
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
ইস্টার সানডের ভয়ংকর সন্ত্রাসী হামলার পরিস্থিতি সম্পূর্ণ ভিন্ন রূপে হাজির হয়েছে শ্রীলংকার সামাজিক জীবনে। হামলায় স্থানীয় দুটি মুসলিম সংগঠনের বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠায় মুসলিমদের বিরুদ্ধে ঘৃণা-বিদ্বেষ-ক্ষোভ বাড়ছে সংখ্যাগরিষ্ঠ বৌদ্ধ সিংহলিদের মধ্যে। প্রচণ্ড মারমুখো আচরণ করছে তারা মুসলিম সম্প্রদায়ের সঙ্গে। এতে চরম ভয় ও অনিশ্চয়তার ভেতর দিয়ে যাচ্ছেন সেখানকার মুসলমানেরা।
উত্তেজনাকর পরিস্থিতির মধ্যে টার্গেটের শিকার হচ্ছে সাধারণ ও নিরীহ মুসলিমরা। সেই সঙ্গে মসজিদ-মাদ্রাসা ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানও। এখন টুপি দেখলেও সেটাকে শত্রু ভাবছে শ্রীলংকানরা। বুধবার এএফপির এক প্রতিবেদনে হামলা পরবর্তী এ ভীতিকর পরিস্থিতি উঠে এসেছে।
শ্রীলংকায় রোববার তিনটি চার্চ, তিনটি বিলাসবহুল হোটেল ও আরও দুটি স্থানে ভয়াবহ আত্মঘাতী হামলা চালায় সন্ত্রাসীরা। এতে বুধবার পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা দাঁড়ায় ৩৫৯। আহত আরও শতাধিক। হামলার সঙ্গে ন্যাশনাল তাওহিদ জামাত (এনটিজে) নামে একটি সংগঠনের নাম আসছে। এছাড়া আন্তর্জাতিক জঙ্গিগোষ্ঠী আইএসও এ হামলায় তাদের সম্পৃক্ততার কথা দাবি করেছে। শ্রীলংকা সরকার বলছে, নিউজিল্যান্ড ক্রাইস্টচার্চ হামলার প্রতিশোধ নিতে এ হামলা চালানো হতে পারে। এমন প্রেক্ষাপটে দেশটির মুসলিমরা নতুন এক অনিশ্চয়তায় পড়েছেন। নিজেদের ভাবমূর্তি নিয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন অনেকেই। দিন কাটাচ্ছেন দাঙ্গার ভয়-আতঙ্ক নিয়ে।
হামলার পর নিজের ঘর থেকে প্রায় বের হননি বললেই চলে ৪১ বছর বয়সী মোহাম্মদ হাসান। পরিবারসহ কলম্বোয় বাস করেন তিনি। সবসময় এক আতঙ্কের মধ্যে রয়েছেন তিনি। তার আশঙ্কা, মুসলিম বলে বৌদ্ধদের আক্রমণের শিকার হতে পারেন তিনি। স্থানীয় একটি প্রিন্টিং প্রেসে চাকরি করেন তিনি। কিন্তু গত ৪ দিন ধরে বাড়ির বাইরে হতে বারণ করছে তার পরিবার। হাসানের মতো সারা দেশে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা লাখ লাখ মুসলিমের এখন একই অবস্থা। কলম্বোর ডেমাটাগোডার একটি জামে মসজিদের কাছেই নিজের বাড়ির সামনে এএফপিকে তিনি বলেন, ‘আমার পরিবার খুবই উদ্বিগ্ন এ ভেবে যে, আমি যদি মসজিদে নামাজ পড়তে যাই, আমি জীবন্ত ফিরে নাও আসতে পারি।’