ফাতেহ ডেস্ক: ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস কঠোর ও অবিচল ভাষায় ইসরাইল ও আমেরিকার নিন্দা করে জাতিসংঘ সাধারণ অধিবেশনে বক্তব্য রেখেছেন।
বুধবার নিউইয়র্কের জাতিসংঘ সদর দপ্তরে তিনি ভাষণ দেন। বক্তব্যের শুরতেই মাহমুদ আব্বাস বলেন, জেরুজালেম বিক্রির জন্য নয়।
এ সময় হলভর্তি মানুষ করতালি দিয়ে তাকে স্বাগত জানান। মাহমুদ আব্বাস ইসরাইলের ‘বর্ণবাদী’ রাষ্ট্রীয় আইনের তীব্র সমালোচনা করেন।
উল্লেখ্য, ইসরাইল সম্প্রতি আইন পাশ করেছে যে দেশটি শুধুমাত্র ইহুদিদের রাষ্ট্র। মাহমুদ আব্বাস বলেন, ইসরাইলের এই আইন একটি বর্ণবাদী রাষ্ট্রের জন্ম দিবে। সৃষ্টি করবে জাতিবিদ্বেষ এবং দুই রাষ্ট্রীয় ধারণা অন্তসারশূন্য করে দিবে।
ইসরাইলকে সমর্থন দেয়া এবং জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক রীতিনীতি লঙ্ঘন করে ট্রাম্প প্রশাসনের দুই রাষ্ট্রীয় সমাধান প্রত্যাখান করায় তিনি আমেরিকার নিন্দা করেন।
জেরুজালেমে আমেরিকার দূতাবাস স্থানান্তর করার পর জাতিসংঘে এই প্রথম বক্তব্য রাখলেন মাহমুদ আব্বাস।
দূতাবাদ স্থানান্তর প্রসঙ্গে মাহমুদ আব্বাস বলেন, ফিলিস্তিন এখন নতুন চোখে আমেরিকাকে দেখছে এবং দেশটিকে শান্তি প্রক্রিয়ায় মধ্যস্ততাকারী হিসেবে আর ভাবতে পারছে না।
তিনি বলেন, আমেরিকার বর্তমান প্রশাসন পূর্বের সকল প্রশাসনের অঙ্গীকার এবং দুই রাষ্ট্রীয় সমাধান পরিত্যাগ করেছে।
ফিলিস্তিন স্বাধীনতা আন্দোলনের রাজনৈতিক দল পিএলও নেতা দেশটির প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দিতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশকে আহ্বান করেন।
এছাড়া ইসরাইলকে স্বীকৃতি দেয়ার মতো ফিলিস্তিনের জন্য রেজুলেশন পাশ করতে জাতিসংঘকে চাপ দিতেও তিনি বিশ্বনেতাদের কাছে আহ্বান করেন।
মাহমুদ আব্বাস বলেন, জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে রেজুলেশন প্রয়োগ করা ছাড়া শুধুমাত্র পাশ করা যথেষ্ট নয়। ১৯৪৯ সালের পর থেকে ৭০০ এর বেশি রেজুলেশন পাশ করা হয়েছে যার একটাও ইসরাইল মানেনি।
মাহমুদ আব্বাস আমেরিকার ইউএনআরডব্লিউএকে অর্থ সহায়তা বন্ধ করার প্রসঙ্গে বক্তব্য রাখেন।
তিনি বলেন, ৫০ লাখ শরণার্থী ফিলিস্তিনি এখন বেঁচে থাকতে সংগ্রাম করছে।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি ইউএনআরডব্লিউ সংস্থাকে ৩০০ মিলিয়ন ডলার বাৎসরিক সহায়তা প্রদান বন্ধ করে দিয়েছে আমেরিকা।
ইউএনআরডব্লিউএ শরণার্থী সংস্থাকে ‘প্রতারক’ বলায় আমেরিকার প্রতি ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন মাহমুদ আব্বাস। এছাড়া মাত্র ৪০ হাজার ফিলিস্তিনি শরণার্থী থাকার আমেরিকার দাবিকে অগ্রহনযোগ্য বলেন তিনি।
দেশের জন্য জীবনদানকারী এবং ইসরাইলের কারাগারে আটককৃতদের স্মরণ করে মাহমুদ আব্বাস বলেন, আমরা শীঘ্রই মুক্তি ও স্বাধীনতা দিবস ঘোষণা করবো। দখলদারিত্বের অন্ধকার যুগ দ্রুতই অবসান হবে।