
আন্তর্জাতিক ডেস্ক :
সিরিয়ার গোলান মালভূমি থেকে ইসরাইলকে সরে যেতে আনুষ্ঠানিকভাবে নির্দেশ দিয়েছে জাতিসংঘ। গত ৩ ডিসেম্বর দিনভর চলা সাধারণ পরিষদে গ্রহণ করা এক প্রস্তাবে দেশটিকে দখলকৃত পুরো এলাকা ছেড়ে দিতে বলা হয়।
গোলান মালভূমির বিষয়টি ছাড়াও সাধারণ পরিষদে ইসরাইল সংশ্লিষ্ট আরও চারটি পদক্ষেপ অনুমোদন করা হয়েছে।
পদক্ষেপগুলো হলো- ইসরাইলকে ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে অবৈধ বসতি নির্মাণ থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে। দ্বিতীয়ত ইসরাইলকে পশ্চিমতীর ও পূর্ব জেরুজালেমসহ দখলকৃত ফিলিস্তিনি ভূমির প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শন ও সংরক্ষণের আহ্বান জানানো হয়েছে। অপর এক পদক্ষেপে ফিলিস্তিন ইস্যুতে জাতিসংঘের বিভিন্ন দফতরের কাজের স্বীকৃতি দেয় সাধারণ পরিষদ। আর সর্বশেষ পদক্ষেপে ফিলিস্তিন সংক্রান্ত তথ্য ও জাতিসংঘের সংশ্লিষ্ট সিদ্ধান্ত বিস্তৃতভাবে ছড়িয়ে দিতে বিশেষ কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার অনুরোধ জানানো হয়।
এদিকে রুশ সংবাদমাধ্যম আরটি জানিয়েছে, জাতিসংঘের দেয়া গোলান মালভূমি ত্যাগ ও ওই চার পদক্ষেপ আইনগতভাবে মানতে বাধ্য নয় তেলআবিব।কারণ জাতিসংঘের পাঁচ স্থায়ী সদস্য ও অস্থায়ীভাবে নির্বাচিত ১০ সদস্য দেশের সমন্বয়ে মোট ১৫ সদস্যের নিরাপত্তা পরিষদ কোনো প্রস্তাব গ্রহণ করলে তা মানতে সদস্য দেশগুলো আইনগতভাবে বাধ্য। কিন্তু সব সদস্য দেশের সমন্বয়ে গঠিত হলেও সাধারণ পরিষদ কোনো প্রস্তাব গ্রহণ করলে তা মানতে আইনগতভাবে বাধ্য নয় কোনো সদস্য দেশ। যে কারণে বুধবার গৃহীত প্রস্তাবগুলো মেনে চলতে আইনগতভাবে বাধ্য নয় ইসরাইল।
ফলে সাধারণ অধিবেশনে ইসরাইলের বিরুদ্ধে নেয়া সব প্রস্তাবই মূলত প্রতীকী হয়ে উঠবে বলে জানিয়েছে সংবাদমাধ্যমটি।
উল্লেখ্য, ১৯৬৭ সালে আরবদের সঙ্গে ছয় দিনের যুদ্ধে সিরিয়ার গোলান মালভূমি দখল করে নেয় ইসরাইল। সেই সময় ইহুদিবাদী বাহিনী ফিলিস্তিনের পশ্চিমতীর ও গাজা উপত্যকারও নিয়ন্ত্রণ নেয়। পরে ১৯৮১ সালে গোলান মালভূমিকে আনুষ্ঠানিকভাবে নিজ ভূখণ্ড বলে ঘোষণা দেয়। কিন্তু আন্তর্জাতিক মহল কখনই ইসরাইলের এই দাবির স্বীকৃতি দেয়নি।
গত বছরের শেষের দিকে জাতিসংঘে গোলান মালভূমির মালিকানা সংক্রান্ত এক ভোটাভুটি হয়। সেখানে উপস্থিত ১৫৩ দেশের মধ্যে ১৫১ দেশ এ ভূখণ্ডের মালিকানা সিরিয়ার বলে স্বীকৃতি দেয়। শুধু যুক্তরাষ্ট্র ও ইহুদিবাদী ইসরাইল প্রস্তাবটির বিপক্ষে অবস্থান নেয়।
২০১৮ সালের ১৫ নভেম্বর জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের গ্রহণ করা এক প্রস্তাবে ইসরাইলকে পূর্ব জেরুজালেম ও গোলান মালভূমিসহ ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডের প্রাকৃতিক সম্পদের শোষণ বন্ধ করতে বলা হয়।