রোহিঙ্গা সমাবেশের তদন্ত প্রতিবেদনে যা বলেছে কক্সবাজার জেলা প্রশাসন

ফাতেহ ডেস্ক

টেকনাফে রোহিঙ্গাদের বিশাল সমাবেশের তদন্ত প্রতিবেদন এনজিও ব্যুরোতে জমা দিয়েছে কক্সবাজারের জেলা প্রশাসন। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সমাবেশের পেছনে দুই এনজিওর সম্পৃক্ততা পাওয়া গেছে। এগুলো হল- কানাডাভিত্তিক সংগঠন এডরা এবং দেশীয় প্রতিষ্ঠান আল মারকাজুল ইসলাম। সার্বিক আয়োজনে কাজ করেছে রোহিঙ্গাভিত্তিক তিনটি সংগঠন ও বিভিন্ন পেশার ৭ ব্যক্তি।

সরকারের তদন্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, সমাবেশের জন্য বেশ কয়েকদিন আগে প্রস্তুতি নেয়া হয়। এক্ষেত্রে রোহিঙ্গাদের ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা আর্থিক সহায়তা দিয়েছে অ্যাডভেন্টিস্ট ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড রিলিফ এজেন্সি (এডরা)। ১৯ ও ২১ আগস্ট দু’দফা বৈঠক শেষে রোহিঙ্গা নেতা মুহিবুল্লাহকে এ টাকা দেয়া হয়। এডরার মূল ডোনার কানাডা। এছাড়াও অংশীদার হিসেবে রয়েছে চেক প্রজাতন্ত্র, দক্ষিণ কোরিয়া এবং সুইডেন। জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থার বিভিন্ন তহবিল নিয়েও কাজ করেছে তারা।

এনজিও বিষয়ক ব্যুরোর মহাপরিচালক কেএম আবদুস সালাম বলেন, প্রতিবেদন পেয়েছি। ইতিমধ্যে দুটি এনজিওর কার্যক্রম বন্ধ করা হয়েছে। তাদের শোকজ (কারণ দর্শানোর নোটিশ) করা হয়েছে। এ শোকজের জবাব এলে আইন অনুসারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

তবে সমাবেশে টাকার দেয়ার বিষয়টি অস্বীকার করেছে এডরা। এডরার ওয়েবসাইটে একটি বিবৃতিতে বলা হয়, তারা কোনো ধর্মীয় ও রাজনৈতিক কর্মসূচিতে জড়িত নয়। যে কারণে তাদের কার্যক্রম বন্ধ করা হয়েছে, তা সত্য নয়।

প্রতিষ্ঠানটির ওয়েবসাইটের তথ্য অনুসারে ১৯৮১ সাল থেকে তারা বাংলাদেশে কাজ করছে। প্রাথমিকভাবে শিক্ষা, স্থিতিস্থাপকতা, পুনর্বাসন ও উন্নয়ন এবং জরুরি দুর্যোগ মোকাবেলায় গুরুত্ব দেয় প্রতিষ্ঠানটি। মূলত দেশের দক্ষিণাঞ্চলের দুর্যোগপূর্ণ এলাকায় তাদের কার্যক্রম বেশি।

এছাড়া রোহিঙ্গাদের সমাবেশে টি-শার্ট ও ব্যানার তৈরি করে দেয় আল মারকাজুল ইসলাম। এক্ষেত্রে সহযোগিতা করেছে পুলিশের সহকারী পরিদর্শক (এসআই) বোরহান উদ্দিন। ব্যানার ছাপানো এবং টি-শার্টে সিল মারা হয়েছে কক্সবাজার শাহ মজিদিয়া প্রিন্টিং প্রেস থেকে। তবে ব্যানারের বিষয়টি অস্বীকার করেছেন শাহ মজিদিয়ার স্বত্বাধিকারী নুরুল হক। আল মারকাজুল ইসলামের ওয়েবসাইট থেকে জানা গেছে, প্রতিষ্ঠানটি দেশে নিবন্ধিত। শিক্ষা নিয়ে রোহিঙ্গা এলাকায় মক্তব প্রতিষ্ঠায় বেশ কিছু কাজ করেছে তারা। সাধারণত জাকাত, ফেতরা ও সদকার মাধ্যমে তহবিল সংগ্রহ করে এ সংগঠন।

সরকারের তদন্ত প্রতিবেদন অনুসারে সমাবেশের ঘটনায় তিনটি সংগঠন ও ৭ ব্যক্তি জড়িত। সংগঠনগুলো হল- আরকান সোসাইটি ফর পিস অ্যান্ড হিউম্যান রাইটস (এআরএসপিএইচ), রোহিঙ্গা রিফিউজি কমিটি এবং ভয়েস অব রোহিঙ্গা।

যে সব ব্যক্তি জড়িত এর মধ্যে রয়েছে- এআরএসপিএইচের প্রেসিডেন্ট মুহিবুল্লাহ, ভাইস প্রেসিডেন্ট মাস্টার আবদুর রহিম, রোহিঙ্গা রিফিউজি কমিটির নেতা সিরাজুল মোস্তফা এবং ভয়েস অব রোহিঙ্গা নেতা সাইফুল হক, উখিয়া কলেজের প্রভাষক নুরুল মজিদ ভুইয়া, সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবী দুলাল মল্লিক এবং কক্সবাজারের দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর মাহবুবুর রহমান।

আগের সংবাদমেহেরপুরে দুই মাছ চাষিকে কুপিয়ে হত্যা
পরবর্তি সংবাদইসরাইলের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে এক হওয়ার আহ্বান তুরস্কের