হুসাইন আহমাদ
১৯৬৫ সাল। ফেব্রুয়ারির ২১ তারিখ। সকালের সূর্যটা অনেক উপরে উঠেছে তখন। নিউইয়র্কের হিল্টন ভবনের দ্বাদশ তলার হোটেল রুম থেকে নেমে আসেন ম্যালকম এক্স। রওনা হন অডুবন বলরুমের দিকে। সেখানে অর্গানাইজেশন অব আফ্রো-আমেরিকান ইউনিটের একটি সভায় যোগ দিবেন তিনি। চেপে আসা ওল্ডমোবাইল গাড়িটি একটু দূরে পার্কিং করে সভাকক্ষে প্রবেশ করলেন ম্যালকম। হলরুমে তখন অপেক্ষা করছিলেন চারশ শ্রোতা। তিনি মঞ্চে উঠে আসন গ্রহণ করলেন। সভার কার্যক্রম শুরু হল। প্রথমে বেঞ্জামিন গুডম্যান ৪০ মিনিট বক্তব্য দিয়ে নেমে গেলেন। এবার বক্তৃতা দিবেন ম্যালকম এক্স।
তিনি উঠে গিয়ে ডায়াচের সামনে দাঁড়ালেন। উপস্থিত শ্রোতাদের হাত নেড়ে সালাম ও অবিভাধন জানালেন। সবার দৃষ্টি নিবদ্ধ তখন তাঁর হাত ও মুখের দিকে। ঠিক এই সময় হলরুমের মাঝখান থেকে এক যুবক চিৎকার করে ওঠে। পাশের চেয়ারে বসা লোকটি তার পকেট মারার চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ করতে থাকে। যুবকের আকস্মিক চেচামেচিতে সবার দৃষ্টি সেদিকে ফিরে যায়। চেচামেচি আরো বাড়তে থাকে এবং এক ধরণের বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হয়। ম্যালকম তাদের শান্ত হওয়ার আহ্বান করতে থাকেন। এ সময় সভাকক্ষের শৃঙ্খলা ফেরাতে ম্যালকমের দেহরক্ষীরা মঞ্চ থেকে নেমে ঘটনাস্থলে চলে যান। ঠিক এই সময়েই ঘটে যায় নির্মম ঘটনাটা। দেহরক্ষীরা চলে যাওয়ায় ম্যালকম অরক্ষিত ছিলেন। মঞ্চের কাছে একেবারে সামনের সারিতে বসা এক ব্যক্তি দাঁড়িয়ে কোটের ভেতর থেকে শটগান বের করে ম্যালকমের বুকে মুহুর্মুহু গুলি ছোড়ে। একই সময়ে মঞ্চের পেছনে বিকট শব্দে একটা ধোঁয়ার বোম্ব বিস্ফোরিত হয় এবং দুইজন ব্যক্তি পিস্তল হাতে গুলি ছুড়তে ছুড়তে মঞ্চে উঠে পড়ে। সব যেন এক মুহূর্তের মধ্যেই ঘটে যায়।
আতঙ্কিত অতিথিরা দিগ্বিদিকশুন্য হয়ে হুড়মুড় করে দরজার দিকে ছুটে যায়। চারশ মানুষ একসাথে দরজা দিয়ে বের হতে চাইলে অবস্থা যেমন হবার তেমনই হল। প্রচণ্ড আতঙ্ক ও গোলমেলে অবস্থার সৃষ্টি হল। এই গোলমালকে ঘাতকরা কাজে লাগাল৷ তারা ভীরের মধ্যে মিশে গেল। কিন্তু একজন ধরা খেল এক দেহরক্ষীর হাতে। কয়েক মিনিট পর পুলিশ এসে তাকে গ্রেফতার করে নিয়ে যায়। পরবর্তীতে সন্দেহভাজন আরো দুই ব্যক্তিকে পুলিশ গ্রেফতার করে।
গ্রেফতারকৃতরা কারা?
ম্যালকম হত্যার শোকে সবাই মুহ্যমান। তবুও শোকসন্তপ্ত মনের কোন থেকে যে প্রশ্নটা দাঁড়ায় যে, ধৃত ব্যক্তিটা কে? কারাই বা
ম্যালকম এক্সের হত্যার সঙ্গে জড়িত? ঘটনাস্থলে একজন ঘাতক ধৃত আততায়ীর পরিচয় থেকে সকলের শোকগ্রস্ত মন একটা উত্তর আমরা পেয়ে যাবে। কিন্তু এই ঘটনার অর্ধশতাব্দী পরে এসে এমন কিছু তথ্য আমাদের সামনে হাজির হবে, যা এই হত্যাকাণ্ডকে রহস্যের চাদরে ঢেকে দিবে।
ঘটনাস্থল থেকে গ্রেফতারকৃত ব্যক্তির নাম তালমাজ হায়ের। সে হল ন্যাশন অব ইসলামের একজন কট্টর সমর্থক ও সদস্য। অপর যে দুজনকে গ্রেফতার করা হয় তারাও ন্যাশনের সদস্য। তাদের একজন হলেন, নরম্যান থ্রি এক্স বাটলার। অপরজন থমাস ফিফটিন এক্স জনসন।
কেন এই হত্যাকাণ্ড?
এখন প্রশ্ন ওঠে, ন্যাশন অব ইসলামের সদস্যরা কেন ম্যালকম এক্সকে হত্যা করল? এই সংগঠনের লোকদের সাথে ম্যালকমের দ্বন্দ্বটা কোথায়? এর উত্তরের জন্য আমাদের জানতে হবে যে, এক বছর আগেও ম্যালকম এক্স ন্যাশনের সদস্য ছিলেন। ছিলেন দলের প্রভাবশালী নেতা ও মুখপাত্র। কিন্তু মোহভঙ্গ হলে তিনি ন্যাশনকে ছেড়ে দেন এবং হজে গমন করেন। সেখানে রাসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের রেখে যাওয়া ইসলামের সন্ধান পান এবং তা গ্রহণ করেন। এভাবে ন্যাশনকে সম্পূর্ণরূপে পরিত্যাগ করাটাই ছিল ম্যালকমের সাথে ন্যাশনের দ্বন্দ্বের একমাত্র কারণ।
হত্যার বিচার
তলমাজ হায়েরের কাছে থেকে অপরাধের শক্ত আলামত পাওয়া যায়। তার পকেট থেকে পিস্তল উদ্ধার হয় এবং বিস্ফোরিত বোমায় তার আঙ্গুলের ছাপ মেলে। নিজের অপরাধের স্বীকারোক্তিও দেন তিনি। কিন্তু এই হত্যাকাণ্ডে তার সাথে কারা জড়িত ছিল তাদের নাম প্রকাশ করতে তিনি অস্বীকার করেন। বাটলার ও জনসন এই হত্যায় তার সাথে জড়িত ছিলেন না বলেও তিনি বারবার হলফ করেন। সন্দেহভাজন দুইজনের বিরুদ্ধে পুলিশের হাতে কাগুজে বা মৌখিক গ্রহণযোগ্য কোন প্রমাণ ছিল না। তবুও আদালত তাদেরও দোষী সাব্যস্ত করে এবং তিনজনকেই যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়।
বাটলারের বর্তমান নাম আবদুল আজিজ। ১৯৮৫ সালে তাকে প্যারোলে মুক্তি দেওয়া হয়। ১৯৯৫ সালে তিনি ন্যাশনের হার্লেম মসজিদ-প্রধানের দায়িত্ব পান। জনসন তার নাম বদলে রাখেন খলিল ইসলাম। কারাগারে থাকাকালে তিনি ন্যাশন অব ইসলামের মতবাদ ত্যাগ করে সুন্নী ইসলাম গ্রহণ করেন। তিনিও ১৯৮৭ সালে প্যারোলে মুক্তি পান। ২০০৯ সালে তিনি মারা যান এবং মৃত্যুর আগ পর্যন্ত নিজেকে নির্দোষ বলেই দাবী করেন। তালমাজ হায়েরের বর্তমান নাম মুজাহিদ হালিম। ২০১০ সালে তিনিও প্যারোলে মুক্তি পান।
এই হত্যাকাণ্ড কি ন্যাশন ঘটিয়েছিল?
এলিজা মোহাম্মদ ২৬ ফেব্রুয়ারি অ্যানুয়ার সেভিয়র্স ডে কনভেনশনে এই খুনের সাথে জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করে বলেছিলেন, ম্যালকম এক্স তাই পেয়েছেন, যা তিনি প্রচার করতেন। আমরা তাকে খুন করতে চাইনি। আমরা তাকে খুনের চেষ্টাও করিনি। আমরা জানি এ ধরনের অজ্ঞতা ও বোকামির শিক্ষাই এক দিন তাকে শেষ করে দেবে। নিজেকে দায়মুক্তি ঘোষণা করলেও এলিজাকে চোখ বুজে নির্দোষ বলাও যায় না। কারণ ম্যালকম হত্যার দুই মাস পূর্বে এলিজা তাদের দলীয় পত্রিকা মোহাম্মদ স্পিক্স এ একটি কলাম লিখেছিলেন। সেখানে তিনি ম্যালকম এক্সকে দলত্যাগী, মুনাফেক ও জাহান্নামী ঘোষণা করে এবং তাঁর পরিণতি খারাপ হবে বলেও হুশিয়ারি করেন।
১৯৭৭ ও ১৯৭৮ সালে তালমাজ হায়ের দু’টি হলফনামা পেশ করেন। এ হলফনামায় তিনি আবারো জোর দিয়ে দাবি করেন, বাটলার ও জনসন এই হত্যাকাণ্ডে জড়িত ছিলেন না। এ হলফনামায় তালমাজ হায়ের চারজনের কথা উল্লেখ করেন। এরা সবাই ন্যাশন অব ইসলামের নিউজার্সি নেটওয়ার্কের ২৫ নাম্বার টেম্পলের সদস্য। তালমাজ বলেন, এরা তার সাথে এই হত্যাকাণ্ডে অংশ নিয়েছিলেন।
তাদের একজন হলেন, উইলবার ম্যাককিনলি। যিনি চিৎকার করেছিলেন এবং চরম বিশৃঙ্খলা তৈরির জন্য একটি স্মোক বোমা নিক্ষেপ করেছিলেন। দ্বিতীয়জন হলেন উইলিয়াম ব্র্যাডলি। যিনি তার শুটগান দিয়ে প্রথম ম্যালকম এক্সের ওপর গুলি চালান। তৃতীয়জন ছিলেন লিওন ডেভিস। যার হাতে পিস্তল ছিল। তালমাজ হায়ের জানান, শুটগানের বিস্ফোণের পরপরই পিস্তল দিয়ে ম্যালকম এক্সের ওপর তিনি ও লিওন গুলি চালান।
হায়ের আরো বলেন, বেঞ্জামিন থমাস নামে চতুর্থ এক ব্যক্তি এই হত্যাকাণ্ডে জড়িত ছিলেন। হায়েরের দেয়া এই বিবৃতিতে সব স্পষ্ট হলেও কর্তৃপক্ষ সন্তুষ্ট হননি। ফলে এই খুনের মামলার তদন্ত নতুন করে আর চালু হয়নি।
সুতরাং বলা যায়, যদিও যথাযথ প্রমাণের অভাবে ম্যালকম হত্যার সঙ্গে ন্যাশন অব ইসলাম সাংগঠনিকভাবে জড়িত ছিল কি না তা বলা যায় না। কিন্তু এলিজার বক্তব্য দ্বারা যে ন্যাশনের উৎসাহী সদস্যরা হত্যায় উদ্বুদ্ধ হয়েছিল তা স্পষ্ট।
ষড়যন্ত্র তত্ত্ব
এই হত্যার পেছনে কি পুলিশ বা গোয়েন্দাসংস্থা কারো হাত ছিল? এমন সন্দেহ তখন কারো মনে না এলেও হালামলে এমন চাঞ্চল্যকর কিছু তথ্য সামনে এসেছে। গত শতকের ষাটের দশকের এক আন্ডার কভার পুলিশ (সাদা পোশাকের পুলিশ কর্মী) অফিসার তার স্বীকারোক্তিতে জানিয়েছেন, ম্যালকম এক্স খুনের পিছনে নিউ ইয়র্ক পুলিশ দফতর (এনওয়াইপিডি) ও যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় তদন্ত বুরো (এফবিআই) এর চক্রান্ত ছিল। ম্যালকম হত্যাকাণ্ড নিয়ে রে উড নামে ওই সাবেক পুলিশ অফিসারের সাম্প্রতিক স্বীকারোক্তি পড়ে শুনিয়েছেন তার আত্মীয় রজি উড। রে তার মৃত্যশয্যায় দেয়া স্বীকারোক্তিতে বলেছেন, ‘নাগরিক অধিকার আন্দোলন ও আন্দোলনের নেতাদের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করার চক্রান্ত করেছিল এনওয়াইপিডি ও এফবিআই।’
নিউইয়র্ক পুলিশ দফতর ও এফবিআই যে ম্যালকম এক্স খুনের ষড়যন্ত্রের অংশীদার, তারও উল্লেখ করেছেন রে। স্বীকারোক্তিতে তিনি বলেছেন, ‘রে উডের কাজ ছিল বিনা প্রশিক্ষণেই নাগরিক অধিকার আন্দোলনে কর্মী ঢোকানো এবং আন্দোলনের নেতা-কর্মীদের বেআইনি কাজকর্মে প্ররোচিত করা। তার ওপর আরো দায়িত্ব ছিল, যে দিন ম্যালকম এক্সকে হত্যা করা হবে, সে দিন তার নিরাপত্তা সংক্রান্ত খুঁটিনাটিতে নজর রাখা। যাতে ম্যালকম অডুবন বলরুমের দরজা দিয়ে পালাতে না পারেন, তা-ও নিশ্চিত করা।’
রে উডের এই দাবীর পক্ষে শক্তিশালী প্রমাণ হল কোইন্টেলপ্রো প্রকল্প। ১৯৫০–এর দশক থেকে ১৯৭০–এর দশক পর্যন্ত ‘কোইন্টেলপ্রো’ নামের একটি কুখ্যাত কাউন্টার ইন্টেলিজেন্স প্রকল্প চালিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্রের প্রশাসন। ওই প্রকল্পের অংশ হিসেবেই মূলত এফবিআই আজিজ (বাটলার) এবং খলিলকে (জনসন) খালাস দেওয়ার মতো তথ্যপ্রমাণ লুকিয়ে রেখেছিল বলে মনে করা হয়। ওই প্রকল্পের মাধ্যমে তখনকার কৃষ্ণাঙ্গ অধিকারকর্মী ও নেতাদের দমন করার চেষ্টা হচ্ছিল। এর জন্য নজরদারি, সংগঠনের মধ্যে গোয়েন্দাদের চর ঢুকিয়ে দেওয়া এবং আন্দোলনকারীদের মধ্যে বিবাদ বাঁধিয়ে দেওয়ার মতো বেআইনি কাজ ওই সময় এফবিআই নিয়মিত করে গেছে।
ম্যালকম এক্সকে হত্যায় যদি এফবিআইয়ের হাত থেকে থাকে তাহলে এটিই এই সংস্থার এ ধরনের প্রথম কাজ হবে না। ১৯৫৯ সালের ৪ ডিসেম্বর ব্ল্যাক প্যান্থার পার্টির দুই নেতা ফ্রেড হ্যাম্পটন এবং মার্ক ক্লার্ককে তারাই হত্যা করেছিল। এবং নির্দোষ জেরোনিমো প্ল্যাটের ঘাড়ে হত্যার দায় চাপিয়েছিল।
বিচারের ছাপ্পান্ন বছর পর
২০২১ সালের ১৯ নভেম্বর এই মামলার পুনর্বিবেচনা করে নতুন রায় দিয়েছেন নিউইয়র্ক সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি এলেন এন বাইবেন। ছাপান্ন বছরের পুরনো ওই হত্যা মামলার রায় নিয়ে আবার হইচই শুরু হয়েছিল গত বছরের জানুয়ারি থেকে। ২০২১ সালের জানুয়ারিতে নেটফ্লিক্স তথ্যচিত্রমূলক ৬ পর্বের একটি সিরিজ প্রকাশ করে। সিরিজটির শিরোনাম ছিল ‘হু কিল্ড ম্যালকম এক্স’। এই সিরিজটি দেখে ম্যানহাটন প্রদেশের অ্যাটর্নি সাইরাস আর ভান্স জুনিয়র বুঝতে পারেন অন্যায়ভাবে জেল খেটেছেন দুই আমেরিকান কৃষ্ণাঙ্গ। তথ্যচিত্রটিতে দেখানো হয়, ম্যালকমের হত্যায় দোষী সাব্যস্ত হওয়া আজিজ ও খলিল কোনোভাবেই এ হত্যাকাণ্ডে যুক্ত ছিলেন না। বস্তুত এ হত্যাকাণ্ডের বিচার চলাকালীনও ইতিহাসবিদ ও বহু নাগরিক অধিকার রক্ষাকর্মী জানিয়েছিলেন, যথাযথ সাক্ষ্যপ্রমাণ ও নথি জোগাড় না করেই দুই কৃষ্ণাঙ্গকে অন্যায়ভাবে দোষী প্রমাণিত করার চেষ্টা করেছিল পুলিশ।
এর পরেই আজিজের আইনজীবীদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন ভান্স। এতগুলো বছর পরে অর্ধেক সাক্ষীর মৃত্যু হয়েছে। হারিয়ে গেছে অর্ধেকের বেশি নথিও। তবু হাল না ছেড়ে এ মামলার রায় পুনর্বিবেচনা করার আবেদন জানান অ্যাটর্নি। এক অশীতিপর বৃদ্ধের সাক্ষ্যের পরে জানা যায়, ম্যালকমের খুনের সময় বাড়িতে ছিলেন আজিজ।
নতুন এই রায়ে আজিজ ও খলিল নির্দোষ প্রমাণ হওয়ার দ্বারা স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন ওঠে, তাহলে ম্যালকম হত্যায় তালমাজের সাথে আর কারা যুক্ত ছিল? ন্যাশন অব ইসলাম, যুক্তরাষ্ট্রের পুলিশ বা গোয়েন্দা সংস্থা, নাকি অন্যকোনো পক্ষ? এর উত্তর জানা নেই কারো কাছে।
সূত্র :
১. আলজাজিরা
২. ওয়াশিংটন পোস্ট