পাঠ্যপুস্তকের বিস্তারিত সংশোধনী দিবে জমিয়াতুল মোদার্রেছীন

রাকিবুল হাসান নাঈম:

পাঠ্যপুস্তক সংশোধন বিষয়ে বিস্তারিত সংশোধনী দিবে মাদরাসা শিক্ষক কর্মচারীদের পেশাজীবী অরাজনৈতিক সংগঠন বাংলাদেশ জমিয়াতুল মোদার্রেছীন। এই সংশোধনী তারা সরকারের গঠিত পুস্তক সংশোধনী কমিটির হাতে তুলে দিবে। এ লক্ষ্যে তারা কাজও শুরু করেছে।

নেতৃবৃন্দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, পাঠ্যপুস্তকের ভুলগুলো শনাক্ত করতে তারা ১৯ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করেছে। চলতি মাসের ১৭ তারিখ এই কমিটির প্রথম সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

সভায় কী আলোচনা হয়েছে জানতে চাইলে জমিয়াতুল মোদার্রেছীন কেন্দ্রীয় কমিটির মহাসচিব মাওলানা শাব্বির আহমদ মোমতাজী ফাতেহকে বলেন, ‘এটি ছিল ১৯ সদস্যের কমিটির প্রাথমিক সভা। এতে প্রতিটি বইয়ের জন্য আলাদা আলাদা কমিটি নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছে। তারা সবগুলো বইয়ের সংশোধনী চলতি মাসের ২৮ তারিখ জমা দিবে। এই সংশোধনীর রূপরেখা বিস্তারিত আমরা সরকার-গঠিত সংশোধনী কমিটির কাচে হস্তান্তর করবো।’

তবে পাঠ্যপুস্তকের ভুল সংশোধনের কমিটি নিয়ে সন্তুষ্ট নয় মাদরাসা শিক্ষক কর্মচারীদের এই সংগঠন। চলতি মাসের ৫ তারিখ এক বিবৃতিতে এই কমিটি পুনর্গঠনের জোর দাবি জানিয়েছেন তারা।

এ প্রসঙ্গে মাওলানা শাব্বির আহমদ মোমতাজী ফাতেহকে বলেন, ‘নতুন শিক্ষাক্রমের জন্য ছাপানো পাঠ্যপুস্তকে ইসলামি ঈমান-আকীদা পরিপন্থি বিষয় সন্নিবেশিত হওয়ায় দেশের আলেম-ওলামা, পীর-মাশায়েখ ও বিভিন্ন ইসলামি সংগঠনের পক্ষ থেকে তীব্র প্রতিবাদ উঠে। এ ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীর আশু হস্তক্ষেপ কামনা করায় সম্প্রতি ভুল সংশোধন ও ভুলের কারণ বের করার জন্য দুটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। কিন্তু যাদের নিয়ে এ কমিটি গঠিত হয়েছে তাদের দ্বারা উদ্দিষ্ট লক্ষ্য আদৌ সম্ভব নয় বলে আমরা মনে করি ‘

তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের এ দেশের কোনো পাঠ্যপুস্তকে এমন কোনো বিষয় থাকতে পারবে না যা ইসলামি ঈমান আকীদা, ইতিহাস ঐতিহ্য পরিপন্থি বা এসবের সাথে সাংঘর্ষিক। যাদের কারণে এমন সব বিষয় নতুন শিক্ষাক্রমের পুস্তকে সন্নিবেশিত হয়েছে তাদেরকে নবগঠিত কমিটিতে রেখে সংশোধনের উদ্যোগ নেয়া প্রহসন বৈ কিছুই নয়। আমরা এর তীব্র প্রতিবাদ জানাই।’

কমিটি পুনর্গঠনের জোর দাবি জানিয়ে জমিয়তের মহাসচিব বলেন, ‘কমিটিতে সংশ্লিষ্ট বিষয়ের বিশেষজ্ঞগণের সাথে দেশের আস্থাভাজন বিশেষজ্ঞ আলিম প্রতিনিধিদের অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। নতুন করে ভুল সংশোধন ও ভুলের কারণ নির্ণয়ের জন্য কমিটি পুনর্গঠন করতে হবে। আমরা মনে করি, আলেমদের অন্তর্ভুক্ত না করলে পাঠ্যপুস্তকে ভুল রয়েই যাবে। তাই আমরা সংশোধনীর বিস্তারিত বিবরণ সরকারের কমিটির হাতে তুলে দিব।’

এর আগে ১৩ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে বাংলাদেশ আনজুমানে আল ইসলাহ সভাপতি মাওলানা হুশামুদ্দিন চৌধুরী ফুলতলীর নেতৃত্বে একটি দল সাক্ষাৎ করেন। তারপর প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু ২৪ জানুয়ারি সংবাদ সম্মেলন করে দুটি তদন্ত কমিটি গঠনের ঘোষণা দেন। ৩১ জানুয়ারি ওই কমিটির সদস্যদের নাম প্রকাশ করা হয়।

পাঠ্যপুস্তক সংশোধন এবং এতে বিতর্কিত পাঠ অন্তর্ভুক্তির ক্ষেত্রে যারা ভূমিকা রেখেছেন তাদের খুঁজে বের করতে গত ৩১ জানুয়ারি এ দুটি কমিটি গঠন করা হয়। একটির নাম ছিল বিশেষজ্ঞ কমিটি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইআর) পরিচালক অধ্যাপক ড. আবদুল হালিম এই কমিটির প্রধান ছিলেন। কমিটিতে ৭ জন সদস্য ছিলেন। এছাড়া দায়ীদের চিহ্নিত করতে ৭ সদস্যের কমিটির প্রধান ছিলেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব খালেদা আক্তার।

আগের সংবাদরোহিঙ্গাদের ভাষানচর পাঠাতে জাতিসংঘের সহায়তা চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী
পরবর্তি সংবাদজাতিসংঘের বাংলা ফন্ট এখন ইউনিকোডে