‘আজারবাইজানের ভূমি থেকে আর্মেনিয়ার সরে যাওয়া উচিত’

আন্তর্জাতিক ডেস্ক:

ক্রমেই ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে আজারবাইজান-আর্মেনিয়া যুদ্ধ। বিতর্কিত নাগোরনো-কারবাখ অঞ্চল নিয়ে এরই মধ্যে এই দুই দেশের মধ্যকার যুদ্ধ তীব্র আকার ধারণ করেছে। এতে বাড়ছে মৃতের সংখ্যাও।

কর্তৃপক্ষের বরাত দিয়ে মঙ্গলবার আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, যুদ্ধে সোমবার পর্যন্ত উভয়পক্ষের ৮৪ জন সামরিক কর্মকর্তার মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া মারা গেছেন ১১ জন বেসামরিক (আজারবাইজানের ৯ জন, আর্মেনিয়ার ২ জন)। এ নিয়ে মোট ৯৫ জনের মৃত্যু হয়েছে এই যুদ্ধে।

এমন পরিস্থিতিতে তুর্কি প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়েব এরদোগান বলেছেন, আঞ্চলিক শান্তি এবং স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠায় অতিসত্বর আজারবাইজানের ভূমি থেকে আর্মেনিয়ার সরে যাওয়া উচিত।

সোমবার এক অনুষ্ঠানে দেয়া ভাষণের শুরুতেই তিনি বলেন, আমি আবারো আর্মেনিয়ার নিন্দা করছি। যারা গতকাল (রবিবার) আজারবাইজানের ভূখণ্ডে হামলা চালিয়েছে। বলেন, বন্ধুত্ব এবং ভ্রাতৃপ্রতীম আজারবাইজানের প্রতি সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা অন্তর থেকে অব্যাহত রাখবে তুরস্ক।

এরদোগান বলেন, আজারবাইজানের ভূখণ্ড দখলের মাধ্যমে আর্মেনিয়া যে সংকটের তৈরি করেছে তা নিরসনের সময় এখনই। আঞ্চলিক শান্তি এবং স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠায় আর্মেনিয়ার উচিৎ আজারবাইজানের ভূখণ্ড ছেড়ে যাওয়া। সবধরনের নিষেধাজ্ঞা, হুমকি, সম্পূর্ণ অন্যায় এবং বেআইনি। বাস্তবসম্মত এবং সুন্দর একটি সমাধানের জন্য বর্তমান পরিস্থিতি আঞ্চলিক প্রভাবশালী দেশগুলোর একটি বড় সুযোগ।

রাশিয়া, যুক্তরাষ্ট্র এবং ফ্রান্সের সমন্বয়ে তথাকথিত মিনস্ক চুক্তি গেলো ৩০ বছরে সংকটের কোনো সমাধান করতে পারেনি বলেও মন্তব্য করেন এরদোয়ান।

উল্লেখ্য, ১৮শ’ ও ১৯শ’ শতকে আজারবাইজান নামের দেশটি পর্যায়ক্রমে রুশ ও পারস্য দেশের শাসনাধীন ছিল। রুশ গৃহযুদ্ধের সময়ে ১৯১৮ সালের ২৮ মে তৎকালীন আজারবাইজানের উত্তর অংশটি একটি ইসলামি প্রজাতন্ত্র হিসেবে স্বাধীনতা ঘোষণা করলেও মাত্র ২ বছরের মাথায় ১৯২০ সালে বলশেভিক বাহিনী এটি আক্রমণ করে আবার রুশ নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসে এবং ১৯২২ সালে দেশটি সমাজতান্ত্রিক সোভিয়েত প্রজাতন্ত্রের অংশ হিসেবে সোভিয়েত ইউনিয়নের অন্তর্ভুক্ত হয়। ১৯৩৬ সালে আজারবাইজান নামের সোভিয়েত প্রজাতন্ত্রটি ভেঙে তিনটি আলাদা প্রজাতন্ত্র আজারবাইজান, জর্জিয়া ও আর্মেনিয়ায় রূপান্তর করা হয়। মূলত তখন থেকেই আজারবাইজানের সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলিম জনগোষ্ঠী এবং নাগরনো-কারাবাখ এলাকার খ্রিস্টান আর্মেনীয় জনগোষ্ঠীর মধ্যে দ্বন্দ্বের সূত্রপাত।

আন্তর্জাতিক আইনে নাগোরনো-কারাবাখ অঞ্চল আজারবাইনের ভূখণ্ড হিসেবে স্বীকৃত। কিন্তু সেখানকার সংখ্যাগরিষ্ঠ জাতিগত আর্মেনীয়রা আজারি শাসন প্রত্যাখ্যান করে। ১৯৯১ সালে সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর আর্মেনিয়ার সমর্থনে নিজস্ব শাসনব্যবস্থা গড়ে তুলেছে নাগোরনো-কারাবাখ।

 

আগের সংবাদইরাকে দূতাবাস বন্ধ করে দেয়ার হুমকি যুক্তরাষ্ট্রের
পরবর্তি সংবাদবিজেপি সরকারের প্রতিহিংসা: ভারত ছাড়ল অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল