনঢাল
ফি-বছর ভাঙে যে নদীকূল
কৃষানের ভরসা পয়মাল
তবু সে জোড়ে হাল ব্যথাতুর
গোলাতে সোনা রং বীজধান
দু-চোখে ফসলের নেশাতুর
মাতৃ আচলে শস্য আঘ্রাণ
যেন সে কৃষানের ডুবুচর
হায়াতুননেছা বাধে বালিঘর।
ইকারুসের ডানাতে নমরুদ
কুমতি আসমানে ছোড়ে তীর
সমাচার ঠোঁট ছোঁয়া হুদহুদ —-
দূতালি, সুলেমান সে নবীর
নৈর্ঋতে উড়ে আসে আবাবিল
সহস্র মাতঙ্গ ——–ধূলিময়
নখরে ছুড়ে যায় কালোতিল
আবরাহা মরুভুমে লয় হয়
মহিষের শিং নাচে দামোদর
ঘনঘোর রাতভর কি বাদল
নদী চিরে পার হয় যে সাগর
সে নাম মনে রাখে মহাকাল
ইতিহাস মেনে এ অবরোধ
হায়াতুননেছাতে নেশাবুদ।
বাতাসে আজো ভাসে ইভ-নাম
বায়ুতে আদমের ——সে স্বর
কোন প্রেম খেয়েছিল যে আদম
হাওয়াতে বিস্মৃত তমোহর
ঘাতকের ইস্পাতে লহু-লাল
বেলালের ধ্বনিতে সরগম
ঘুরেঘুরে ফিরে সে মহাকাল
কে ডাকে দয়াময় হরদম
কাবিলে সঁপে দেই দেহধর
পথে নামে ক্ষিণায়ু শেষ রোদ
সন্তাপ জুড়ে নামে কালাজ্বর
খুলেখুলে যায় শেষ ঘনরাত
তুমি মোর পবিত্রা রাহবার
হায়াতুননেছা তে অধিকার।