রোহিঙ্গা নির্যাতন : দীর্ঘ হতে পারে আন্তর্জাতিক আদালতের বিচার প্রক্রিয়া

রোহিঙ্গা নির্যাতন : দীর্ঘ হতে পারে আন্তর্জাতিক আদালতের বিচার প্রক্রিয়া

আন্তর্জাতিক ডেস্ক :

আগামী ১০ ডিসেম্বর মিয়ানমারে রোহিঙ্গা নির্যাতনের ঘটনায় অভিযুক্তদের দায়বদ্ধতা ও বিচার প্রক্রিয়ার তদন্ত শুরু করতে যাচ্ছে আন্তর্জাতিক অপরাধ কোর্ট। সাধারণত এ ধরনের বিচারিক প্রক্রিয়া শুরু হতে পাঁচ থেকে ১০ বছর সময় লাগে। বাংলাদেশ সরকারের দ্রুত কূটনীতিক তৎপরতায় সমস্যার স্থায়ী সমাধানে অভিযুক্তদের দায়বদ্ধতা ও বিচার প্রক্রিয়া শুরু হচ্ছে নির্যাতনের দুই বছরের মাথায়।

আন্তর্জাতিক বিচারিক আদালতের (ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অব জাস্টিস -আইসিজে) প্রথম পদক্ষেপ হচ্ছে, একটি প্রাথমিক আদেশ দেওয়া যার মাধ্যমে প্রথমত গণহত্যার কোনও প্রমাণ নষ্ট করা যাবে না। দ্বিতীয়ত ওই প্রমাণাদি সংরক্ষণ করা। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা বলেন, ‘শুধু তাই না- তৃতীয় কোনও দেশ যাতে মিয়ানমারের বিতর্কিত অঞ্চলে বিনিয়োগ করতে না পারে সে বিষয়েও একটি আদেশ আসতে পারে।’

যেকোনও বিচারিক প্রক্রিয়া অনেক দীর্ঘ হয়ে থাকে। বিশেষ করে আন্তর্জাতিক অপরাধ কোর্ট কিংবা আন্তর্জাতিক বিচারিক আদালতের যেকোনও মামলা অনেক দিন ধরে চলে এবং এর ফলে এর সম্পূর্ণ সুফল পেতে দেরি হয়। তবে এ আদালতে জাতিসংঘ জেনোসাইড কনভেনশন ১৯৪৮ ব্যবহার করে বিচার পাওয়া সম্ভব।

কিন্তু এই কোর্টের সমস্যা হচ্ছে, রাজনৈতিক নেতৃত্বের ‘গণহত্যা করার ইচ্ছা ছিল’ এটি প্রমাণ করা দুরূহ বিষয়। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, ‘বসনিয়া ও সার্বিয়া মামলায় আন্তর্জাতিক বিচারিক আদালত রায় দিয়েছিল যে সেখানে গণহত্যা হয়নি। কারণ নিশ্চিতভাবে এটি প্রমাণ করা যায়নি যে তৎকালীন নেতাদের গণহত্যার উদ্দেশ্য ছিল।

আন্তর্জাতিক অপরাধ কোর্টের সদস্য নয় মিয়ানমার। এটিকে তারা স্বীকৃতিও দেয় না। যেহেতু মিয়ানমার এই কোর্টকে স্বীকৃতি দেয় না সেই কারণে দুর্বৃত্তদের অনুপস্থিতিতে বিচার হবে।

প্রসঙ্গত, রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে মিয়ানমার থেকে নিশ্চিহ্ন করার পরিকল্পনা নিয়ে এগুচ্ছে দেশটির সামরিক বাহিনী এবং অং সান সুচির নেতৃত্বাধীন বেসামরিক সরকার। ১৯৭৮ সালে প্রথম দফা বাংলাদেশে রোহিঙ্গা ঢল আসতে শুরু হয়। পরবর্তীতে ১৯৯২-৯৩ সালেও এ ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটে। তৃতীয়বার ২০১৭ সালে দেশটির সরকারি বাহিনীর নির্যাতনে প্রাণ বাঁচাতে বাংলাদেশে পালিয়ে আসে ১১ লাখের বেশি রোহিঙ্গা।

আগের সংবাদসীমান্তে অনুপ্রবেশ : পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ভাবনা ও পদক্ষেপ
পরবর্তি সংবাদধর্ষণের শাস্তি : কোন দেশে কেমন