দেশে প্রতি ৪ জনের একজন স্ট্রোকের ঝুঁকিতে

ফাতেহ ডেস্ক:

দেশে প্রতি ৪ জনের মধ্যে একজন স্ট্রোকের ঝুঁকিতে আছেন। হৃদরোগের পর সবচেয়ে বেশি মৃত্যু হয় স্ট্রোকের কারণে। চিকিৎসকদের মতে, উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, অস্বাস্থ্যকর জীবনযাপনের কারণে স্ট্রোকে আক্রান্ত হচ্ছে মানুষ। শারীরিক পরিশ্রম কমিয়ে দেওয়া স্ট্রোকের ঝুঁকিতে পড়ার অন্যতম কারণ। দেশে বছরে প্রায় ২০ লাখ মানুষ স্ট্রোকে আক্রান্ত হচ্ছে। পঙ্গুত্বের অন্যতম প্রধান কারণ স্ট্রোক। স্ট্রোকে আক্রান্ত হওয়ার পর সাড়ে চার ঘণ্টার মধ্যে চিকিৎসা শুরু করা গেলে রোগীকে বাঁচানো সম্ভব ও পঙ্গুত্ব্বের ঝুঁকিও কমানো সম্ভব।

আজ ২৯ অক্টোবর, বিশ্ব স্ট্রোক দিবস। ‘প্রতি মিনিট জীবন বাচায়’, এই প্রতিপাদ্যে বিশ্বজুড়ে পালিত হচ্ছে এই দিবস। মস্তিষ্ক স্বাভাবিকভাবে কাজ করার জন্য অক্সিজেন ও প্রয়োজনীয় পুষ্টির উপাদান প্রয়োজন হয়। এই প্রয়োজনীয় উপাদান রক্তের মাধ্যমে মস্তিষ্কে সরবরাহ হয়। যদি কোনও কারণে মস্তিষ্কে রক্ত সঞ্চালন বাধা প্রাপ্ত হয়, তখন তাকে স্ট্রোক বলে। মস্তিষ্কের যে অংশে রক্ত সঞ্চালন বাধাপ্রাপ্ত হয়, সেখানে মস্তিষ্ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়, যার ফলে স্ট্রোকের লক্ষণগুলো দেখা যায়। একইভাবে স্ট্রোকের ফলে মস্তিষ্কের রক্ত সরবরাহ বন্ধ হয়ে মস্তিষ্কের কোষগুলো মারা যায়।

ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস ও হাসপাতালের ২০১৮ সালের এক জরিপের তথ্য বলছে, দেশে প্রতি হাজারে স্ট্রোকে আক্রান্ত হচ্ছেন ১১ দশমিক ৩৯ জন মানুষ। প্রায় ২০ লাখ স্ট্রোকের রোগী রয়েছে বাংলাদেশে। স্ট্রোকের ঝুঁকি ৬০ বছরের বেশি মানুষের মধ্যে ৭ গুণ বেশি। নারীর চেয়ে পুরুষের আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি দ্বিগুণ। স্ট্রোকের প্রকোপ শহরের চেয়ে গ্রামে কিছুটা বেশি।

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) তথ্য বলছে, দেশে স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে ২০১৯ সালে মারা গেছেন ৪৫ হাজার ৫০২ জন। ২০২০ সালে এ সংখ্যা বেড়ে ৮৫ হাজার ৩৬০ জনে দাঁড়ায়। অর্থাৎ স্ট্রোকের রোগী এক বছরে দ্বিগুণ বেড়েছে।

ওয়ার্ল্ড স্ট্রোক অর্গানাইজেশন জানিয়েছে, স্ট্রোক হওয়ার তিন থেকে সাড়ে ৪ ঘণ্টার মধ্যে চিকিৎসা নিলে ৩০ শতাংশ রোগীর সম্পূর্ণ ভালো হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। স্ট্রোক হওয়ার ৬ ঘণ্টার ভেতরে রক্ত নালীর জমাট খুলে দিলে ৫০ শতাংশ রোগীর সম্পূর্ণ ভালো হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। চিকিৎসকরা বলছেন, স্ট্রোক হওয়ার পরে রিং পরানোর মাধ্যমে রক্ত নালীর ব্লক খুলে দেওয়া সম্ভব। স্ট্রোকে আক্রান্ত রোগীরা স্ট্রোক সেন্টারে চিকিৎসা নিলে ভালো হওয়ার সম্ভাবনা ১৪ শতাংশ।

বিদেশে স্ট্রোক সেন্টারে চিকিৎসা ব্যবস্থা অনেক আগে থেকেই চালু থাকলেও বাংলাদেশে এটি নতুন ধারণা। সম্মিলিত সামরিক হাসপাতাল, ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস ও হাসপাতাল এবং বিএসএমএমইউ-তে এই চিকিৎসা ব্যবস্থা চালু হয়েছে। এছাড়া কয়েকটি বেসরকারি হাসপাতালেও এই চিকিৎসা চালু হয়েছে।

আগের সংবাদবাড়ছে মুদ্রাস্ফীতির চাপ : বাড়ছে না মাদরাসা শিক্ষকদের বেতন
পরবর্তি সংবাদ২০২১ সালে আত্মহত্যা করেছে ৪৭৬৪৬ আমেরিকান