বাজেট ২০২২-২০২৩: আলেম অর্থনীতিবিদদের প্রত্যাশা ও প্রস্তাবনা

ফাতেহ ডেস্ক:

আইএফএ কনসালটেন্সি এর সৌজন্যে গত ৭ই জুন, রোজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় অনুষ্ঠিত হলো ‘আসন্ন ২০২২-২৩ বাজেট: প্রস্তাবনা ও প্রত্যাশা’ শীর্ষক ওয়েবিনার। মুফতি মঞ্জুরুল হাসান চৌধুরী এর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশের শীর্ষ ইসলামী অর্থনীতিবীদ মুফতি আব্দুল্লাহ মাসুম। অনুষ্ঠানে প্রধান আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রথিতযশা ইসলামি অর্থনীতিবীদ মুফতি ইউসুফ সুলতান ও সহ-আলোচক হিসেবে ছিলেন আইএফএ কনসালটেন্সির গবেষক মুফতি ফাহিম ফয়সাল আল মাসউদ।

ওয়েবিনারে প্রকৃত টেকসই অর্থনীতি ও ইসলামী অর্থনীতির আলোকে একটি জাতীয় বাজেটে প্রত্যাশা ও প্রস্তাবনা কেমন হতে পারে, তা আলোচনা করা হয়।

উচ্চাভিলাষী বাজেট

ওয়েবিনারে পেশ করা কিনোট স্পিচে প্রতিষ্ঠানটির প্রধান ও গবেষণা প্রধান মুফতি আব্দুল্লাহ মাসুম বলেন, বাজেটের আকার নির্ধারণ করা হয়েছে ৬ লাখ ৭৭ হাজার ৮৬৪ কোটি টাকা। চলতি অর্থবছরে তা ছিল ৬,০৩,৬৮১ কোটি টাকা। বোঝাই যাচ্ছে-আগামী অর্থবছরে আমাদের ব্যয় বেড়ে গেছে। ৭৪ হাজার ১৮৩ কোটি টাকা অতিরিক্ত ব্যয় করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। বাজেটের আকার বৃদ্ধি হল-১২.২৮ শতাংশ। বাজেটে মূলত তিনটি বিষয় অধিক গুরুত্ব পেয়ে থাকে। যথা-আয়, ব্যায় ও ঘাটতি। আগামী অর্থবছরে আয়ের লক্ষ্য ধরা হয়েছে ৪ লক্ষ ৩৩ হাজার কোটি টাকা। এর অর্থ-ঘাটতি থাকবে-২ লক্ষ ৪৪ হাজার ৮৬৪ কোটি টাকা। চলতি অর্থবছরে এর পরিমাণ বাজেটে ঘোষণা করা হয়েছিল- ২ লক্ষ ১৪ হাজার ৬৮১ কোটি টাকা। এ ঘাটতি মোট বাজেটের এক তৃতীয়াংশের অধিক ছিল। আগামী অর্থবছরে মোট বাজেটে ঘাটতির পরিমাণ আরও বৃদ্ধি হল। শতাংশে তা মোট বাজেটের ৩৬ শতাংশের ও অধিক ।

এতো বিশাল ঘাটতি নিয়ে বাজেট প্রণয়ন রীতি চলতি অর্থ বছর থেকে শুরু! এর আগে এতো বিশাল ঘাটতি দিয়ে বাজেট প্রণয়ন হয়নি। শুধু বাংলাদেশ নয়, বিশ্ব অর্থনীতির সামগ্রিক যে পরিস্থিতি, সে বিবেচনায়ও নিঃসন্দেহে এ বাজেট উচ্চাভিলাষী।

বাজেট প্রণয়ন পদ্ধতি কেমন হওয়া চাই

বাজেট প্রণয়ন পদ্ধতি কেমন হওয়া চাই শীর্ষক আলোচনায় মুফতি আব্দুল্লাহ মাসুম বলেন, বর্তমানে বাজেট প্রণয়ন হয়ে থাকে সিংহভাগ মন্ত্রণালয় কেন্দ্রিক। একে অংশগ্রহণমূলক বলা যায় না। সরকারের আয় ও ব্যয় অনুমোদনে জনগণকে সম্পৃক্ত করা প্রয়োজন। এটি যতো বেশি করা যাবে তত বাজেট বাস্তবায়ন সহজ হবে। বাজেটের একটি প্রধান বিষয়- বরাদ্দ বা ব্যয়। কোন খাতে কত বরাদ্দ দিতে হবে, কত ব্যয় করতে হবে, সেটি জনগণ থেকে ব্যাপকভাবে শোনা উচিত। এর জন্য জেলাভিত্তিক ছোট ছোট বাজেট সেসন হতে পারে। সেখানে গণ মানুষ কথা বলবে। সেই কথাগুলো প্রধান সরকারের কাছে পৌঁছুবে। এতে বাস্তব খাত ও প্রয়োজন উঠে আসবে। এরপর দ্বিতীয় প্রধান বিষয়-আয় খাত নির্ধারণ। সেটিও আলোচনা সাপেক্ষে করা সহজ। এতে সামাজিক পুঁজি চাঙ্গা হয়ে উঠবে। অনেক ব্যয় খাত জনগণ নিজেরাই পূরণে আগ্রহী হয়ে উঠবে। এতে দেখা যাবে ঘাটতি অনেকাংশে কমে যাবে।

ধরা যাক, একটি এলাকায় ১০টি স্কুল করতে হবে। ৫টি রাস্তা মেরামত করতে হবে। ২০টি নলকুপ বসাতে হবে। এসব প্রয়োজন নিয়ে এলাকাভিত্তিক আলোচনা হবে। সেখান থেকে প্রয়োজনগুলো বাস্তব হয়ে উঠে আসবে। এ প্রয়োজনগুলো পূরণের জন্য প্রথমে জনগণকে উদ্বুদ্ধ করা হবে। এক্ষেত্রে ইসলামের ওয়াকফ ধারণা বেশ যুৎসই একটি ধারণা। যারা ওয়াকফে অংশগ্রহণ করবে সরকার তাদেরকে বিশেষ সুবিধা দিতে পারে। এতে সরকারের ক্ষতি নেই। বরং সরকারের বৃহৎ ব্যয় কমে যাচ্ছে।

শুধু তাই নয়, এ পদ্ধতির মাধ্যমে এলাকাভিত্তিক যাকাত সংগ্রহ হবে। ঐ সংগ্রহ দিয়েই ঐ এলাকার প্রয়োজন মেটানোর উদ্যোগ নেয়া যেতে পারে। এভাবে এলাকাভিত্তিক ছোট ছোট বাজেট সামনে রেখে মূল বাজেট প্রণয়ণ হবে। সুতরাং আমরা Participatory budget concept এর উপর বিশেষ গুরুত্ব প্রদানের প্রস্তাব করছি।

সরকারের ব্যয় খাত: বাস্তবমুখী চিন্তা সময়ের দাবি

বাজেটে সাধারণত ভৌত অবকাঠামো খাতেই সর্বোচ্চ বরাদ্দ থাকে। চলতি অর্থবছরে এর পরিমাণ ছিল বাজেটের ২৯.৭৬ শতাংশ। এর অধীনে আছে-ক. কৃষি ও পল্লী উন্নয়ন। খ.বিদ্যুৎ ও জ্বালানী। গ. যোগাযোগ অবকাঠামো। ঘ.সংশ্লিষ্ট অন্যান্য সেক্টর। উক্ত চারটি উপখাতে মধ্যে সাধারণত দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বরাদ্দ থাকে যোগাযোগ অবকাঠামো খাতে। চলতি অর্থবছরে এর পরিমাণ- ১১.৫১ শতাংশ। যোগাযোগ অবকাঠামোর অধীনে আছে- সড়ক, রেলপথ, সেতু ও অন্যান্য। এর মধ্যে সর্বোচ্চ বরাদ্দ সড়ক বিভাগে। এ খাতে চলতি অর্থবছরে বরাদ্দ ছিল ৫.৪৬ শতাংশ ।

মুফতি আব্দুল্লাহ মাসুম বলেন, এক্ষেত্রে আমাদের প্রস্তাবনা হল, যোগাযোগ অবকাঠামোর একটি বৃহৎ অংশ আমরা ওয়াকফ এর মাধ্যমে সমাধান করতে পারি। প্রয়োজনে সুকুক এর মাধ্যমেও ফাান্ডিং করা যেতে পারে। নানা দেশের অভিজ্ঞতায় দেখা গেছে-জনগণকে সরাসরি সম্পৃক্ত করা গেলে এটি বেশি টেকসই হয় । ব্রিজ দিয়ে চলার সময় ‘এ ব্রিজ আমার টাকায় নির্মিত’ এ উপলব্ধি দেশের অগ্রযাত্রায় অনেক অবদান রাখবে নিঃসন্দেহে। আমরা বলতে চাই, যোগাযোগ অবকাঠামো খাতের অধিকাংশই দুটি মাধ্যমে সমাধান করা সম্ভব। এক. ওয়াকফ রীতি প্রতিষ্ঠা। দুই. মুশারাকা বা সুকুক প্রতিষ্ঠা। ইতোমধ্যে সরকার সুকুক চালু করেছে। তবে এর শরীয়াহ্ স্বচ্ছতা এখনও গড়ে উঠেনি। সঠিকভাবে শরীয়াহ্ অনুসরণ করে সুকুক বাস্তবায়ন করত এসব উন্নয়ণমূলক খাত বাস্তবায়ন করা সম্ভব।

সমগ্র বাজেটে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ব্যয় বরাদ্দ সামাজিক অবকাঠামো খাতে। এর অধীনে প্রধান শাখা খাত দুটি। যথা-ক.মানব সম্পদ। এর অধীনে রয়েছে আরও তিনটি উপখাত। যথা-শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও অন্যান্য। খ. খাদ্য ও সামাজিক নিরাপত্তা। এর অধীনে রয়েছে খাদ্য ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা খাত। এর মধ্যে সর্বোচ্চ ব্যয় থাকে শিক্ষা খাতের জন্য। শিক্ষা খাতের মাঝে মাদ্রাসা ও দ্বীনী শিক্ষা অন্তর্ভুক্ত করা সময়ের দাবি। বর্তমান সরকার কর্তৃক কওমী মাদ্রাসার শিক্ষাকে স্বীকৃতি দেয়া একটি ভালো উদাহরণ। তবে এর কার্যকারিতা নিশ্চিত করা সময়ের দাবি। দেশের কওমী মাদ্রাসার বিশাল ছাত্র সমাজকে উচ্চ শিক্ষা গ্রহণের সুযোগ করে দিলে দেশের জন্যই তা কাজে আসবে। আমাদের প্রস্তাব থাকবে-কওমী মাদ্রাসার দাওরায়ে হাদীস সমাপনকারীদেরকে প্রয়োজনে আরও এক বছর ‘ব্রীজিং সেসন’ করিয়ে সরাসরি তাদেরকে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে সরকারী-বেসরকারী সকল বিশ্ববিদ্যালয়ে মাস্টার্স করার সুযোগ দেয়া হোক। পাশাপাশি আরব বিশ্বের সাথে মতবিনিময় করে সেখানকার ভার্সিটিগুলোতেও তাদের ভর্তির সুযোগ সৃষ্টির জন্য কূটনৈতিক তৎপরতা কামনা করছি।

আমরা আরও মনে করি, শিক্ষা খাতের ব্যয় হ্রাসের একটি একটি বড় উপায় যাকাত ব্যবস্থা। আমাদের দেশে বহু দরিদ্র ছাত্র/ছাত্রী রয়েছে। তাদের পেছনে যাকাতের অর্থ ব্যয় করা যেতে পারে। এখান থেকে তাদের বৃত্তির ব্যবস্থা করা যেতে পারে। এতে বাজেটের শীর্ষ ব্যয় অনেকাংশেই কমে যাবে বলে আশা করি। আমাদের প্রাক্কলন অনুযায়ী এর ব্যয় দুই তৃতীয়াংশ হ্রাস পাবে। আর শিক্ষা অবকাঠামো উন্নয়ন হতে পারে ক্যাশ ওয়াকফ দিয়ে।

সামাজিক অবকাঠামোর দ্বিতীয় প্রধান খাত ‘সামাজিক নিরাপত্তা’। চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরে মোট ১ লাখ ৭ হাজার ৬১৪ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে এ খাতে। ফলে এ খাতে বরাদ্দ বৃদ্ধি পাচ্ছে ১২ দশমিক ৫ শতাংশ। সুবিধাভোগী বাড়ছে প্রায় ১৫ লাখ। জানা গেছে, দারিদ্র্য বিমোচন কৌশলপত্রের (পিআরএসপি) ১৪টি সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি চালু রয়েছে। এসব কর্মসূচিতে বর্তমান সরকার দরিদ্র জনগণের অবস্থা উন্নয়নে সামাজিক নিরাপত্তা খাতে প্রতি বছর বরাদ্দ বাড়িয়ে চলেছে। এরই ধারাবাহিকতায় চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরের বাজেটে এ খাতে মোট বাজেটের ১৭ দশমিক ৮৩ শতাংশ বরাদ্দ রাখা হচ্ছে, যা মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) ৩ দশমিক ১১ শতাংশ।

এর অধীনে দরিদ্র প্রবীণ ব্যক্তিদেরকে শতভাগ বয়স্ক ভাতার আওতায় আনা হয়েছে। সর্বাধিক দারিদ্র্যপ্রবণ ১১২টি উপজেলায় বিদ্যমান নীতিমালা অনুযায়ী দরিদ্র প্রবীণ ব্যক্তিকে শতভাগ ‘বয়স্ক ভাতার’ আওতায় আনা হয়েছে। আগামী ২০২১-২২ অর্থবছর থেকে ‘বয়স্ক ভাতা’ কার্যক্রমে উপকারভোগীর কাভারেজ বিদ্যমান নীতিমালা অনুযায়ী প্রাপ্য শতভাগ বয়স্ক মানুষকে অতি উচ্চ ও উচ্চ দারিদ্র্যভুক্ত গ্রুপের আরো ১৫০টি উপজেলায় সম্প্রসারণ করা হচ্ছে। এতে করে আট লাখ নতুন উপকারভোগী যোগ হবে এবং এ খাতে ৪৮১ কোটি টাকা অতিরিক্ত বরাদ্দ দেয়া হবে।

এছাড়া সর্বশেষ প্রতিবন্ধিতা শনাক্তকরণ জরিপ অনুযায়ী অসচ্ছল প্রতিবন্ধী ভাতাভোগীর সংখ্যা ২ লাখ ৮ হাজার জন বৃদ্ধি পাবে। যার ফলে ২০২১-২২ অর্থবছরে এ বাবদ ১০০ কোটি টাকা অতিরিক্ত বরাদ্দের প্রয়োজন হবে।

আমাদের পর্যবেক্ষণ হল, সামাজিক নিরাপত্তা খাতের অধিকাংশ বরাদ্দ ব্যয় হয় সরাসরি দরিদ্র মানুষের পেছনে। আমরা চাইলে এক্ষেত্রে সহজেই যাকাত ব্যবস্থা কাজে লাগাতে পারি। এতে সরকারের একটি বড় ধরনের ব্যয় হ্রাস হবে বলে মনে করি।

সমগ্র বাজেটে তৃতীয় সর্বোচ্চ ব্যয় বরাদ্দ সাধারণ সেবা খাতে। এর অধীনে প্রধান শাখা খাত দুটি। যথা-ক.জনশৃংখলা ও নিরাপত্তা। খ. অন্যান্য। এর মধ্যে সর্বোচ্চ ব্যয় বরাদ্দ সাধারণত ‘অন্যান্য’ খাতে থাকে। এর মধ্যে সরকারের পরিবহন সেবা, টেলি কমিনিকেশন সেবা, স্বাস্থ্য সেবা প্রভৃতি রয়েছে। এসব সেবার বেশ কিছু অংশ ওয়াকফ এর মাধ্যমে গড়ে উঠতে পারে। তাছাড়া সরকার তার সেবার মান বৃদ্ধি ঘটিয়ে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ রাজস্বও উত্তোলন করতে পারে। পাশাপাশি জনগণের সম্পৃক্ততায়ও এসব সেবা প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠতে পারে। যেখান থেকে মুনাফার একটি অংশ জনগণও পাবে। এভাবে এ খাতকে আরও টেকসই করা যায়।

চলতি বছরের বাজেটে সুদ বাবদ ব্যয় ছিল চতুর্থ শীর্ষ ব্যয় খাত। এ বাবদ ব্যয় ধরা হয়েছিল ৬৮ হাজার ৫৮৯ কোটি টাকা। অর্থাৎ মোট প্রস্তাবিত ব্যয়ের ১১ দশমিক ৩৬ শতাংশ খরচ হবে সুদ পরিশোধে। (বাজেট বক্তব্য, পৃ.৩৭)। আগামী অর্থবছরে দেশী-বিদেশী ঋণের সুদ বাবদ ব্যয়ও বেড়েছে। পরিমাণে তা ৮০ হাজার ২৭৫ কোটি টাকা। চলতি অর্থবছর তা ছিল ৬৮ হাজার ৫৮৯ কোটি টাকা। এই সুদ কিন্তু সৃষ্টি হয়েছে সেই ঘাটতি + ঋণ থেকে। গত পাঁচ বছরের বাজেট বরাদ্দ বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, প্রস্তাবিত বাজেটে (২০২১-২২) সুদ বাবদ পরিশোধের ব্যয় ২০১৬-১৭ অর্থবছরের প্রায় দ্বিগুণ। ওই বছরে সুদ বাবদ ব্যয় ছিল ৩৫ হাজার ৬৯১ কোটি টাকা ।

মোটকথা, এভাবে সুদ বাবদ ব্যয় প্রতি বছর বৃদ্ধি হচ্ছে! অথচ সুদ একটি ঝুঁকিপূর্ণ খাত। অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। এতো বিশাল অংকের সুদের উৎস সরকারের ঘাটতি বাজেট। যা পূরণ করতে দেশীয় ও বৈদেশিক উৎস থেকে মোটা অংকের সুদ ভিত্তিক ঋণ করতে হয়। তাহলে মূল সমস্যা ঘাটতি বাজেট। এর লাগাম টেনে ধরতে হবে। এর জন্য জনবান্ধব রাজস্ব রীতি প্রতিষ্ঠার বিকল্প নেই। পাশাপাশি ব্যয় খাতকে ‘হাজাহ’ ও ‘জরুরাহ’ নীতিতে সাজাতে হবে। তাহলে ঘাটতি হ্রাস হবে। ঘাটতি হ্রাস হলে সুদ ভিত্তিক ঋণও হ্রাস হবে আশা করি।

ঘাটতি বাজেট থেকে বের হওয়া ‍উচিত

কোন নির্দিষ্ট আর্থিক বছরে সরকারের রাজস্ব আয় অপেক্ষা ব্যয় অধিক হলে তাকে ঘাটতি বাজেট বলে। সাধারণত সরকার নতুন অর্থ সৃষ্টি, অতিরিক্ত কর আরোপ, অভ্যন্তরীণ বা বৈদেশিক ঋণ গ্রহণের মাধ্যমে বাজেটের ঘাটতি পূরণ করার জন্য উদ্যোগী হয়। আসন্ন বাজেটের প্রায় ৩৬ শতাংশ-ই ঘাটতি।

মুফতি আব্দুল্লাহ মাসুম বলেন, ঘাটতি বাজেটের সংস্কৃতি ও তা পূরণের রীতি থেকে বের হয়ে বিকল্প পথ খুঁজতে হবে। বস্তুত ঘাটতি হয় আয়-উৎস ব্যয়ের সাথে সমন্বয় না হওয়ায় ও ব্যয় বৃদ্ধি হওয়ায়। অতএব প্রথমে ঘাটতি হ্রাস করতে হলে-আমাদেরকে আয়-উৎস নিয়ে চিন্তা করতে হবে। আমরা পশ্চিমা ধারায় কেবল কর ও ভ্যাটে আটকে আছি। বিদ্যমান কর রীতিকে আমাদের প্রস্তাবনা অনুযায়ী সংস্কার করার পাশাপাশি প্রকৃত টেকসই অর্থব্যবস্থার আলোকে আমাদের আয়-উৎস বাড়ানো যায় কি না-তা খতিয়ে দেখতে হবে।

তিনি তার গবেষণাপত্রে বলেন, আইএফএ কনসালটেন্সি-এর গবেষণা বিভাগ সম্প্রতি ‘জনবান্ধব বাজেট কৌশল: ইসলামী অর্থনীতির আলোকে’ শিরোনামে একটি বৃহৎ গবেষণা কর্ম সম্পন্ন করেছে। প্রায় ২৫০ পৃষ্টা ব্যাপী এই গবেষণায় বাংলাদেশের সম্ভাব্য রাষ্ট্রীয় আয়-খাত নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। সেখান থেকে সারাংশ তুলে ধরে তিনি বলেন, বাজেটের মূল বিষয় রাষ্ট্রীয় আয়-উৎস ও ব্যয় খাত। সুতরাং সঙ্গত কারণেই প্রথমে ইসলামী অর্থব্যবস্থার আলোকে রাষ্ট্রের আয়-খাত নিয়ে আলোচন করতে হয়।

ইসলামী খেলাফতকালে রাষ্ট্রীয় যেসব আয়-উৎস ছিল, সেগুলোর কিছু বর্তমানে অনুপস্থিত। যেমন, গনিমত, ফাই। আবার কিছু যুগের পরিবর্তনে হুবহু এখন প্রয়োগ করা সম্ভব নয়। যেমন, জিযিয়া। তবে এর পরিবর্তে এখন যাকাত হারই কর হিসাবে অমুসলিমদের উপর প্রযোজ্য করা যাবে। তদ্রুপ উশূর শুধু অমুসলিমদের উপর এখন প্রয়োগ করা সম্ভব নয়। সকলের উপরই ভারসাম্য পন্থায় প্রয়োগ করা যেতে পারে। তবে খারাজ বহাল রাখা যায়। পাশাপাশি ইনসাফপূর্ণ কিছু অতিরিক্ত করও বহাল রাখা যায়। সব মিলিয়ে আমাদের দৃষ্টিতে বর্তমান বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় আয়-খাত যা হতে পারে-১) যাকাত খাত। (বর্তমান ভাষায় একে ওয়েলথ ট্যাক্স বলা যায়। এর মধে উশর, খারাজও আছে) । ২) শরীয়াহ অনুমোদিত কর। ৩) নিয়ন্ত্রিত ইনসাফপূর্ণ কর। ৪) সামাজিক পুঁজি। ৫) বিনিয়োগ। ৬) বিবিধ।

উপরোক্ত আয়-উৎসমূহ বাস্তবায়ন করতে হলে আমাদেরকে মোট ৫টি টুল বা সেটাপের আশ্রয় নিতে হবে। যথা-

১) জাতীয়ভাবে সুদ বর্জন করতে হবে। যে দেশের অর্থনীতিতে সুদ স্বীকৃত, সে দেশে ইসলামী অর্থব্যবস্থা গড়ে তোলা সম্ভব নয়। ৮০ সনে পাকিস্তানের ‘দ্যা কাউন্সিল অব ইসলামিক আইডলজি’ তাদের বিখ্যাত সুদমুক্ত ব্যাংকিং বিষয়ক জাতীয় প্রতিবেদনে মন্তব্য করেছিল-‘এটি একটি স্বীকৃত বাস্তব বিষয় যে, যতক্ষণ পর্যন্ত কোনও দেশের অর্থব্যবস্থায় সুদ বহাল থাকবে, ততদিন সেখানে ইসলামী জীবন ব্যবস্থা বাস্তবায়ন সম্ভব হবে না’। (সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদন, পৃ.৯)

২) জাতীয়ভাবে যাকাত ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করতে হবে। আয়কর ও যাকাত এক সাথে চলতে পারে না। সুতরাং আয়কর নিয়ন্ত্রিত করতে হবে। যাকাতকে প্রাধান্য দিতে হবে।

৩) জাতীয় শরীয়াহ সুপারভাইজরী বোর্ড গঠন করা। ইসলামী অর্থব্যবস্থা প্রতিষ্ঠায় তারা শরীয়াহ দিক-নির্দেশনা প্রদান করবেন। সরকারকে ইসলামী অর্থনীতি বাস্তবায়নে পথ দেখাবেন।

৪) ফিকহুল আওলাউয়্যিাহ (অগ্রাধিকার নীতি বিষয়ক ফিকহ) প্রতিষ্ঠা করা। এর অর্থ হল-অর্থনীতিতে শরীয়াহর আলোকে প্রথমে জরুরাহ খাত প্রাধান্য পাবে। জরুরাহ হল এমন খাত যা সমাধান না হলে মানুষের মৃত্যু বা চরম সংকট প্রবল হয়ে উঠে। এর মধ্যে আছে স্বাস্থ্য খাত উন্নয়ন করা। যা বর্তমানে অবহেলিত। এরপর হাজাহ খাত প্রাধান্য পাবে। হাজাহ হল এমন খাত, যা সমাধান না করা হলে মৃত্যু বা চরম সংকট হবে না। তবে কষ্ট হবে।

এর মধ্যে আছে দ্রব্যমূল্য সিন্ডিকেট বন্ধ করা। ইত্যাদি। এরপর তাহসিনাত বা উন্নয়নমূলক ভালো কাজ। এতে জীবন মান উন্নয়ণ সংক্রান্ত কাজ অন্তর্ভুক্ত হবে। এভাবে অর্থব্যবস্থায় ফিকহুল আওলাউয়্যিাহ প্রতিষ্ঠা করা ও সে আলোকে অর্থনৈতিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা।

৫) দেশের শিক্ষা ব্যবস্থায় ইসলামের অর্থনীতি, রাষ্ট্রনীতি প্রতিষ্ঠা করা। স্বতন্ত্র ইসলামী অর্থনীতি ও ফিন্যান্স বিষয়ে বিভাগ ও ভার্সিটি প্রতিষ্ঠা করা। এর মাধ্যমে দেশে ইসলামী অর্থব্যবস্থা সম্পর্কে জ্ঞান, চর্চা ও গবেষণা অগ্রসর হবে। যা রাষ্ট্রকে সহযোগিতা করবে।

৬) জাতীয় অর্থ ফান্ড প্রতিষ্ঠা করা। এর মাধ্যমে কালো টাকা উদ্ধার, পাচারকৃত অর্থ, বিদেশী নাগরিকদের উপর কর, অতিরিক্ত মুনাফায় কর, সরকারী সেবার মান বৃদ্ধি করত যৌক্তিক মূল্য বৃদ্ধি প্রভৃতি থেকেও অভ্যন্তরীণ সম্পদ সংগ্রহ করা যেতে পারে।

গবেষণাপত্রে একটি পরিসংখ্যান তুলে ধরে মুফতি আব্দুল্লাহ মাসুম বলেন, চলতি বাজেটের প্রায় ৭০ শতাংশ উঠে আসে যাকাত ও ওয়াকফ খাত থেকে। বাকি মাত্র ৩০ শতাংশের জন্য আমাদেরকে অন্যান্য খাত ব্যবহার করতে হয়। ঘাটতি একেবারেই গৌণ। অপরদিকে আমাদের বাজেটে ঘাটতি এক তৃতীয়াংশের অধিক। এরপর যা আয় প্রাক্কলন করা হয়েছে, তাও পুরোপুরি উঠে আসেনা। যতুটুকু উঠে আসার প্রাক্কলন করা হয়েছে সেখানে কর-ই প্রধান। পরিমাণে তা ৮৩.৫৭ শতাংশ। এর মধ্যে ভ্যাটের পরিমাণ সর্বোচ্চ। টোটাল রাজস্বের ৩২.৮৪ শতাংশ। সর্বোচ্চ শতাংশ।

আমাদের চলতি বাজেটের ৫৩.৮৮ শতাংশ প্রাক্কলন করা হয়েছে কর থেকে। অথচ আমরা দেখেছি ওয়াকফ খাত থেকে ৪৯ শতাংশ উঠে আসে। যাকাত থেকে উঠে আসে ১৮ শতাংশ। বিনিয়োগ খাত থেকে উঠে আসে ১৬ শতাংশ। শুধু এই তিন খাত-যাকাত, ওয়াকফ ও বিনিয়োগ বাস্তবায়ন করলেই আমরা আমাদের বাজেটের প্রায় ৯০ শতাংশ পেয়ে যাই। এবার তাহলে প্রশ্ন হয়, আমরা কেন কর নির্ভর রাজস্ব ধরে রাখবো? কেন আমরা যাকাত ও ওয়াকফ বাস্তবায়ন করবো না?

যাকাত ও কর: তুলনামূলক হিসাব

যাকাত অবশ্যই একটি ইবাদত। এটি কোনো কর নয়। আমাদের দেশে করদাতা মাত্র ২০-২২ লক্ষ মানুষ। (পৃ.১২)। এর মধ্যে ফাঁকিবাজ তো আছেই। এরপর সেই কর সীমাহীন। অপরদিকে সংখ্যায় যাকাতা দাতা ১০ কোটির বেশি হবে। আদায়ের হারও মাত্র ২.৫%। এর উপর ফসলের যাকাত তো আছেই। ১ লক্ষ টাকায় যাকাত আসে মাত্র আড়াই হাজার টাকা। ১০ কোটি মানুষ মাত্র ১ লক্ষ টাকার যাকাত দিলে ২৫ হাজার কোটি টাকা উঠে আসে। বাকি হিসাব নিজেরাই করে নিতে পারবো আমরা। সালাফের যুগে যাকাত ব্যবস্থা ছিল রাষ্ট্রীয় আয়ের অন্যতম উৎস। যে এলাকা থেকে যাকাত আদায় করা হতো, সেই যাকাত ঐ এলাকার দরিদ্রদের মাঝেই বিতরণ করা হতো। সুতরাং কর বর্জন করে রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থায় যাকাত উত্তোলন করা সময়ের দাবি। তবে এর জন্য মযবুত শরীয়াহ্ বডি ও বিতরণ কমিটি লাগবে। যেনো যথাযথ খাতে যাকাত বিতরণ হয়। অভিজ্ঞজন মনে করেন, শুধু ফসলের যাকাত দিয়েই সংশ্লিষ্ট এলাকার খাদ্য সংকট দূর করা সম্ভব। দরিদ্রতা দূর করা সম্ভব। কেনো সালাফের যুগে কর ব্যবস্থা চালু না করেই রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা হয়েছে, সেটা এখান থেকেই বোধগম্য।

ওয়েবিনারের আরও বক্তব্য

ওয়েবিনারে প্রধান আলোচকের বক্তব্যে মুফতি ইউসুফ সুলতান বলেন, বিশ্বে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন মতবাদের উদ্ভাবন হলেও জনগণ কখনোই অত্যাচার থেকে মুক্তি পায়নি। প্রত্যেকটি সমাধানই কিছুদিন পর মুখ থুবড়ে পড়েছে। এর পেছেনের বড় কারণ হলো আমরা সৃষ্টি। আমাদের সীমাবদ্ধতা রয়েছে। পক্ষান্তরে ইসলামি অর্থব্যবস্থা ও ইসলামি রাষ্ট্রব্যবস্থায় রয়েছে এর টেকসই সমাধান । কেননা এটি কোন সৃষ্টির তৈরী না। আজ বিশ্বব্যাপি শারিয়াহ আইন বলতেই মনে করা হয় নারী অধিকার হনন, অন্যায়ভাবে হাত কর্তন, শিরচ্ছেদ। অথচ ইসলামি রাষ্ট্রব্যবস্থা নিরাপত্তা ও ইনসাফ ভিত্তিক একটি রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থা।

দেশের এ শীর্ষ অর্থনীতিবীদ আরো বলেন, আজ আমরা বিশ্যব্যাপি উপার্জন বৈষম্য দেখতে পাচ্ছি। অর্থনীতিকে ধর্মীয় মুল্যবোধ থেকে বিছিন্ন করা এর অন্যতম কারণ। মুফতি আব্দুল্লাহ মাসুম সাহেব তার কিনোট স্পিচে বলেছেন- বিশ্বের দরিদ্রতম ৪৬০ কোটি মানুষের সম্পত্তি থেকেও বেশি সম্পত্তি রয়েছে ২১৫৩ জন ব্যক্তির কাছে । এটি শারিয়াহ দৃষ্টিকোণ থেকে একটি অপছন্দনীয় বিষয়। ইসলামে যাকাত, নফল সাদাকাহ, ওয়াকফ বিভিন্ন ভাবে আর্থ-সামাজিক বৈষম্য দূর করা হয়।

তিনি বলেন, সম্পদ শুধুমাত্র দুনিয়ার জন্য বিনিয়োগ না করে আখেরাতের জন্যও কিছু বিনিয়োগ করা ইসলামি অর্থনীতির একটি গুরুত্বপুর্ণ দিক।

সহযোগিতামূলক বাজেটের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, আজ নৈতিক অর্থনীতি, সামাজিক অর্থায়ন, ইমপ্যাক্ট ফান্ডিং, সামাজিক দায়বদ্ধতা নিয়ে আলোচনা করা হয়। যেখানে মূল বক্তব্যটাই থাকে যে, শুধুমাত্র নিজের জন্য বিনিয়োগ না করে বা টাকায় মুনাফা অর্জন না করে সমাজের জন্য বিনিয়োগ করা হবে, পরিবেশগত উন্নয়নের জন্য অর্থায়ন করা হবে। আমরা মনে করি, এর থেকেও বেশি প্রভাব ফেলে আখেরাতের উদ্দেশ্যে কিছু বিনিয়োগ করা।

তিনি বর্তমান বৈশ্বিক অর্থব্যবস্থার কথা উল্লেখ করে বলেন: বর্তমানে আন্ডাওয়ার্ল্ডের কবলে গোটা অর্থব্যবস্থা। পর্নোগ্রাফি,জুয়া,মাদক, ক্যাসিনো ইত্যাদি চারিদিকে দাবানলের ন্যায় ছড়িয়ে পড়েছে। এর থেকে উত্তলোনের জন্যও ধর্মীয় মুল্যবোধের প্রয়োজন রয়েছে। প্রাক্কলিত বাজেটের কথা উল্লেখ করে এ অর্থনীতিবীদ বলেন, আমরা বিভিন্ন ডাটা থেকে দেখতে পাচ্ছি, রাষ্ট্রের আয় কমছে, ব্যয় বাড়ছে। এখনি এর যথাযথ ব্যবস্থা না নিলে এটি ২০০৭/০৮ এর বৈশ্ব্যিক মন্দা থেকেও গভীর অর্থমন্দায় ফেলতে পারে।

সহ আলোচকের বক্তব্যে মুফতি ফাহিম ফয়সাল আল মাসউদ বলেন, প্রতিনিয়ত সামাজিক অস্থিরতা বাড়ছে। দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতিতে জন জীবন আজ সংকটাপন্ন। এমন পরিস্থিতিতে একটি বাজেট যেন জনবান্ধব হয় এটি সকলের প্রত্যাশা। বাজেট যেন জনগণের ভোগান্তির কারণ না হয়। বাজেট কে কেন্দ্র করে ব্যবসায়িক মহলে যে অঘোষিত সিন্ডিকেট করা হয় এ থেকে পরিত্রাণের ব্যবস্থাও সরকারের নেয়া উচিত। তিনি আরো বলেন, রেমিটেন্সের চাকা ধীরগতি হচ্ছে। দেশের অর্থনীতির একটি গুরুত্বপুর্ণ অংশ এই রেমিটেন্স। এর যথাযথ কারণ বের করে সমাধান করা উচিত।

সহযোগিতা মূলক বাজেটের আলোচনা করে তিনি বলেন, বাজেটের উর্ধ্বগতির লাগাম টেনে ধরতে সুকুক ও ওয়াকফের প্রচলন এখনই জরুরি। তবে এর জন্য অবশ্যই বিভাগীয় স্বচ্ছতা প্রয়োজন।

সমাপনী বক্তব্যে মুফতি আব্দুল্লাহ মাসুম বলেন, রাষ্ট্রীয় অর্থনীতি ও বাজেট সংক্রান্ত যে কোন সহযোগিতায় আইএফএ কনসালটেন্সি অবদান রাখতে সর্বদা প্রস্তুত। আমরা চাই আমাদের দেশ এগিয়ে যাক। রাষ্ট্রীয় ভাবে আমরা সমৃদ্ধ হই। দেশের জন্য, দেশের জনগণের জন্য আমরা কাজ করতে সর্বদা প্রস্তুত। ইতিবাচক পন্থায় আমরা আলোচনা করতে প্রস্তুত। যেভাবে চলছে-এভাবেই চলতে হবে এমন কোনও কথা নেই। দেশের স্বার্থে আমরা নানা চিন্তা ও ভাবনার দুয়ার উন্মুক্ত করতে পারি। আমাদের বক্তব্য ও উপস্থাপন থেকে কেউ ভুল বুঝবেন না।

আগের সংবাদ‘মোদী সরকার মুসলিম বিদ্বেষী নীতি অনুসরণ করে সহিংসতা উস্কে দিচ্ছে’
পরবর্তি সংবাদপ্রস্তাবিত বাজেট মন্ত্রিসভায় অনুমোদন