
ফাতেহ ডেস্ক :
খতমে নবুওয়াত সংরক্ষণ কমিটি বাংলাদেশের উদ্যোগে কয়েক হাজার মানুষের উপস্থিতিতে সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে ঐতিহাসিক খতমে নবুওয়াত মহাসম্মেলন। আজ ২৯ নভেম্বর শুক্রবার মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখানের কুচিয়ামোড়া কলেজ ময়দানে এ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
সম্মেলনে বক্তারা বলেন, কাদিয়ানীরা কাফের। এ ব্যাপারে সকল মুসলমান একমত। যারা তাদের অমুসলিম মনে করে না তারাও কাফের। তাদের কুফরির ব্যাপারে নতুন করে কিছু বলার নাই। পৃথিবীর সব মুসলিম দেশেই রাষ্ট্রীয়ভাবে তারা কাফের। একমাত্র বাংলাদেশ এর ব্যতিক্রম।
বক্তারা বলেন, কাদিয়ানিরা এদেশে একটা কাদিয়ানি রাষ্ট্র কায়েম করতে চায়। সে লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে। সারাদেশে তাদের ১০০-এর অধিক কেন্দ্র রয়েছে। রাষ্ট্রের সব সেক্টরে লোক থাকার ফলে তারা বাধাহীন কাজ করছে। প্রাথমিক পঞ্চগড়কে তাদের টার্গেট বানিয়েছে। কাদিয়ানী নেতা অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল আমজাদ খান চৌধুরী প্রাণ-আরএফএল এবং সিজান-এর মাধ্যমে কাদিয়ানীবাদ প্রতিষ্ঠা করছেন।
উপস্থিতি জনতা তখন প্রাণ-আরএফএল-সিজানসহ কাদিয়ানী পণ্য না কেনার শপথ গ্রহণ করেন।
বক্তারা আরো বলেন, আল্লামা শাহ আহমাদ শফী সাহেব সকলকে একসাথে কাদিয়ানী-বিরোধী আন্দোলন জোরদার করার নির্দেশ দিয়েছেন এবং বিভাগওয়ারী মহাসমাবেশের মাধ্যমে ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে চূড়ান্ত মহাসমাবেশের প্রস্তুতি নিতে বলেছেন। খতমে নবুওয়াত সংরক্ষণ কমিটি বাংলাদেশকে সে উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে।
তারা বলেন, সরকার যদি এ দাবি মেনে না নেয় তাহলে তাদেরকে বাধ্য করতে হবে।
বক্তারা তাদের বক্তব্যে আরো বলেন, পীর সাহেব মধুপুর খতমে নবুওয়াত আন্দোলনের এক সিপাহসালার। তিনি ময়দানের বীর। তার নেতৃত্বে ভণ্ড নবী বরকতুল্লাহসহ অনেক আন্দোলন সফল হয়েছে। তিনি ডাক দিলে এ দেশের সব ধর্মপ্রাণ মুসলমান সাড়া দেবেন। তাই তাকেই এ দায়িত্ব নিতে হবে। আমরা তার পাশে থাকবো ইনশাআল্লাহ।
মুন্সিগঞ্জ ১ আসনের মাননীয় সংসদ সদস্য জনাব মাহী বি চৌধুরী বলেন, আমরা যে নবীর মাধ্যমে দীন পেয়েছি তিনি আমাদের শেষ নবী।খতমে নবুওয়াত না মানলে কোনো মানুষ মুসলমান থাকতে পারে না। সুতরাং তারা কাফের।
সভাপতির বক্তব্যে আল্লামা আবদুল হামিদ পীর সাহেব মধুপুর বলেন, এ সরকারের কাছে আমাদের এক দফা এক দাবি, কাদিয়ানীদেরকে রাষ্ট্রীয়ভাবে অমুসলিম ঘোষণা। বর্তমান সরকার যদি এ কাজটি করেন তাহলে চিরদিনের জন্য অবিস্মরণীয় হয়ে থাকবেন।
খতমে নবুওয়াত সংরক্ষণ কমিটি বাংলাদেশের আমীর আল্লামা আবদুল হামিদ পীর সাহেব মধুপুর-এর সভাপতিত্বে এবং মাওলানা আবুল কাশেম আশরাফী, হাফেজ মাওলানা আহমাদুল্লাহ ও মাসউদুর রহমান আইয়ূবীর পরিচালনায় বিশেষ মেহমান হিসেবে বক্তব্য রাখেন হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের মহাসচিব আল্লামা জুনাইদ বাবুনগরী, বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশের মহাসচিব আল্লামা আব্দুল কুদ্দুস, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের মহাসচিব আল্লামা নূর হোসাইন কাসেমী, আন্তর্জাতিক মজলিসে তাহাফফুজে খতমে নবুওয়াত বাংলাদেশের মহাসচিব মাওলানা নুরুল ইসলাম জিহাদী, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের মহাসচিব মাওলানা মাহফুজুল হক, আল্লামা আহমদ শফী-এর খাস শাগরিদ ও খলীফা মাওলানা নুরুল আমিন, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী আলহাজ নুরুজ্জামান শিকদার, কেয়াইন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জনাব মোঃ আশরাফ আলী, মাওলানা জাফরুল্লাহ খান, শাইখুল হাদীস মাওলানা আজিজুল হক, খতমে নবুওয়াত আন্দোলনের আমীর মুফতি নুর হোসাইন নুরানী, আমরা ঢাকাবাসীর সভাপতি আলহাজ শামসুল হক ও মহাসচিব জনাব জামাল নাসের চৌধুরী, খতমে নবুওয়াত সংরক্ষণ কমিটি বাংলাদেশের নায়েবে আমীর মাওলানা রশীদ আহমাদ, মাওলানা আবু আম্মার আব্দুল্লাহ, মহাসচিব মুফতি মুহাম্মদ ইমামুদ্দিন, সহ- সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা উবায়দুল্লাহ কাসেমী, প্রচার সম্পাদক আলহাজ নাসির মাহমুদ, ঢাকা মহানগর সভাপতি মাওলানা রশিদ আহমাদ, মুফতি সাখাওয়াত হোসাইন রাজী, হাফেজ মাওলানা আব্দুল খালেক শরীয়তপুরী, মুফতি মাসউদুল কারীম, মাওলানা আব্দুল্লাহ বিক্রমপুরী, মাওলানা ইমদাদুল ইসলাম, মাওলানা মিনহাজ উদ্দিন, মুফতি ইউনুস কাসেমী, মুফতি মাহবুবুর রহমান জিয়া, মাওলানা ওমর ফারুক জিহাদী প্রমুখ ।
সম্মেলন শুরুর আগেই মাঠটি ভরে যায়। বেলা বাড়ার সাথে সাথে মাঠ কানায় কানায় পূ্র্ণ হয়ে যায়। মিছিলে মিছিলে প্রকম্পিত হয়ে ওঠে পুরো এলাকা। আলেম-ওলামার সাথে যোগ দেন সাধারণ জনতা।
উল্লেখ্য, আজকের ঐতিহাসিক খতমে নবুওয়াত মহাসম্মেলনে খতমে নবুওয়াত কেন্দ্রীক সকল সংগঠন একাত্মতা ঘোষণা করে এবং মধুপুরের পীর সাহেবের নেতৃত্বে আগামী দিনের চূড়ান্ত কর্মসূচি প্রদানের জন্য নিজেদের মতামত তুলে ধরে।
-প্রেস বিজ্ঞপ্তি